খােলা বাজার২৪।। সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০১৭: চারঘাটসহ রাজশাহীতে হারিয়ে যাচ্ছে মৌমাছি । ২০ প্রজাতির মৌমাছি পাওয়া যায় তার মধ্যে ১১ টি বিলুপ্ত প্রায়। এই বিলুপ্তির পেছনে রয়েছে মোবাইল টাওয়ার এবং ব্যাপকভাবে কীটনাশকের ব্যবহার। মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত তড়িৎ চুম্বকিয় তরঙ্গ শক্তি বা ইলেক্ট্র ম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের কারণে বিপর্যায়ে পড়ছে মৌমাছি। শুধু মৌমাছি নয় বাদুরের মতো কীটপতঙ্গ এবং প্রাণী এ কারনে বিলুপ্তির মুখে পড়ছে। বিপর্যয়ে পড়েছে জীব বৈচিত্র্য এবং খাদ্য চক্র। উদ্ভিদদের জীবন চক্র এর কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। মৌমাছি তার গতিপথ ঠিক রাখা এবং চলার জন্য প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রম্যাগনেটিক ওয়েভ ব্যবহার করে। একই সঙ্গে নেভিগেশনের মাধ্যমে সূর্যকে কম্পাস হিসেবে ব্যবহার করে। মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত তড়িৎ চুম্বকিয় তরঙ্গ শক্তি বা ইলেক্ট্র ম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের কারণে বিভ্রান্ত হয়ে মৌমাছি এদিক সেদিক ঘোরাফেরা করে। সে স্বাভাবিকের তুলনায় ১০ গুণ বেশি শব্দ করে। ৬০ হার্টজ তরঙ্গ শক্তি মৌমাছিকে বিভ্রান্ত করে। এবং ২৫০ হার্টজ তরঙ্গ শক্তি মৌমাছিকে বিক্ষিপ্তিভাবে ছোটাছুটি করতে বাধ্য করে। এই বিভ্রান্তির কারণে মৌচাক থেকে বেরিয়ে বিভ্রান্ত হয়। তারা পথ হারিয়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে ঘোরা ফেরা করে। আর মৌচাকে ফিরে আসতে পারে না। এর ফলে মধুর উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এই রেডিশেন পুরুষ মৌমাছির প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়। তারা বন্ধ্যাত্বর দিকে যায়।
কৃষিতে ব্যপকভাবে বেড়েছে কীটনাশকের ব্যবহার। অনেক ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় কীটনাশকের ব্যবহার করা হয়। এ কারনে মৌমাছিসহ বিভিন্ন উপকারী কীটপতঙ্গ মারা যাচ্ছে। যার কারনে পরাগায়নে সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যা আরো প্রকট হচ্ছে। কৃষককে অসচেতনতা এবং কর্পোরেট কোম্পানীর বাজারজাতকরণের কূটকৌশল দায়ী।
প্রাণীবিদ্যা বিভাগের কলেজ শিক্ষক বিধান চন্দ্র দাস বলেন, মৌমাছির মতো উপকারী কীটের কমে যাওয়া বা বিলুপ্তি পরিবেশের জন্য বিরাট একটি সমস্যা। মোবাইলের ইলেক্ট্র ম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের কারনে অবশ্যই একটা ক্ষতি হয়। তবে এ বিষয়ে দেশে বিস্তারিত কোনো গবেষণা হয়নি। তবে মৌমাছির বিলুপ্তির জন্য বেপরোয়া কীটনাশক ব্যবহারও দায়ী। যে ২০ ধরণের মৌমাছি পাওয়া যায় তার অর্ধেকই বর্তমানে বিলুপ্ত। প্রাকৃতিক মৌচাক এখন দেখা যায় না। এই বিলুপ্তি পরাগায়ন বিশেষত জীববৈচিত্রর জন্য বড় ক্ষতির কারণ হিসেবে আসবে।