খােলা বাজার২৪।। রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৭: জামালপুর বকশীগঞ্জ উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে সেলিনা বেগম নামে এক গৃহবধুকে হাত পা বেধেঁ লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও গরম খুন্তি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে পাষন্ড স্বামী রফিকুল ইসলাম। যৌতুক লোভী স্বামী নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় শুক্রবার সকালে বকশীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে নির্যাতিত গৃহবধু। তার অবস্থা আশংকা জনক।
পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে, প্রায় দেড় বছর পূর্বে উপজেলার বাট্টাজোড় পানাতিয়াপাড়া গ্রামের জলিল মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলামের সাথে মেরুরচর ইউনিয়নের মাদারেরচর ঘুগরাকান্দি গ্রামের আবদুল খালেকের মেয়ে সেলিনা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর রফিকুল ইসলাম ৪ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুক দিতে না পারায় প্রায়ই নানাভাবে সেলিনাকে নির্যাতন করতো রফিকুল ও তার পরিবারের লোকজন। এই নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য শালিসও হয়েছে। কিন্তু নির্যাতন কমেনি। তাই তিন মাস আগে সেলিনার পিতৃপক্ষ মেয়ের সুখের আশায় দুই লাখ টাকা তুলে দেন জামাতা রফিকুলের হাতে। প্রায় এক মাস আগে সেলিনাকে গাজীপুরের টংগী বোর্ড বাজার এলাকায় নিয়ে যায় রফিকুল। সেখানে নিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন পর রফিকুল যৌতুকের অবশিষ্ট ২ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না আনলে তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। যৌতুক না পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মুখে কাপড় দিয়ে হাত পা বেধেঁ লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এর পর তাকে আগুনে পুড়িয়ে মারার পরিকল্পনায় লোহার খুন্তি গরম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালায়। তার সারা শরীরে নির্যাতনের জখম রয়েছে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে সেলিনা অজ্ঞান হয়ে পড়ে। অচেতন অবস্থায় সেলিনাকে ফেলে রেখে রফিকুল বাসার বাইরে চলে গেলে এক প্রতিবেশীর সহায়তায় পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পায় গৃহবধু সেলিনা। শুক্রবার সকালে তাকে বকশীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশংকা জনক।
নির্যাতিত সেলিনা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই যৌতুক লোভী স্বামী যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। টাকা না পেয়ে সে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে আমার বাবা তাকে দুই লাখ টাকা প্রদান করে। বাকি আরও দুই লাখ টাকার জন্য আমার উপর অমানষিক নির্যাতন চালায় হাত-পা বেঁধে। আমি আমার পাষন্ড স্বামীর বিচার চাই।
নির্যাতিত সেলিনার বাবা আবদুল খালেক বলেন, মেয়ের সুখ সবাই চায়! আমিও চাই। তাই আমার মেয়ের উপর টাকার জন্য নির্যাতন করলে আমি তাকে দুই লাখ টাকা প্রদান করি। কিছু দিন পরই আবার টাকার জন্য আমার মেয়েকে হাত-পা বেঁধে অমানষিক নির্যাতন চালায়। আমার মেয়ে জামাতার নির্যাতনে এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমি এর বিচার চাই।