Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ৩ মে, ২০১৭: 12বছর জুড়ে ধানের বাম্পার ফলনে দাম পড়ে যাওয়ায় কৃষকের দুর্গতি বেড়েছে। অথচ চালের বাজারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। ধানের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য নেই চালের দামের।

মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ টাকা। আর এক মাসে দামে পার্থক্য হয়েছে পাঁচ থেকে সাত টাকা। আর লাগামহীন এই দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

গত বছর ২৩ টাকা দরে ধান এবং ৩২ টাকা দরে চাল ক্রয় করে সরকার। তবে বছর জুড়ে আলোচনা ছিল ধানের কম দাম। সরকার ৯২০ টাকা দর বেধে দিলেও কৃষক মৌসুমের শুরুতে বেচতে বাধ্য হয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মণ দরে। পরে কিছুটা বাড়লেও তা ৯০০ টাকায় যায়নি।

এক মণ ধানে চাল হয় ২৬ কেজির বেশি। আর অটোমেটিক মেশিনে তা হয় ৩০ কেজির কাছাকাছি। এই হিসাবে চালের দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকা যাওয়ার কোনো কারণ নেই বলে বলছেন খোদ ব্যবসায়ীরাই। তারপরও দাম কেন বাড়ছে, সে নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো জবাব নেই কারও কাছেই। যদিও চালের দাম বাড়লেও সরবরাহের কোনো ঘাটতি দেখা যায়নি বাজারে।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা যে টাকায় চাল কিনে আনেন কেজিপ্রতি তার চেয়ে সর্বোচ্চ এক টাকা লাভ করেন। মিলমালিকরাই বলতে পারবে কেন দাম বেড়েছে।

বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েকদিনের মেঘলা আকাশ আর বৃষ্টির কথা বলে দাম বাড়ানো হয়েছে। অকাল বন্যায় হাওরে ফসলহানির খবরে চালের বাজার তেঁতে উঠেছে আরও। দাম আরও বাড়বে বলছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে টিসিবির বাজারদরের সঙ্গে প্রকৃত বাজারদরের পার্থক্য ব্যপক। টিসিবির দরে সরু চালের দাম সর্বোচ্চ ৫৬ টাকা বলা থাকলেও বাজারে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এই চাল।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এক মাস আগে ৫০ কেজির যে বস্তা দুই হাজার ২০০ টাকা বস্তা বিক্রি হয়েছে, সেই চাল এখন দুই হাজার ৪০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট চাল এখন কেজিপ্রতি ৫৩ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগেও এর দাম ছিল ৪৭ থেকে ৪৮ টাকায়।’

বাংলাদেশে অর্থনীতি আগের চেয়ে শক্তিশালী হওয়ায় চালের দাম বৃদ্ধি এখন আর সেভাবে খবর হয়ে আসে না গণমাধ্যমে। তবে স্বল্প আয়ের মানুষ বিশেষ করে দিনমজুররা বিপাকে পড়ে দাম বৃদ্ধিতে।

নিম্ন আয়ের মানুষদের এখনও তাদের আয়ের বেশিরভাগ ব্যয় হয় চালের পেছনে। ফলে চালের দাম বাড়লে তাদের সঞ্চয় কমে অথবা শিক্ষা, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় কমিয়ে দিতে হয়। এমনকি বাড়ে অপুষ্টির সমস্যাও।

মতি মিয়া নামে এক রিকশাচালক বলেন, ‘চাউলের দাম বেশি, কিন্তু ইনকাম তো বেশি না। বৃষ্টি আইলে ইনকাম আরও কইমা যায়। এই সময় চাউলের দাম বাড়ে। আমাগো মত মানুষের জন্য এইটা বিপদ।’

মিরপুর চালের আরদে চাল কিনতে আসা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘চাল কিনতে আসলেই দেখি চালের দাম বেশি। চালের বাজারের নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের এই বিষয়ে দ্যবস্থা নেয়া উচিৎ। এভাবে প্রতিনিয়ত দাম বাড়া আমাদের মত মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য বড় সমস্যার কারণ।’