খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০১৭: উন্নয়ন প্রকল্পের সময় বাড়িয়ে খরচ বাড়ানোর মাধ্যমে জনগণের করের টাকা অপচয় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ব্যাংক ও পুঁজিবাজার দুর্নীতির কারণেও জনগণের টাকার অপচয় হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক বাজেট আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। আলোচনা সভায় বক্তারা ‘জাতীয় বাজেট, জন-অংশগ্রহণ ও বিকেন্দ্রীকরণ’ বিষয়ে আলোচনা করেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে আমরা জেলা বাজেটের তাগিদ দিচ্ছি। অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে প্রতিশ্র“তিও দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তা ভুলে গেছেন। ফলে জনগণের চাওয়ার প্রতিফলন ছাড়াই নির্ধারিত হচ্ছে দেশের উন্নয়নসহ অন্য সব কর্মকা-ের বাজেট। এক পাক্ষিক এই বাজেট জনগণের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করছে।’
দেবপ্রিয় বলেন, জনসম্পৃক্ততার জন্য বাজেটকে জনগণের সামনে আনতে হবে। অনেক এলাকার জনপ্রতিনিধিরা রাষ্ট্রের বাজেট ঘোষণার বিষয়ে কিছুই জানতে পারেন না। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের বাজেট সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। তাঁদের ক্ষেত্রে বাজেটের স্বচ্ছতা থাকতে হবে।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বাজেটের ক্ষেত্রে সবচেয়ে পেছনের মানুষটির সাফল্য দিয়ে সম্ভাব্য দেশের সাফল্য নিশ্চিত করতে হবে। গড় আয়, গড় প্রবৃদ্ধি, গড় মাতৃহার এসব দিয়ে কোনো উন্নতি হবে না।
অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের গবেষণা সম্পাদক মানোয়ার মোস্তফা বলেন, বাজেট যেখানে প্রস্তুত করা হয়, সেখানে দেশের প্রান্তিক জনগণের অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই। তাঁরা বাজেটের বিষয়ে জানতে পারেন না। এ জন্য সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে বাজেটের কাঠামো পৌঁছে দিতে হবে। এর জন্য তৈরি করতে হবে স্থানীয় বাজেট কমিশন।
শিক্ষা ও গবেষণা খাতে আলাদা আলাদা বাজেট দেওয়া উচিত বলে মনে করেন ঢাবির সেন্টার ফর বাজেট অ্যান্ড পলিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ। তিনি বলেন, গত বছরের শিক্ষার বাজেট ছিল অতি সামান্য। আবার এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল প্রযুক্তি। তাই অন্যান্য দেশের মতো শিক্ষা খাতে বাজেটের পরিমাণ বাড়ানো জরুরি।
একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং বাড়ানোর জন্য গবেষণার খাতে বাজেট বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন ইউসুফ।
এ সময় আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ তথ্য কমিশনের প্রাক্তন তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ ও গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সভাপ্রধান ড. প্রতিমা পাল মজুমদার।