খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০১৭: মধুমাসে চলনবিলে লিচুর দাম আকাশ ছোঁয়ায় ওঠেছে । আর বাম্পার ফলন হওয়ায় প্রতিদিন গড়ে এই অঞ্চলে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার লিচু কেনা-বেচা হচ্ছে। এতে করে এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে চাঙ্গা ভাব দেখা দিয়েছে। তাছাড়া অনেকেই আবার বাড়ির আঙিনায় লিচু বাগান করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। আর প্রতিদিন রাজধানী ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে লিচু রপ্তানি করা হচ্ছে। এবার চলনবিলাঞ্চলে মোজাফ্ফর পুলি, চায়না থ্রি ও বোম্বে জাতের লিচুর চাষ হয়েছে। অন্যদিকে স¤প্রতি কয়েক দফা ঝড় এবং বৃষ্টিপাত হওয়ায় গাছেই লিচু পচন ধরেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, লিচু নিয়ে চলনবিলের কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাড়ির আঙিনা থেকে ঘর পর্যন্ত লিচু আর লিচু। তাছাড়া লিচু গাছ থেকে পেরে তা বাজারজাত করার জন্য মহিলাসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ এতে জড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ আবার দিন মজুর হিসাবেও কাজ করছেন। আর লিচু নিয়ে গড়ে ওঠেছে বিভিন্ন স্থানে পাইকারী ও খুচরা হাট-বাজার। তবে লিচু চাষীদের অভিযোগ কৃষি বিভাগ তাদের তেমন কোনো সহযোগিতা করেনি। যে টুকু উৎপাদন হয়েছে তা কৃষকদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে।
স্থানীয়রা জানায়, নাটোর জেলার মধ্যে গুরুদাসপুরের নাজিরপুর এবং সিংড়া উপজেলার চামারী, মহিষমারী, চককালিকাপুর, চকবলরামপুর, পাঙ্গাশিয়া, সোনাপুর, বাহাদুরপুর, হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নের আচলকোট, গুনাইখারা, শালিকা ও হাসিকাটিসহ কয়েকটি গ্রামে এবার লিচু চাষ হয়েছে। আর এই লিচুগুলো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিন ট্রাক ভর্তি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে মৌসুমের জনপ্রিয় ফল হিসেবে দাম আকাশ ছোঁয়ায় ওঠেছে। চলনবিলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় ১শ’ লিচু ২শত থেকে আড়াই শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ক্রেতারাও মৌসুমের ফল হিসেবে হুমরি খেয়ে কিনছে।
চামারী মহিষমারী গ্রামের লিচু চাষী জোবায়ের হোসেন বলেন, আবহাওয়া খারাপ ও ঝড় বৃষ্টির কারণে লিচুর গায়ে স্পট পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চাষীরা। তিনি আরও বলেন, লিচু চাষ লাভ জনক হওয়ায় এই অঞ্চলের কৃষকরা অল্প জায়গায় বাগান করে সহজে লাখ প্রতি হতে পারছে। তাছাড়া এই অঞ্চলটি লিচু চাষের জন্য অনুকূল হলেও প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবে অনেকেই আবার ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ যদি লিচু চাষীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও সহযোগিতা করে তাহলে আগামীতে দ্বিগুন লিচু চাষ হবে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার প্রায় ১হাজার হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সিংড়ায় ১শ পচাত্তর হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাজ্জাদ জানান, উপজেলায় মোজাফ্ফর পুলি ও বোম্বে জাতের লিচুর চাষ হয়েছে। কৃষকদের সব রকম ফল চাষে উদ্বুদ্ধকরণ সহ বিভিন্ন সময় বালাইনাশক ঔষধ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।