খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০১৭: গ্রামে গুরুজনদের মুখে একটি কথা শোনা যেত- ‘ফল খেয়ে জল খায়, যমে বলে আয় আয়’। কিন্তু এখন আর তেমন করে কেউ বলে না। তাই বলে কি ওই কথার আবেদন কমে গেছে? দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতার ফসল ওই কথার কি কোনোই মূল্য নেই? অবশ্যই আছে এবং এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও আছে।
কাঁচা ফল বা পাকা ফল সাধারণ রান্না করা খাবারের মতো সহজে হজম হয় না। সেজন্য পরিপাকতন্ত্রের একটু বেশি পরিশ্রম লাগে। আর এই বেশি পরিশ্রমে সহায়তা করে পাকস্থলির জারক রস। ফল খাওয়ার পরই পাকস্থলিতে প্রয়োজনমতো জারক রস নিসৃত হয়। কিন্তু এ সময় পানি খেলে ওই রস পাতলা হয়ে যায় এবং স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না। ফলে বদহজম হতে পারে আর এর ফলে পাতলা পায়খানা দেখা দিতে পারে।
পুষ্টিবিদদের মতে, যে সব ফলে পানির পরিমাণ বেশি, অর্থাৎ রসালো ফল খাওয়ার পরই পানি খাওয়া উচিত নয়। যেমন- তরমুজ, শশা, কমলালেবু, আনারস, বাতাবি লেবু বা স্ট্রবেরির মতো ফল খেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই পানি খেলে বিপদ হতে পারে।
হজমের জন্য শরীরের নির্দিষ্ট পিএইচ মাত্রার প্রয়োজন। যে সব খাবারে পানি আছে, তার সঙ্গে যদি আবার পানি খাওয়া হয় তা হলে পিএইচ মাত্রা কমে যায়। ফলে তা হজমে ব্যাঘাত ঘটায়। ফাইবার ও পানি থাকার কারণে পেঁপে বা ফুটি জাতীয় ফল খালি পেটে খেতে বারণ করা হয়। কারণ এর ফলে পিএইচ মাত্রা কমে যেতে পারে।
খালি পেটে এই সব ফল খেলে তা পৌষ্টিকতন্ত্রে পৌঁছনোর আগেই খাদ্যনালীতেই পরিপাক শুরু হয়ে যায়। এর পর পানি খেলে শরীরের পিএইচ মাত্রা কমিয়ে দিয়ে তা হজমে ব্যাঘাত ঘটায়। এতে খাবার হজম না হওয়ায় শরীরে পুষ্টির জোগান দেয়ার বদলে তা টক্সিনে পরিণত হয়।
শশা বা তরমুজ যদি সঠিক নিয়ম মেনে খাওয়া হয় তা হলে তা হজমে সাহায্য করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে এই সব ফল মলত্যাগে সাহায্য করে। যদি এই সব ফলের সঙ্গে পানি খাওয়া হয় তা হলে সেই প্রক্রিয়া অতি সক্রিয় হয়ে গিয়ে ডায়রিয়া হয়ে যেতে পারে।
আর সে কারণেই বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিপদ এড়াতে শুধু ফল নয়, যে কোনও খাবারের সঙ্গে বা খাবার গ্রহণের পর পরই পানি না খাওয়া ভালো। এতে হজমে ব্যাঘাত ঘটে। খাওয়ার ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর পানি খাওয়াই ভালো।