খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ২৪ মে, ২০১৭: ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২৭১ রানের লক্ষ্যে করতে নেমে ৪৮.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ১০ বল হাতে রেখে জয় পায় ৫ উইকেটে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ৪৮.২ ওভারে ২৭১/৫।
অহেতুক শট খেলে ফিরলেন সাকিব: ১৭ রানের মধ্যে তামিম-সাব্বির-মোসাদ্দেকের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। পঞ্চম উইকেটে ৩৯ রানের জুটিতে মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু এরপরই হামিশ বেনেটের একটি বাউন্সারে অহেতুক পুল করতে গিয়ে লং লেগে স্যান্টনারকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাকিব (১৯)। তখনো ১১.৪ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ৭২ রান।
মোসাদ্দেকের বিদায়ে চাপে বাংলাদেশ: ৯ বলের মধ্যে ফিরে গেছেন তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমান। মোসাদ্দেক হোসেনও দ্রুতই ফিরে গেলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। জিতান প্যাটেলের বলে এলবিডব্লিউ হওয়া মোসাদ্দেক করেন ১০। ১ উইকেটে ১৪৩ থেকে দ্রুতই বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ১৬০।
ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট সাব্বির: বাঁহাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনারের বল অফ সাইডে ঠেলে সিঙ্গেল নিতে কল করেছিলেন সাব্বির রহমান। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে ছুটে যান মোসাদ্দেক। কিন্তু সাব্বির আবার ফেরেন তার প্রান্তের দিকেই। দুই ব্যাটসম্যানই তখন একপ্রান্তে! ফিল্ডারের থ্রো থেকে বল ধরে স্টাম্প ভেঙে দেন স্যান্টনার। মোসাদ্দেক হাঁটা দিয়েছিলেন সাজঘরের দিকে। তবে টিভি রিপ্লে দেখে থার্ড আম্পায়ার জানালেন, মোসাদ্দেক নয়, রানআউট সাব্বির। সাব্বিরের আগেই ক্রিজে পৌঁছে গিয়েছিলেন মোসাদ্দেক। ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হওয়া সাব্বির ৮৩ বলে ৯টি চারে করেন ৬৫।
শক্ত ভিত গড়ে তামিমের বিদায়: শুরুতেই সৌম্য সরকারকে হারিয়ে ধাক্কা খেলেছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় উইকেটে সাব্বির রহমানের সঙ্গে ১৩৬ রানের বড় জুটিতে দলকে শক্ত ভিত গড়ে দিয়ে ফেরেন তামিম ইকবাল। মিচেল স্যান্টনারের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং অনে বেনেটের ক্যাচ হওয়ার আগে ৮০ বলে ৬ চার ও এক ছক্কায় ৬৫ করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
স্বরূপে সাব্বির: প্রথম দুই ম্যাচ মিলে করেছিলেন মাত্র ১ রান। তৃতীয় ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৫ রান করে রানে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাব্বির রহমান। ডানহাতি ব্যাটসম্যান আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে স্বরূপে ফিরলেন, তুলে নিলেন দারুণ এক ফিফটি। জিতান প্যাটেলকে চার হাঁকিয়ে ৬৫ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন সাব্বির।
তামিম-সাব্বির জুটির সেঞ্চুরি: শুরুতে সৌম্য সরকারের উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমান। ২০তম ওভারের শেষ বলে সাব্বির ২ রান নিলে পূর্ণ হয় তাদের দ্বিতীয় উইকেট জুটির শতরান। তখন তামিম ৫৪ ও সাব্বির ৪২ রানে ব্যাট করছিলেন।
