Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০১৭:  29: গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার সিংড়িয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ভেঙ্গে যাওয়া অংশে মাটির বদলে বালু দিয়ে ভরাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখানে শ্রমিক দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। ফলে একদিকে যেমন শ্রমজীবি মানুষরা কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অপরদিকে পানির চাপে বাঁধটি আবারও ভাঙ্গনের কবলে পড়তে পারে বলে মনে করছেন সচেতন এলাকাবাসী।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয় সুত্র জানায়, ২০১৬ সালের আগষ্ট মাসে বন্যার পানির চাপে ফুলছড়ি উপজেলার সিংড়িয়া বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ১৮০ মিটার অংশ ভেঙ্গে যায়। চলতি বছরের ১০ এপ্রিল ভেঙ্গে যাওয়া অংশ সংস্কার কাজ শুরু হয়। আগামি জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবার কথা। এই কাজে ব্যয় ধরা হয় এক কোটি ৬৩ লাখ ৩৪ হাজার ৭৮৮ টাকা। কাজের দায়িত্ব পান ফেনী জেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রহমান ইঞ্জিনিয়ারিং। ব্রক্ষপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ প্রকল্পের আওতায় এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, বাঁধ সংস্কার কাজে শতকরা ৩০ ভাগ কাঁদামাটি, শতকরা ৪০ ভাগ পলি এবং শতকরা ৩০ ভাগ বালু দিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া অংশ ভরাট করার কথা। শুধু তাই নয়, শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে ভরাট করতে হবে । এ ছাড়া বাঁধটি মজবুত করতে ভেঙ্গে যাওয়া অংশ ভরাট করার পর দুইপাশেই স্যান্ড সিমেন্টের বস্তা দিতে হবে।

কিন্তু বুধবার দুপুরে সিংড়িয়া বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ সরেজমিনে দেখা গেছে, কোনো শ্রমিক নেই। দুইটি স্কাভেটর মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু কাটা হচ্ছে। সেই বালু একটি চেইনড্রোজার মেশিন দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ অংশে ফেলা হচ্ছে।

সিংড়িয়া বাজার এলাকার পলাশ চন্দ্র সরকার বললেন, গতবছর বন্যার সময় বাঁধটিতে গর্ত দেখা দেয়। বিষয়টি পাউবো কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো গুরুত্ব দেয়নি। ফলে গত বছরের আগষ্ট মাসে বাঁধটি ভেঙ্গে ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। এতে মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এবার সেই বাঁধ বালু দিয়ে নির্মাণ করা হলে তা টিকবে না। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বাঁধটি আবারও ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

একই গ্রামের দিনমজুর কাশেম মিয়া নিজের ভাষায় বললেন, শুনচি কামলা দিয়া মাটি কাটার কতা। গায়োত কাম হবার নাগচে, কিনতো হামারঘরোক কাউয়ো কামোত নেয় না। খ্যায়া না খ্যায়া দিন যাবার নাগচে।

ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম সেলিম পারভেজ বলেন, বাঁধটি গতবছর প্রবল পানির চাপে ভেঙ্গে যায়। এবার বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। সেটা এলাকাবাসির কোনো কাজে আসবে না। শুধু সরকারের টাকা অপচয় হবে। শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কথা থাকলেও সেটাও করা হচ্ছেনা।
এসব বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রহমান ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. জুয়েল মিয়া মুঠোফোনে দাবি করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড আমাকে যেভাবে কাজ করতে বলেছেন, সেভাবেই কাজ করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে ক্ষতিগ্রস্থ অংশ ভরাট করতে হবে ঠিক।কিন্তু সামনে বর্ষাকাল আসছে।তাই হাতে সময় কম থাকায় ঠিকাদারকে তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।