খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৭: বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠিকে জনসম্পদে পরিনত করতে ব্যর্থ আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা। লাগামহীন ঘুষ বানিজ্য, দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতিতে দেশের রাষ্ট্রীয় চাকুরীর বাজার এখন একেবারেই কুক্ষিগত। বেসরকারী পর্যায়ের অবস্থাও বেশ সীমিত এবং তীব্র ও অসম প্রতিযোগিতামূলক। প্রতি বছরই শিক্ষিত, অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণীদের তালিকা হচ্ছে বেশ লম্বা। পরিকল্পনাহীন, পলিসিহীন সরকারী চরম অব্যবস্থাপনায় নিম্ন মধ্যবিত্তদের জীবন ওষ্ঠাগত। এহেন অবস্থায় নিজস্ব উদ্যোগেই বেকারত্বের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।
অন্যের আশায় পথ চেয়ে বসে না থেকে নিজ কর্মশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আগামীর জন্য নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে। কারন, যেদেশে ১৬ বছর পড়ালেখা করে পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে চাকরির আবেদন করতে গিয়ে বেকার যুবক শোনে ‘অভিজ্ঞতা ছাড়া চাকরি দেয়া হয়না’, তখন প্রশ্ন জাগে তাহলে ১৬ বছর ওয়ার্কশপে কাজ শিখলেই হতো! ১৬ বছরে বিশাল ওয়ার্কশপের মালিক হয়ে যেতাম। যেদেশে পাশ করার ৪ বছরের মধ্যে প্রেমিকাকে বিয়ে করতে গেলে প্রেমিকার মা ‘প্রতিষ্ঠিত পাত্রের’ দোহাই দিয়ে বিদায় করে দেয় সেখানেও প্রশ্ন আসে! ১৬ বছর পড়ালেখা না করে তো ব্যবসার চিন্তা করলেই হতো..! কাড়ি কাড়ি টাকা থাকতো! এদেশে কি সার্টিফিকেট আর ২ টাকার পুরোনো নোটের মধ্যে আদৌ কি কোন পার্থক্য থাকছে? ১৬ বছর পড়াশোনা করে যদি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বেতনে সকাল ৯টা টু রাত ৯টা ডিউটির অফার আসে। তাহলে নামের আগে ওই ‘অনার্স/মাস্টার্স/ইঞ্জিনিয়ার’ ডিগ্রী শব্দের দরকার কি? সিএনজি/রিক্সা চালিয়েও ১৫-২০ হাজারেরও বেশী ইনকাম করা যায়! তারুণ্যের হতাশা হাজার মোটিভেশনাল বাণী শুনিয়ে দূর করা যায়না। রাতারাতি বদলে দেয়াও যায়না।
তরুণ বন্ধুরা, প্ল্যান কি আপনাদের? আগামী দশ বছর পর যে আরো কয়েক লাখ যুবক বেকার হবে তাদের জন্যে পরিকল্পনা কি এখন থেকেই করে রাখা উচিত না? নাকি পাশ করে বের হলেই কোন এক সমাবেশে মোটিভেশনাল স্পীচ দিয়ে দায় সারবেন। পেটে ভাত না থাকলে মোটিভেশন পিছন দিয়ে পালাবে! সুতরাং,সময় অনেক নষ্ট হয়েছে, আর না। তরুণদর এখনই সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার। আর যারা এখনও ভাবছেন কী করবেন, তারা সময় নষ্ট না করে অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন। খুব বড় কিছুর চিন্তায় দামি সময় নষ্ট না করে ছোট কিছুতেই নিজের মেধা আর সৃজনশীলতাকে পুঁজি করে নেমে পড়ুন আজই।
তবে প্রিয় তরুণ বন্ধুরা, একটি কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, কোন কাজই ছোট না, লজ্জার না। কাজ কাজই। লজ্জা হল বেকারত্বে। আর সম্মান হল কর্মে। তাই আসুন নিজ কর্মশক্তিকে আজই প্রয়োগ করি বেকারত্বের বিরুদ্ধে। এজন্য আগে নিজেকে জানুন, নিজের চিন্তা, চেষ্টা আর দক্ষতাকে সম্মান করুন। নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়ান। দেখবেন সাফল্য আপনাকে ছুঁয়ে গেছে। তবে অবশ্যই এই সাফল্যের জন্য থাকতে হবে আত্মবিশ্বাস, কঠোর পরিশ্রম, ঝুঁকি নেওয়ার সাহস এবং ধৈর্য্য।
সৃজনশীল তরুণ উদ্যোক্তাদের পাশে আছে ‘কর্মশক্তি যুব নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন’। যে কোন পরামর্শ ও কর্মসহায়তার জন্য নিবেদিত এই ফাউন্ডেশন।
তরুন ও যুব বন্ধুগণ, আপনার তারুণ্যদীপ্ত প্রয়াসের প্রতি আন্তরিক শুভকামনা রইল। ‘কর্মশক্তি যুব নেটওয়ার্ট ফাউন্ডেশন’ আপনার কর্মশক্তিকে প্রেরণা যোগাতে পাশে থাকবে বন্ধুর মত। আপনার কর্ম, উদ্যোগ কিংবা পরিকল্পনা সহস্র তরুণের জন্য অনুকরণীয় হোক সেই প্রত্যাশা রইল।