Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ২৭ মে, ২০১৭: 5সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য সরানোর বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ঐক্যমত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও সরকার ভাস্কর্য সরিয়েছে কিংবা সুপ্রিম কোর্টের উপর ও প্রধান বিচারপতির উপর সরাসরি চাপ তৈরি না করেও বিভিন্নভাবে কথা বলে যে চাপ তৈরি করা হয়েছে, এটা প্রমাণ হোক তা চায় না। এই কারণে তারা বিষয়টি সবাইকে বোঝাতে চাইছে এটি প্রধান বিচারপতি করিয়েছেন। সরানোর বিষয়ে তিনি ও সুপ্রিম কোর্টই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেখানে যা কিছু হয়েছে সব কিছুই প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্ট করেছেন। এখানে সরকারের কোন দায় ও দায়িত্ব নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার এটা কৌশল হিসাবেই করছে কারণ, সরকার যে ওই ভাস্কর্য ওখানে রাখার পক্ষে ছিল না এটা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট ছিল। কিন্তু সেটা তারা চাইলেও বিষয়টি যাতে জনগণের কাছে প্রকাশিত না হয় সেটা চেয়েছে। এই কারণে বার বার বলেছে এটা সুপ্রিম কোর্টের ও প্রধান বিচারপতির বিষয়। কিন্তু এই ভাস্কর্য সরানোর পরও আওয়ামী লীগ ও সরকার কোন কৃতিত্ব নিতে পারছে না। কারণ সরকার যে অসাম্প্রদায়িক বলে নিজেদের দাবি করে ওই ভাস্কর্য সরানোর কারণে সেটা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কাছে মনে হতে পারে। এছাড়া তাদের একটি শ্রেনী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে পারে।
সূত্র জানায়, হেফাজত ও আলেমদের দাবির মুখে ও আন্দোলন কর্মসুচী দেওয়ার হুমকির মুখে সরকার এটা অপসারণ করতে কাজ করেছে এটা প্রমাণ হলে সরকারের জন্য সমস্যা তৈরি হবে। তখন হেফাজত ও আলেমরা অন্যান্য ভাস্কর্য সরানোর জন্য দাবি করবে। এই জন্য সরকার এই কৃতিত্ব নিতে চায় না। যদিও ইতোমধ্যে হেফাজত দাবি করেছে দেশের যেসব উন্মুক্ত স্থানে ভাস্কর্য রয়েছে সেগুলো সরানো হোক।
এদিকে সরকার এটাও মনে করছে ওই কৃতিত্ব নিতে গেলে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর মানুষ সরকারের উপর ক্ষুব্ধ হতে পারে। প্রতিবাদে আন্দোলন হতে পারে। এই কারণে সরকার তা এড়াতেই সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভাস্কর্যটি সরিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। একই কথা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদও বলেছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণের ক্ষমতা সরকারের কোনো এখতিয়ারে নেই। ভাস্কর্য সরানো সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত।
এদিকে এই ভাস্কর্য সরানো কিংবা রাখা কোনটির পক্ষেই বিএনপি অবস্থান নেয়নি। অনেকটা নীরব থেকেছে। সরানোর পর দলের তরফ থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মুখ খুলেছেন। তিনি বলেছেন, মাননীয় প্রধান বিচারপতি তিনি এই ভাস্কর্য অপসারণের সিদ্ধান্ত নিজে নিয়েছেন। তিনি সরকারের নির্দেশে এটা করেন নাই। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন আমাকে বলেছে সমস্ত সিনিয়র আইনজীবী, সকলের সঙ্গে প্রধান বিচারপতি পরামর্শ করেছেন। কী করা যায় সেই বিষয়ে? তারা পরামর্শ দিয়েছেন এই ভাস্কর্যটি সরিয়ে নিলে ভালো হয়। তিনি বলেছেন, ভাস্কর্য সরানো নিয়ে কত রকমের কথা-বার্তা হয়েছে। বিতর্ক তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বিএনপি এই কথা বলে বরং উল্টো এটা প্রমাণ করেছে যে সরকার প্রধান বিচারপতির উপর কোনো ধরণের চাপ তৈরি করেনি ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে কি থাকবে কী থাকবে না এবং কী হবে এই ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট ও প্রধান বিচারপতি ছাড়া যে সরকার কোন কথা বলতে পারবে না।