Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

suicide-rahassa-nbs24খােলা বাজার২৪।। শুক্রবার , ১২ মে, ২০১৭: শহরের বসুন্ধরা এলাকা হতে সামিউল আলম শাহারুখ (১৬) নামে এক স্কুল ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে নিজ শয়ন কক্ষ থেকে পুলিশ শাহারুখের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। শুক্রবার দুপুরে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহটি লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। নিহত সামিউল ইসলাম শাহরুখ লালমনিরহাট শহরের বসুন্ধরা এলাকার অবসাপ্ত সেনা সদস্য জাহিদুল আলমের ছেলে। সে লালমনিরহাট টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেনীর ( বিল্ডিং ট্রেডের) ছাত্র বলে জানা গেছে।

শাহারুখের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। বাবা জাহিদুল দাবী করে বলছে , তার মাদকাসক্ত ছেলে শাহারুখ আত্মহত্যা করেছে । এলাকাবাসী ও সহপাঠীরা বলছে ভিন্ন কথা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী ও সহপাঠীরা বলছে , বদমেজাজি বাবার অতি শাসনে সামিউল আলম শাহারুখ আত্মহত্যা বা অন্য কোন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে, যা ময়না তদন্তের মাধ্যমে বের হয়ে আসবে ।

এলাকাবাসি ও শাহারুখের বন্ধুরা জানায়, সামিউলের বাবা জাহেদুল আলম এলাকায় একজন মদমেজাজি লোক হিসেবে পরিচিত। তিনি সামান্য কারণে সামিউলকে প্রায় সময় মারধর করতেন। ঘটনার তিনদিন আগে থেকেই শাহারুখকে ঘরে আটকে রাখে বাবা জাহেদুল । এই অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কয়েকজন বন্ধুর মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠায় সামিউল। ক্ষুদে বার্তায় শাহারুখ বন্ধুদের জানায়, বাবা তাকে আটকে রেখেছে। তার আর ভাল লাগছে না বলে জানায় বন্ধুদের। ওই ক্ষুদে বার্তাই যে সামিউলের জীবনের শেষ বার্তা হবে তা হয়তো জানা ছিলনা বন্ধুদের। কারণ সামিউল তার বাবার অতিশাসন সইতে না পেরে ওইদিন রাত সাড়ে ৮ টার দিকে নিজ ঘরে বিছানার চাদর গলায় পেঁচিয়ে আতœহত্যা করে। পরে রাত ১১ টার দিকে পুলিশ গিয়ে ওই লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

তবে ছেলেকে অতিশাসন কিংবা মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন সামিউলের বাবা জাহেদুল আলম। তার ভাষ্য মতে, বৃহস্পতিবার শবে বরাতের রাতে ছেলেকে নিয়ে নামাজে যাবেন বলে তাকে ডাকতে যান তিনি। কিন্তু ঘরের দরজা বন্ধ পেয়ে সন্দেহ হয় তার। পরে পুলিশ এসে সামিউলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে বলে জানান বাবা জাহেদুল আলম।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিহত সামিউলের কয়েকজন বন্ধু জানায়, লাশ উদ্ধারের পরেও তা ময়নাতদন্ত না করার চেষ্ঠা করেছেন তার বাবা। পরে বন্ধুদের দাবির প্রেক্ষিতেই পুলিশ সামিউলের মরদেহ মর্গে পাঠায় বলে জানায় তারা।

এদিকে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১০ সালে সেনা সদস্য হিসেবে অবসর গ্রহন করেন সামিউলের বাবা জাহেদুল আলম। এরপর তিনি লালমনিরহাট সেনামৈত্রী মার্কেটে জাহিদ টেলিকম নামের মোবাইলের দোকান খুলে বসেন।

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সেলিম রেজা জানান, বাবা হিসেবে সন্তানকে একটু শাসন করবেন- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সামিউল আসলে কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা হয়তো ময়নাতদন্তের পর বোঝা যাবে বলে জানান তিনি।

লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদেরকে বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।