Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

15খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ১০ মে, ২০১৭: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) পরিচালক জেমস কোমিকে বরখাস্ত করে রাজনৈতিক বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল ফাঁস এবং ট্রাম্পের রুশ সংযোগ নিয়ে তদন্ত করছিলেন কোমি। তাকে বরখাস্ত করায় এ তদন্ত নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ডেমোক্র্যাটরা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আজ এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, তাকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং কার্যালয় থেকে অপসারণ করা হয়েছে।’ মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনসের পরামর্শক্রমে জেমস কোমিকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। তবে তার স্থলাভিষিক্ত কে হবেন, তা জানানো হয়নি।
সিনেটের ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার জানান, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন। শুমার আরও বলেন, ‘কোমিকে বরখাস্ত করে তিনি বড় ভুল করলেন। আর এ বরখাস্তের কোনও যথাযথ উত্তরও দেননি তিনি।’
শুমার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেছেন, ‘এখন জনগণের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে একটাই পথ আছে, আর তা হলো নির্বাচনে রাশিয়ার ভূমিকা তদন্তে স্বাধীন তদন্ত শুরু করা।’
সিনেট তদন্ত কমিটির রিপাবলিকান চেয়ারম্যান সিনেটর রিচার্ড বার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কোমি বরখাস্ত হওয়ায় তিনি সমস্যা বোধ করছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, তার বরখাস্ত হওয়াটা এফবিআই এবং দেশের জন্য এক ক্ষতি।’
কোনও কোনও ডেমোক্র্যাট নেতা ট্রাম্পের এ পদক্ষেপকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের ‘ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি’র বিশেষ তদন্তকারীকে বরখাস্তের সঙ্গে তুলনা করেছেন। যে বিশেষ তদন্তকারী ‘ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি’ তদন্ত করছিলেন, একরাতে তাকে বরখাস্ত করেন নিক্সন। এ ঘটনা ‘সেটারডে নাইট ম্যাসাকার’ নামে পরিচিত।
১৯৭৩ সালে নিক্সনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে ক্ষমতার অপব্যবহার করার। সেই সঙ্গে এ সংক্রান্ত বহু তথ্যও ফাঁস হয়। শেষ পর্যন্ত নিক্সনকে পদত্যাগ করতে হয়। ওই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট তখন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করতে আটক, নির্যাতন ছাড়াও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অভ্যন্তরে বিভেদ সৃষ্টির জন্য এফবিআই-কে ব্যবহার করেছেন। ওয়াটারগেটে অবস্থিত ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদর দফতরে তখন পাঁচজনকে আটক করা হয়, এর মধ্যে একজন ছিলেন এফবিআই-এর উপ-পরিচালক। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এই ঘটনা প্রকাশ করে। আর নিক্সনের দুর্নীতির এই ফিরিস্তি ‘ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি’ নামে পরিচিতি অর্জন করে।
উল্লেখ্য, সেশনসই প্রথম সিনেটর, যিনি ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করায় সমর্থন দিয়েছিলেন। জানুয়ারিতে তিনি সিনেট শুনানিতে জানিয়েছিলেন, রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার কোনও সংযোগ হয়নি। আর ট্রাম্প শিবিরের অন্য সদস্যদের সঙ্গে রুশ কর্তৃপক্ষের কি কথা হয়েছে, তা তিনি জানেন না। এবার ওই সেশনসের পরামর্শেই কোমিকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প।
চলতি বছরের মার্চে এনএসএ, সিআইএ এবং এফবিআই-এর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আমদের মূল্যায়নে বেরিয়ে এসেছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণাকে প্রভাবিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। রাশিয়ার লক্ষ্য ছিল মার্কিন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আস্থাহীনতা তৈরি করা, হিলারি ক্লিনটনকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং নির্বাচনে তার সমর্থনকে প্রভাবিত করে তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। আমাদের মূল্যায়নে আরও উঠে এসেছে, পুতিন এবং রুশ সরকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নির্বাচনে জয়ী করার ক্ষেত্রে পরিষ্কার পক্ষপাতিত্ব ছিল।’
এদিকে, মঙ্গলবারই জানা গেছে যে হিলারি ক্লিনটনের ব্যক্তিগত ইমেইল সার্ভার বিষয়ে কংগ্রেসের কাছে অসত্য তথ্য দিয়েছিলেন জেমস কোমি। তবে এফবিআই পরিচালক হিসেবে জেমস কোমির যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেই তাকে বরখাস্ত করেছেন ট্রাম্প। জেমস কোমির কাছে লেখা চিঠিতে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আপনি এই গোয়েন্দা সংস্থাকে যথাযথভাবে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো সক্ষমতা রাখেন না।