Tue. Jun 17th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

27kখােলা বাজার২৪।। রবিবার , ১৪ মে, ২০১৭:একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় যাঁরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সমর্থক ছিলেন, তাঁদের অনেকেই এখন মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির দায়িত্বে আছেন। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা এ মন্তব্য করেছেন।

আজ রোববার দুপুরে একাত্তরে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি এ মন্তব্য করেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা রিভিউ আবেদন এবং খালাস চেয়ে করা সাঈদীর রিভিউ আবেদনের ওপর আজ দুপুর ১২টা থেকে শুনানি শুরু হয়। এটি শেষ হয় দুপুর ১টা ৫ মিনিটে।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগে ছিলেন আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও মির্জা হোসেইন হায়দার।

শুনানিতে সাঈদীর পক্ষে আজ শুনানি উপস্থাপন করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এস এম শাহজাহান ও তানভীর আল আমিন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

শুনানির শুরুতে আসামির খালাসের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিরোজপুরে ছিলেন না। তিনি পরিবার নিয়ে যশোরে ছিলেন। সেখানে মসজিদের পাশে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তিনি পরিবারসহ থাকতেন। তিনি একজন প্রফেশনাল বক্তা। ওয়াজ মাহফিল করে তিনি জীবন-ধারণ করেন। এটাই তাঁর পেশা।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ওই সময় তো বর্ষাকাল ছিল, মে মাস। বর্ষাকালে তিনি কীভাবে ওয়াজ করতেন? মার্চ-এপ্রিল-মে এই তিন মাস ওয়াজ হয় কি-না?

তখন খন্দকার মাহবুব হোসেন ফের বলেন, সাঈদী সাহেব প্রফেশনাল বক্তা। তিনি সারা বছরই ওয়াজ করেন। এটা করেই তিনি সংসার চালাতেন।

তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমার জানামতে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে যারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সমর্থক ছিল, তাদের পক্ষে অংশ নিয়েছিল, তাদের অনেকেই বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছে।’

এরপর প্রায় এক ঘণ্টা দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত আগামীকাল সোমবার পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন।

২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিভিউ আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। মোট ৩০ পৃষ্ঠার মূল আবেদনে পাঁচটি যুক্তি দেখানো হয়।

একই বছরের ১৭ জানুয়ারি আপিলের রায় থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন দায়ের করেন সাঈদী। মোট ৯০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে আমৃত্যু কারাদণ্ড থেকে খালাস পেতে ১৬টি যুক্তি দেখানো হয়েছে।

২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ আদালত সাঈদীর রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেন। নিয়ম অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ১৫ দিনের মধ্যে তা পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারে রাষ্ট্র বা আসামিপক্ষ।

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করেন।