খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০১৭: বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় ওই হোটেলে সাফাতের অবস্থান সংক্রান্ত হোটেলের মানি রিসিট (বিল) জব্দ করেছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থা ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অপরদিকে, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার নাঈম আশরাফ ওরফে আব্দুল হালিম ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে রাজী হয়েছেন।
বুধবার মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবির পদস্থ কর্মকর্তারা এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তার কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটির ডাকে বৃহস্পতিবার কমিশন কার্যালয়ে দ্য রেইন ট্রি হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঝালকাঠির রাজাপুর আসনের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের পুত্র আদনান হারুন, হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার ফ্রাংক ফরগেট, ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মোশতাক আহমেদ, বনানী থানার ওসি ফরমান আলী ও পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মতিন হাজির হওয়ার কথা রয়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. রিয়াজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত কমিটি তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে। কিভাবে মানবাধিকার লংঘিত হয়েছে এ বিষয়টি খুঁজে বের করবে তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির ফাইন্ডিংসগুলো নিয়ে কমিশনের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হবে। পরবর্তীতে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হবে।
ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলাটির তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আয়েশা সিদ্দিকা মিলি জানান, এরইমধ্যে মূল অভিযুক্তসহ তিন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তদন্ত অনেকটাই গুছিয়ে এনেছেন। অন্যতম অভিযুক্ত নাঈম আশরাফ জিজ্ঞাসাবাদে এক তরুণীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি মামলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তার দেওয়া তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। তাকে আজকালের মধ্যেই আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তির আবেদন করা হবে।
সাফাতের মানি রিসিট:
দ্য রেইনট্রি হোটেলের ৭০০ নম্বর কক্ষের ভাড়া বাবদ সাফাতের নামে মানি রিসিটে ২৮ মার্চ বিকাল ৪টা থেকে ২৯ মার্চ সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৮ ঘণ্টায় ৫৯ হাজার ৫শ ৭১ টাকা খরচ করার তথ্য পাওয়া গেছে। সাফাত আহমেদের নামে ওই দিন হোটেল থেকে যে মানি রিসিট তৈরি করা হয়েছিল তার কপিতে দেখা যায়, সাফাত ঘটনার দিন বিকাল ৪টা ০৮ মিনিটে হোটেলের ৭০১ নম্বর কক্ষটি ভাড়া নেয়। পরে হোটেলে অবস্থানকালে কোনও এক সময় তিনি ৭০১ নম্বর কক্ষটি বদল করে ৭০০ নম্বর কক্ষে চলে যায়।
পরের দিন সকাল ১০টার পর হোটেল ছেড়ে যাওয়ার সময় তার নামে যে মানি রিসিটটি তৈরি করা হয়, সেখানে তারা কি সার্ভিস নিয়েছিল তার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া গেছে। যদিও এর বাইরে ‘কমপ্লিমেন্টারি’ হিসেবে নানা কিছু তাদের ‘প্রোভাইড’ করা হয়েছিল বলে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশের পর থেকে হোটেল কর্তৃপক্ষ বারবারই বলার চেষ্টা করছে।