Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

kiling-bg20150426153015খােলা বাজার২৪।। রবিবার, ২৩ এপ্রিল ২০১৭: পাঁচ দিন আগে সাত বছরের শিশু ফয়ালার চোখের সামনে তার মা কে হত্যা করা হয়। হত্যার পর খুনি পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। তবে এ ঘটনায় এখনো খুনিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাজধানীর কাফরুল থানার বাজারের ৮৩৯ নম্বর চারতলা ভবনের নিচতলায় গলাকেটে হত্যা করা হয় সৌদি আরব প্রবাসী রফিকুল আলম বিপ্লব চৌধুরীর স্ত্রী রোজিনা আক্তার মিতুকে (২৭)। পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের প্রাথমিক সন্দেহ, হত্যার সঙ্গে জড়িত রফিকুল আলমের ভাগ্নে আহম্মেদ শরীফ শাকিল। এ ঘটনায় নিহতের ভাই ফিরোজ আলম ভূঁইয়া বাদী হয়ে কাফরুল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। রফিকুলের ভাবি নাজমা আলম জানান, সৌদি প্রবাসী রফিকুলের সঙ্গে মিতুর বিয়ে হয় ২০০৯ সালে। পরে একাধিকবার দেশে আসেন রফিকুল। এর মধ্যে রফিকুল-মিতু দম্পতির দুই মেয়ের জন্ম হয়। মিতু দুই মেয়ে ফয়ালা (৭) ও পল্লবীকে (আড়াই) নিয়ে কাফরুলের ইব্রাহিমপুরের ৮৩৯ নম্বর বাড়ির নিচতলার ভাড়া থাকতেন। পরিবারটির দেখাশোনা করতেন রফিকুলের বড় বোন রত্নার ছেলে শাকিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিদেশ থেকে মামা রফিকুলের পাঠানো টাকাও কখনো কখনো তুলে দিতেন শাকিল। মামী মিতুর কাছ থেকে প্রয়োজনে টাকাও নিতেন তিনি। এই টাকা লেনদেন নিয়েই দু’জনের মধ্যে বিবাদ তৈরি হয়। এ কারণেই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে নিহতের ভাই মামলার এজাহারে অভিযোগ করেছেন। এজাহারে ফিরোজ আলম ভূঁইয়া উল্লেখ করেছেন, তার ভগ্নিপতি রফিকুল সৌদি আরব থেকে নিয়মিত টাকা পাঠাতেন। কিছু টাকা মিতুর মোবাইলের বিকাশ অ্যাকাউন্টে থাকত। ভাগ্নে শাকিল মাঝে মধ্যে বিকাশ থেকে টাকা তুলে দিতেন মিতুকে। এ কারণে ওই বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন নম্বরও জানতেন তিনি। নিজের প্রয়োজনেও টাকা তুলতেন শাকিল। মিতু এই টাকা ফেরত চাওয়ার কারণেই শাকিল মিতুকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন নিহতের ভাই ফিরোজ। সাত বছরের ফয়ালার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় মিতুর সঙ্গে তার দুই মেয়েই ছিল। ফয়ালা পুলিশকে জানায়, মঙ্গলবার সকালে শাকিল দরজায় নক করার পর সে-ই দরজা খুলে দিলে শাকিল ভেতরে আসে। তখন মিতুর সঙ্গে শাকিলের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শাকিল রান্নাঘর থেকে ছুরি নিয়ে এসে মিতুকে বাথরুমে টেনে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করার পর পেছনের দরজা দিয়ে শাকিল পালিয়ে যায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাফিজ আহমেদ বলেন, ‘মেয়েটি অনেক ছোট। সে ভালো করে এখনো সবকিছু বলতে পারেনি। এখন সে তার স্বজনদের সঙ্গে নোয়াখালীতে অবস্থান করছে। এই অবস্থায় নিহতের পরিবারের সঙ্গে বেশি কথা বলা যায়নি। তারা নোয়াখালী থেকে ঢাকায় এলে আবার কথা বলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হওয়া যাবে।’ কাফরুল থানার পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে ওই বাসার বাথরুম থেকে মিতুর লাশ উদ্ধার করা হয়। তার গলার সামনে থেকে পেছনে ঘাড় পর্যন্ত কাটা ছিল। এছাড়া, বাম কানের পেছনে, থুতনিতে, দুই হাতের কব্জিতে ও দুই উরুতে গভীর কাটা দাগ ছিল। বাসা থেকে রক্তমাখা একটি চাকুও উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মিতুর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে মিতুকে দাফন করা হয় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে।