খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার , ১৮ মে, ২০১৭: আপন জুয়েলার্সে শুল্ক গোয়েন্দাদের অভিযানের প্রেক্ষাপটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলে দেশজুড়ে অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘট ডেকেছেন সোনার দোকান মালিকরা।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সদস্য সংখ্যা এখন ৭০০ জনের মতো; এর বাইরে সারাদেশে হাজার দশেকের মতো গহনার দোকান রয়েছে। ঈদের আগে ধর্মঘট ডাকায় এখন দোকানগুলো বন্ধ থাকবে, যাতে যুক্ত আছে প্রায় ২৮ লাখ মানুষ।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটে ওই বৈঠক শেষে আগরওয়ালা বলেন, জুয়েলারি ব্যবসা বান্ধব আমদানি নীতিমালা প্রণয়নের দাবিও তাদের রয়েছে।
ধর্ষণের মামলায় ছেলে আসামি হওয়ার পর বুধবার শুল্ক গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমার দোকান বন্ধ হলে সারাদেশে সবার দোকান বন্ধ করা উচিৎ।”
জুয়েলার্স সমিতির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আপন জুয়েলার্সের কোনো নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার আমিন জুয়েলার্সে অভিযানের বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।
এতে বলা হয়, “সভায় উপস্থিত সকলে সর্বসম্মতিক্রমে জুয়েলারি দোকানে হয়রানিমূলক অভিযান ও আমিন জুয়েলার্সে অভিযানের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।”
জুয়েলার্স সমিতির দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীকেও দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে বলে সংগঠনটির একাধিক সদস্য জানিয়েছেন।
জুয়েলার্স সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলদারের ছেলে সাফাত আহমেদ বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন।
গত ৬ মে সাফাতের বিরুদ্ধে মামলার পর তাদের ব্যবসায় অবৈধ বিষয় থাকার অভিযোগ ওঠার পর তার তদন্তে নামে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
অভিযানে আপন জুয়েলার্সের একটি বিক্রয় কেন্দ্র সিলগালা করে দেওয়ার পাশাপাশি ১৩ মণের মতো সোনা ও হীরা আটক করার পর দিলদারকে তলব করা হয়।
এই অভিযানকে হয়রানিমূলক দাবি করে তার প্রতিবাদও জানিয়েছিল জুয়েলার্স সমিতি। আপনসহ সব জুয়েলার্স বৈধভাবেই ব্যবসা করছে বলে দাবি করেন তারা।
তবে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান বলেন, আপন জুয়েলার্সে ‘ব্যাপক অনিয়ম, চোরাচালান এবং অবৈধ অর্থ সরবরাহের’ প্রমাণ তারা পেয়েছেন। অভিযানের সময় স্বর্ণালঙ্কার এবং হীরার বিপরীতে তারা যথেষ্ট কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
আপন জুয়েলার্সের কোনো বিক্রয় কেন্দ্র বন্ধ করেননি জানিয়ে তিনি আরও বলেছিলেন, “পূর্ণাঙ্গ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় স্বর্ণালঙ্কার এবং হীরা আটক করার পর স্থানীয় দোকান মালিক সমিতি, জুয়েলার্স সমিতির প্রতিনিধির অনুরোধে এবং স্বাক্ষরে আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।”
দেশে সোনা আমদানি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার দিকটি তুলে ধরে বাণিজ্যিকভাবে আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠিও দিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর; পাশাপাশি আটক চোরাই সোনার নিলামের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বানও জানানো হয় চিঠিতে।