খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ২০ মে, ২০১৭: ভারতে চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) নিয়ে নোয়াখালীর প্রতিটি অঞ্চলে চলছে জুয়া। এ জুয়ায় রীতিমত আক্রান্ত হয়ে পড়েছে নোয়াখালীর পাড়া-মোহল্লা। এ জুয়ার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন প্রতিটি স্তরের কোনো না কোনো মানুষ । এতে কেউ হচ্ছেন কোটিপতি, কেউবা হচ্ছে নিঃস্ব^। আইপিএল ক্রিকেট জুয়ায় জড়িত ডিলার ও এজেন্টদের বেশির ভাগই যুবক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলা সদরের সোনাপুর পৌর বাজারে একাধিক চায়ের দোকান, কালিতারা বাজারের রাসেলের দোকান, মান্নান নগরের বেলায়েতের দোকান, বয়াতলীর সুজনের দোকান, করম উল্ল্যা বাজারের চার রাস্তার মোড়ের হাসিমের দোকানে ১৫-২০জন করে যুবক-ছাত্র টেলিভিশনের পর্দায় চলমান আইপিএল ক্রিকেট খেলার প্রতিটি বল, ওভারে চার-ছক্কার হিসাবে নগদ টাকায় জুয়া চালাচ্ছে। শুধু টেলিভিশনের পর্দার সামনে বসেই নয়, মুঠোফোনেও চলে এ জুয়া। এ জুয়ায় বর্তমানে জেলা সদরের একাধিক পরিবার সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলার কেন্দুরবাগ বাজারে মাহফুজের চায়ের দোকানে সন্ধ্যা হলে জুয়া খেলার হিড়িক পড়ে। দোকানের সামনে বসা ৪০-৫০জন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। এদের অধিকাংশই রিক্সা চালক, দিন মজুর ও যুব সমাজ। জুয়ার অংক এক’শ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত চলে। জুয়া খেলার ধরণ প্রতি বলে বাজি, প্রতি ওভার ও ম্যাচে চলে বাজি। এ বাজিকরদের অধিকাংশ নেহাত দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষ। যে জিতবে তার ঘরে যাবে বাহারী বাজার-সদাই। আর যে হারবে তার পরিবার পরের দিন উপোস। এ নিয়ে সংসারে লেগে আছে নানা অশান্তি।
জাহিন নামের সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্র জানায়, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা বাজলে জুয়া খেলা দেখতে চলে যায় পাড়ার চায়ের দোকানে। আইপিএল জুয়ার কথা তাকে জিজ্ঞেস করা মাত্রই সে বলে গতকাল জুুয়ার বাজিতে নাকি ২০৫ টাকা লাভ হয়েছে তার। জুয়া নামক কেন্সার যদি কমলমতি শিশুদের গ্রাস করে,তাহলে সুষ্ঠ সমাজের হাল ধরবে কে?
শুধু সদর এবং বেগমগঞ্জ উপজেলা নয়, এ জুয়া চলে জেলার বিভিন্ন উপজেলা জুড়ে। ফলে জুয়ায় হেরে অনেক পরিবারে কলহ সৃষ্টির মাধ্যমে বড় ধরণের দুঘর্টনাও ঘটছে।
বৃদ্ধা থেকে শুরু করে যুবক সমাজ জড়িয়ে পড়ছে এই আইপিএল জুয়া খেলায়। গত দুই বছর যাবৎ আইপিএল টি-২০ খেলা নিয়ে এ জুয়া খেলা শুরু হয়েছে। বর্তমানে জেলা জুড়ে এ জুয়া মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে।
সচেতন ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ জানিয়েছেন, প্রশাসন এ ব্যাপারে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহন না করলে সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের সৃষ্টি হবে।