খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০১৭: পদ্মা সেতুর ষড়যন্ত্রের ব্যর্থ হয়ে এবার রামপাল নিয়ে ষড়যন্ত্রে নেমেছে ঠিক একটি গোষ্ঠী। বুধবার তেল-গ্যাস রক্ষার নামে তথাকথিত কমিটির পক্ষ থেকে পদ্মা সেতুর মতো সরকারের আরেকটি বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প ‘রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র’ নিয়েও ঠিক একইভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। বাংলাদেশে একটি গোষ্ঠী আছে- যারা সব সময় বাংলাদেশকে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করতে চায়। তারা কখনও সরকারের কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড খুঁজে পায় না।
বৃহস্পতিবার বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন।
টিআইবির নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা সব সময় প্রতিবেদনের নামে বাংলাদেশকে একটি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে উপস্থাপন করতে সচেষ্ট থাকে। শুধু টিআইবিই নয় এর সাথে আরো অনেক বিশেষ ব্যক্তিবর্গও যুক্ত আছেন। বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্যকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে এতে তারা ঈর্ষান্বিত এবং উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্ত করার জন্যই নানা ধরনের মিথ্যচার এবং নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
পদ্মা সেতুর ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, পদ্মা সেতুর ষড়যন্ত্রের কোনো প্রমাণ পাওয়ার আগেই এই একই গোষ্ঠী এটিকে সত্য প্রমাণিত করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল। বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে কানাডার আদালতে একটি মামলা করা হয়েছে, সেই মামলায় বিশ্বব্যাংক হেরেছে। হেরে যাওয়ার পর সেই গোষ্ঠী যারা এটিকে সত্য প্রমাণিত করার জন্য জাতির কাছে, সমগ্র দেশবাসীর কাছে মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল আমরা তাদের দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছিলাম।
ড. হাছান মাহমুদ আরো বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং দলের পক্ষ থেকে বহুবার রামপাল নিয়ে কথা বলার পরও তারা বুধবার আবারো বলেছে, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নাকী আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল পদ্ধতিতে তৈরি করা হচ্ছে না। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল পদ্ধদিতেই তৈরি করা হবে। সেই অনুযায়ীই সরঞ্জামাদি আমদানি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবস্থান সুন্দরবনের প্রান্তসীমার ১৪ কি.মি দূরে এবং সুন্দরবনের যে অংশটিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে তার ৬৯.৬ কি.মি দূরে।
পশুর নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই নদী সম্পর্কে তারা মিথ্যাচার করছেন। পশুর নদীর পানি হচ্ছে জোয়ার-ভাটার পানি। এই নদী থেকে এবারই পানি উত্তোলন করে তা রিসাইক্লিং এর মাধ্যমে ব্যবহার করা হবে।
তিনি বলেন, তাদের সমস্ত অভিযোগ অনুমান নির্ভর, আবেগ নির্ভর এবং জ্যোতিষবিদ্যা নির্ভর। বিজ্ঞান নির্ভর নয় এবং যারা এই অভিযোগগুলোর সাথে জড়িত তারা ষড়যন্ত্র নির্ভর।
কয়লা আমদানির বিষয়ে তিনি বলেন, ভারত থেকেই কয়লা আমদানি করা হবে এই ধরনের কোনো চুক্তি ভারতের সাথে হয়নি। আমরা যে জায়গা থেকেই স্বল্পমূল্যে উন্নতমানের কয়লা পাবো সেখান থেকেই কয়লা আমদানি করা হবে। এই কয়লা পরিবহনে যাতে কোনো দূষণের সৃষ্টি না হয় তাই এই কয়লাগুলোকে কাভার্ড জাহাজের মাধ্যমে আনা-নেয়া করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের গতকালকের সংবাদ সম্মেলনে কিছু ভারাটে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা অভিযোগগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বলতে হয়- মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি হয়ে গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এই দেশটিকে ভালোবাসেন, তিনি কখনোই দেশের ক্ষতি হোক অথবা জনগণের ক্ষতি হোক এই ধরনের কোনো কাজ করবেন না। সুতরাং রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে মিথ্যাচার এবং বিভ্রান্তি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক এবং অবান্তর।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. হোসেন মনসুর, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবির কাউছার, গোলাম রাব্বানী চিনু ও মারুফা আক্তার পপি।