খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০১৭: উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল থেকে সংসদের হাতে প্রদান করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে অ্যামিকাস কিউরিদের মতামতের ওপর শুনানি শেষে মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগ।
দশম দিনের শুনানি শেষে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৭ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
দিনের শুরুতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে আদালতে নিজের মতামতের ওপর শুনানি করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। এরপর সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মাদ আলী, আইনজীবী ফিদা এম কামাল তাদের মতামত তুলে ধরেন। পাশাপাশি আদালতের অনুমতি নিয়ে নিজের বক্তব্য পেশ করেন সাবেক আইনমন্ত্রী মতিন খসরু।
এর আগে ২৫ মে দিনের শুরুতে আদালতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিজেদের মতামতের ওপর শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। এরপর নিজ মতামত তুলে ধরে শুনানি করেন আইনজীবী তোফাজ্জল হোসেন (টিএইচ) খান ও ব্যারিস্টার এম আমির-উল ইসলাম, ড. কামাল হোসেন, আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া এবং এএফ হাসান আরিফ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম লিখিত যুক্তিতর্কের ওপর আদালতে শুনানি করেন ২৪ মে। এরপর মামলার রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ তার বক্তব্যের ওপর শুনানি করেন।
এর আগে ৮ মে পেপার বুক থেকে রায় পড়ার মাধ্যমে এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। এরপর ৯ মে দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি হয়। এ দুদিন রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা হাইকোর্টের রায়ের ওপর আদালতে শুনানি করেন।
এরপর ওইদিনই আদালতে চারজন অ্যামিকাস কিউরি তাদের লিখিত মতামত জমা দেন। এ চারজন হলেন- সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম, এম আই ফারুকী ও আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া। সেদিনই আদাল ২১ মে শুনানির পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেছিলেন।
এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় আপিল শুনানিতে সহায়তার জন্য ১২ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেন আপিল বিভাগ।
অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ১২ আইনজীবী হচ্ছেন- বিচারপতি টিএইচ খান, ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল, ব্যারিস্টার আজমালুল কিউসি, আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, এম আই ফারুকী।
বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা পুনরায় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করা হয়। এরপর তা ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর গেজেট আকারে প্রকাশ পায়। এ অবস্থায় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ৯ জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
এ আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ওই সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর শুনানি শেষে গত ৫ মে আদালত সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের মতামতের ভিত্তিতে ১৬তম সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেন। তিন বিচারকের মধ্যে একজন রিট আবেদনটি খারিজ করেন।
এর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠদের রায় প্রকাশিত হয় গত ১১ আগস্ট এবং রিট খারিজ করে দেওয়া বিচারকের রায় প্রকাশিত হয় ৮ সেপ্টেম্বর। দুটি মিলে মোট ২৯০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে।