খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০১৭: দেশি গরুর মাংসের নির্ধারিত দাম প্রতি কেজি ৪৭৫ টাকা। কেনার পর বিক্রেতা আরো পাঁচ টাকা দাবি করলেন। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে পাঁচ টাকা বেশি দিতে হয়েছে ক্রেতাকে।
মাংস বিক্রেতাদের দাবি, সিটি করপোরেশনের বেঁধে দেওয়া দামে লাভ কম হয়। তাই ‘পাঁচ টাকা চেয়ে’ নিচ্ছেন তাঁরা।
গতকাল সোমবার রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে মাংসের দোকানে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ফকিরেরপুল, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা এবং মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, নির্ধারিত দামের চেয়ে পাঁচ থেকে দশ টাকা বেশি রাখছেন বিক্রেতারা। কিছু মাংসের দোকানে মূল্য তালিকা টানানো থাকলেও অধিকাংশ দোকানেই তালিকা পাওয়া যায়নি।
মাংসের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি করে কোনো লাভ থাকে না।
কারওয়ান বাজারের মাংস বিক্রেতা আবুল কাশেম বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত মূল্যে লাভ কম হয়। আর সে জন্য কাস্টমারের কাছ থেকে প্রতি কেজিতে পাঁচ টাকা করে চেয়ে নিই।’
শান্তিনগর কাঁচাবাজারের মাংস বিক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সিটি করপোরেশন দাম নির্ধারণের সময় বলেছিল গাবতলীতে চাঁদাবাজি বন্ধ হবে। আর চাঁদাবাজি বন্ধ হলে গরুর দাম কমার কথা। আমরা মাংসের দাম কমালেও গরুর দাম কমেনি।’
পাঁচ টাকা বাড়তি নেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মাংস বিক্রেতা সমিতির সভাপতি গোলাম মোর্তুজা মন্টু এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘পাঁচ টাকা কোনো বিষয় নয়। ৪৭৫ টাকার জায়গায় ৫০০ টাকা নিয়েছে কি না সেটা জানার বিষয়। সেই সঙ্গে কাস্টমারের সঙ্গে কোনো ব্যবসায়ী খারাপ ব্যবহার করেছে কি না। কেউ যদি এমন কোনো অভিযোগ দিতে পারে তাহলে আমরা সেই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
গোলাম মোর্তুজা বলেন, ‘আমাদের যেসব দাবি ছিল তার কোনো কিছুই আমরা পাইনি। আমাদের গাবতলীর কার্যালয় এখনো তালাবন্ধ। আমরা কাস্টমারদের কম দামে মাংস দিচ্ছি। কিন্তু আমাদের আগের দামেই গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া কিনতে হচ্ছে।’
এদিকে বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে, নির্দেশনা সত্ত্বেও দোকানে মূল্যতালিকা না থাকায় দুই মাংস বিক্রেতাকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ডিএনসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজারে অভিযান চালান।
ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
গত ২৩ মে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে আলোচনা করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। আলোচনার পর রমজান মাসের জন্য মাংসের দাম নির্ধারণ করা হয়। প্রতি কেজি দেশি গরুর মাংস ৪৭৫, ভারতীয় গরুর মাংস ৪৪০, মহিষের মাংস ৪৪০, খাসির মাংস ৭২৫, ভেড়া ও ছাগলের মাংস ৬২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।