খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৭: ‘কোরিয়ান পিপলস আর্মি’র ৮৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বিশাল অস্ত্র মহড়া দেখাল কিম জং উনের সেনাবাহিনী। দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, ওনাসন প্রদেশের ওই মহড়ায় বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার কামানও দেগেছে পিয়ংইয়ং। আর তাতেই যা বার্তা যাওয়ার, পৌঁছে গিয়েছে ওয়াশিংটনে। উত্তর কোরিয়ায় পরিস্থিতি আলোচনায় আজ বুধবার তাই গোটা সিনেটকেই আহ্বান করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
পেন্টাগনের আশঙ্কা, দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার আগে বড়সড় হামলার জন্য তৈরি হচ্ছে পিয়ংইয়ং। তারই পাল্টা প্রস্তুতি হিসেবে আজ দক্ষিণ কোরিয়ায় বন্দরে এসে ভিড়েছে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রবাহী মার্কিন ডুবোজাহাজ ইউএসএস মিশিগান। উত্তর কোরিয়ার মহড়া শুরুর আগেই। দিন কয়েকের মধ্যে কোরীয় জলসীমায় ঢুকছে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস কার্ল ভিনসন। সেই নৌবহরে যোগ দেওয়ার কথা ইউএসএস মিশিগানেরও। যার পুরোটাই কিমকে ঠেকাতে আগাম প্রস্তুতি। তবু নিশ্চিত হতে পারছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই এই জরুরী বৈঠক।
হোয়াইট হাউস সূত্রের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস-সহ সেই বৈঠকে থাকবেন সিনেটের ১০০ জন সদস্য। যদিও সেই বৈঠকে শান্তিপূর্ণ সমাধান নিয়ে আলোচনা হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। কিমের বেপরোয়া পরমাণু কর্মসূচি ঠেকাতে দক্ষিণ কোরিয়া গোড়া থেকেই আমেরিকার দোসর। কার্ল ভিনসন এসে পড়লে তারাও জাপানের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় নামবে বলে জানিয়েছে সিউল।
যদিও চীন এই যুদ্ধ এড়িয়ে যেতে চায়। গতকাল আমেরিকাকে সংযত হওয়ার আর্জি জানিয়ে ট্রাম্পকে ফোন করেছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউএসএস মিশিগান কোরীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ায় ফের চড়েছে উত্তেজনার পারদ। হোয়াইট হাউসের দাবি, এটি নেহাতই রুটিন মহড়া। যা মানতে নারাজ পিয়ংইয়ং। পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও ইউএসএস মিশিগানে ১৫৪টি টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র, ৬০ জন বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত সেনা এবং বেশ কয়েকটি ছোট-ডুবোজাহাজ রয়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার এক সংবাদমাধ্যম।
তাই আগামী দিনে এটি যদি কার্ল ভিনসনের দোসর হয়, তা হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহলের একাংশ। কিম এরই মধ্যে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ডোবানোর হুমকি দিয়ে রেখেছেন। উত্তর কোরিয়া দখলের লক্ষ্যে আমেরিকা পরমাণু যুদ্ধের ছক কষছে বলেও অভিযোগ করেছে সে দেশের শাসক দল ওয়ার্কার্স পার্টির মুখপাত্র।
ট্রাম্প তবু হাঁটছেন নিজের পথেই। কিমকে ‘শিক্ষা’ দিতে অনড় মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত কালই হোয়াইট হাউসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি উত্তর কোরিয়ার উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর প্রস্তাব রেখেছেন বলে সূত্রের খবর।
ট্রাম্পের কথায়, ‘উত্তর কোরিয়া এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের কাছেই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর একটা বিহিত আমাদের করতেই হবে। ” শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ট্রাম্পের এই বৈঠকও একধরণের মহড়া বটে। উত্তর কোরিয়ার উপর যে ভাবেই হোক আরও এক ঝাঁক নিষেধাজ্ঞা চাপাতে মরিয়া ট্রাম্প।
– See more at: http://www.bd-pratidin.com/international-news/2017/04/26/226694#sthash.KzdaPXa2.dpuf