তামিমের অর্ধশতকে বাংলাদেশের শতক: ১৯তম ওভারে জিমি নিশামের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন তামিম ইকবাল। এই রানেই বাংলাদেশও পূর্ণ করে দলীয় শতরান। ৫৫ বলে ফিফটি করতে ৫টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান তামিম।
১৫ ওভার শেষে: শুরুতেই সৌম্য সরকারের উইকেট হারানো বাংলাদেশ ১৫ ওভারে ১ উইকেটে ৭৬ রান তুলেছে। তামিম ইকবাল ৩৭ ও সাব্বির রহমান ৩৪ রান নিয়ে ব্যাট করছিলেন তখন।
প্রথম ওভারেই সাজঘরে সৌম্য: ইনিংসের প্রথম বলেই জিতান প্যাটেলকে ছক্কা হাঁকিয়ে দুর্দান্ত সূচনা করে তামিম ইকবাল। কিন্তু তৃতীয় বলে স্ট্রাইকে এসে উইকেট বিলিয়ে দিলেন সৌম্য সরকার। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে কোরি অ্যান্ডারসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য।
বাংলাদেশের লক্ষ্য ২৭১: শেষ দিকে দারুণ বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডকে ২৭০ রানে বেঁধে ফেলেছে বাংলাদেশ। ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে এই রান তোলে কিউইরা। সর্বোচ্চ ৮৪ রান টম ল্যাথামের। নেইল ব্রুম ৬৩ ও রস টেলর অপরাজিত ৬০ রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে সাকিব আল হাসান, নাসির হোসেন ও মাশরাফি বিন মুর্তজা নেন ২টি করে উইকেট। একটি করে উইকেট মুস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেনের।
রুবেলের প্রথম: দারুণ এক ডেলিভারিতে ম্যাট হেনরিকে ফিরিয়ে ইনিংসে নিজের প্রথম উইকেট নিয়েছেন রুবেল হোসেন। হেনরি করেন ৫, নিউজিল্যান্ডের স্কোর তখন ৮ উইকেটে ২৫৮।
মাশরাফির জোড়া আঘাত: নিজের টানা দুই ওভারে দুই উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। আগের ওভারে জিমি নিশামকে ফেরানোর পর অধিনায়ক পরের ওভারে ফিরিয়েছেন কলিন মানরোকে (১)। মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন কিউই ব্যাটসম্যান। ৪ উইকেটে ২২৪ থেকে দ্রুতই নিউজিল্যান্ডের স্কোর তখন ৭ উইকেটে ২২৬!
সাকিবের দ্বিতীয় শিকার: সাকিব আল হাসানের কুইকার ডেলিভারি ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন মিচেল স্যান্টনার। তবে বল তার ব্যাট ফাঁকি দিয়ে আঘাত হানে স্টাম্পে। স্যান্টনার মেরেছেন ডাক। নিউজিল্যান্ডের স্কোর তখন ৬ উইকেটে ২২৫।
নিশামকে ফেরালেন মাশরাফি: মাশরাফির বিন মুর্তজার বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে মাহমুদউল্লাহকে ক্যাচ দিয়েছেন জিমি নিশাম (৬)। ইনিংসে এটি মাশরাফির প্রথম উইকেট। নিউজিলানের স্কোর তখন ৫ উইকেটে ২২৪।
অ্যান্ডারসনকে ফেরালেন সাকিব: ঝড় তোলার আগেই কোরি অ্যান্ডারসনকে ফিরিয়েছেন সাকিব আল হাসান। উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্কয়ার লেগে মাহমুদউল্লাহকে ক্যাচ দেওয়া অ্যান্ডারসন ৩২ বলে করেছেন ২৪। নিউজিল্যান্ডের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ২০৮।
নাসিরের জোড়া আঘাত: নিজের আগের ওভারের প্রথম বলে নেইল ব্রুমকে ফিরিয়ে ১৩৩ রানের জুটি ভেঙেছিলেন নাসির হোসেন। পরের ওভারে এসে বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ানো টম ল্যাথামকেও ফেরান অফ স্পিন অলরাউন্ডার। অবশ্য শূন্য রানে এই ল্যাথামেরই সহজ ক্যাচ ছেড়েছিলেন নাসির। তাকে ফিরিয়ে তাই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করলেন তিনি। বল ল্যাথামের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে পায়ে লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে, ফেলে দেয় বেল। ৯২ বলে ১১ চারে ল্যাথাম করেন ৮৪। নিউজিল্যান্ডের স্কোর তখন ৩ উইকেটে ১৬৭।
