Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

18280300_1393527497402046_1794374770_n

খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ৩ মে:  ২০ দলীয় জোটের অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, সমগ্র বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করলেও বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশের গণমাধ্যম মুক্ত নয়, বরং বাংলাদেশের গষমাধ্যম বা বার ক্ষমতাসীনদের আক্রমনের শিকার হয়েছে। ফ্যাসিবাদী শক্তির রক্তচক্ষুর কাছে গণমাধ্যমকে অসহায় আত্মসমর্পন করতে হচ্ছে। বর্তমান সরকার মুখে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বললেও প্রকৃত অর্থে তারাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে পদদলীত করছে বার বার।

 

তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ আর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পাশাপাশি অবস্থান করতে পারে না। তারা যতবারই রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে ততবারই গণমাধ্যম আক্রান্ত হয়েছে।

 

বুধবার নয়াপল্টনস্থ যাদু মিয়া মিলনায়তনে ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর আয়োজিত আলোচনা সভা‘য় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ কথা বলেন।

 

নগর সদস্য সচিব মো. শহীদুননবী ডাবলু’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন ন্যাপ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, নগর যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, যুব ন্যাপ যুগ্ম সমন্বয়কারী আবদুল্লাহ আল কাউছারী, ছাত্রকেন্দ্রের যুগ্ম সমন্বয়কারী সোলায়মান সোহেল প্রমুখ।

 

গোলাম মোস্তফা ভুইয়া আরো বলেন, ১৯৭১ সালে এক সাগরের রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলাদেশে ৪ টি সংবাদপত্র সরকারের নিয়ন্ত্রনে রেখে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী প্রতিষ্ঠিত ‘হক কথা’-সহ সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল আওয়ামী সরকার। ডেইলী অবজার সম্পাদক আবদুস সালামকে গ্রেফতার করে কারাবন্দি করা হয়েছিল। দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে দৈনিক বাংলা, টাইমস, বিচিত্রা, আনন্দ বিচিত্রা বন্ধ করেছে। সবশেষে ক্ষমতায় এসে বন্ধ করেছে চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, দৈনিক আমার দেশ, শীর্ষ নিউজ, বাংলামেইল। শুধু বন্ধ করেই ক্ষান্ত হয়নি সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, শওকত মাহমুদ, প্রবীন সাংবাদিক শফিক রেহমানকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্ধি করেছে। মামলা আগ্রাসনের শিকার হয়েছে অনেক সাংবাদিক। যা সকল কিছুই মুক্ত গণমাধ্যম নীতির পরিপন্থি।

 

তিনি বলেছেন, সরকারের সমালোচনা করায় এবং বিরোধী সংবাদ পরিবেশনের কারণে এই সরকারের আমলে টিভি চ্যানেল, বন্ধ হয়েছে, সম্পাদক-পরিচালক কারাবন্দি, জাতীয় সংসদে দারিয়ে সরকারের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও সরকারী দলের সিনিয়র সদস্যদের চরম সমালোচনার শিকার হয়েছে সংবাদপত্র, সম্পাদক ও সাংবাদিকরা। সাংবাদিক সাগর-রুনির নির্মম হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনেও চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বর্তমান সরকার। সব মিলিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। ফলে গণতন্ত্র বাঁধা গ্রস্থ হচ্ছে, এমনকি ভবিষ্যতে গণতন্ত্র হত্যার মাধ্যমে বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠার আশংকায় রয়েছে দেশবাসী। বর্তমানে দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র সংকোচিত হয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রনে চলে গেছে। যা একটি রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর হতে পারে না।

 

সভাপতির বক্তব্যে মো. শহীদুননবী ডাবলু বলেছেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম এখন ইতিহাসের সবচাইতে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ফ্যাসিবাদের নগ্ন থাবায় সংবাদমাধ্যম পুরোপুরি শৃঙ্খলিত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দল-মত-পথ নির্বিশেষে সকলকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

 

তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একে অপরের পরিপূরক। গণতন্ত্র না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকে না, তেমনই মুক্ত গণমাধ্যম ছাড়া গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না।

 

সভায় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, দৈনিক আমার দেশ, শীর্ষ নিউজ, বাংলামেইলসহ বন্ধ সকল গণমাধ্যম খুলে দেয়ার এবং প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমান, শওকত মাহমুদ, মাহমুদুর রহমান, ডেইলী স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামসহ যে সকল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানানো হয়।