স্বস্তি ফেরালেন নাসির: শতরানের জুটিতে বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছিলেন টম ল্যাথাম ও নেইল ব্রুম। অবশেষে ব্রুমকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফেরান নাসির হোসেন। অফ স্পিনারের বলে সুইপ করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে মাশরাফির তালুবন্দি হয়েছেন ব্রুম (৬৩)। তার বিদায়ে ভাঙে ১৩৩ রানের বড় জুটি। নিউজিল্যান্ডের স্কোর তখন ২ উইকেটে ১৫৬।
২৫ ওভার শেষে: ইনিংসের প্রথম ২৫ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ১ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান। টম ল্যাথাম ৭০ ও নেইল ব্রুম ৫৩ রানে ব্যাট করছিলেন তখন।
ব্রুমের ফিফটি: টম ল্যাথামের পর ফিফটি করেছেন নেইল ব্রুমও। ডানহাতি ব্যাটসম্যান মাশরাফির বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৬৩ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন। এটি তার ক্যারিয়ারের পঞ্চম ওয়ানডে ফিফটি।
নিউজিল্যান্ডের একশ পার: ১৮ ওভার দুই বলে ১ উইকেট হারিয়ে দলীয় শতরান পেরিয়েছে নিউজিল্যান্ড। তখন টম ল্যাথাম ৬০ ও নেইল ব্রুম ৩৩ রানে ব্যাট করছিলেন।
‘জীবন পাওয়া’ ল্যাথামের ফিফটি: ফিরতে পারতেন শূন্য রানেই। কিন্তু সহজ ক্যাচ ফেলে টম ল্যাথামকে জীবন দেন নাসির হোসেন। শূন্য রানে জীবন পাওয়া সেই ল্যাথামই তুলে নেন ফিফটি। মোসাদ্দেকের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৫১ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন কিউই ওপেনার।
প্রথম আঘাত মুস্তাফিজের: মুস্তাফিজুর রহমানের গুড লেংথ বল একটু উঠিয়ে ডাইভ করতে চেয়েছিলেন লুক রনকি। তবে বল উঠে যায় আকাশে। এক্সট্রা কভারে সহজ ক্যাচ নেন সাকিব আল হাসান। মুস্তাফিজের হাত ধরে প্রথম সাফল্য পায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের স্কোর তখন ১ উইকেটে ২৩।
ক্যাচ ছাড়লেন নাসির: ইনিংসের তৃতীয় বলেই উইকেট পেতে পারতেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। কিন্তু স্কয়ার লেগে টম ল্যাথামের সহজ ক্যাচ ছাড়েন দলে ফেরা নাসির হোসেন।
ফিরলেন নাসির: বাংলাদেশ দলে একটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। শেষ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষিক্ত হওয়া সানজামুল ইসলামের পরিবর্তে সুযোগ পেয়েছেন নাসির হোসেন। ২০১৬ সালের ১২ অক্টোবর শেষ আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন নাসির।
টস: বুধবার ডাবলিনের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব মাঠে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
‘প্রথম’ জয়ের খোঁজে বাংলাদেশ: দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে একাধিকবার হারালেও বিদেশের মাটিতে কিউই বধ করতে পারেনি বাংলাদেশ। আজ ইতিহাস গড়তে পারে কি না, সেটাই দেখার।
চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড, রানার্সআপ বাংলাদেশ: প্রথম তিন ম্যাচে জয় তুলে নেওয়ায় ওয়ালটন ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ডকে হারানোয় রানার্সআপ হয়েছে। নিয়ম রক্ষার ম্যাচে আজ মুখোমুখি বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে যাওয়ার আগে দুই দলই জিতে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে চাইবে।