Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ৩১ মে, ২০১৭:  40মোর্শেদ আলম (২৬)। ভালোবেসে পালিয়ে বিয়ে করেছেন কিশোরীকে (১৭)। কিন্তু মেয়ের বাবা বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। তাই উত্তরা পশ্চিম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৩০ ধারায় মোর্শেদের বাবা তৈময়ুদ্দিন, ভাই মালেক ও বন্ধুদের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন। সে মামলায় মোর্শেদ ও তাঁর স্ত্রী ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার হন।

গ্রেপ্তারের পর মোর্শেদ ও তাঁর স্ত্রীকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করা হলে আদালত মোর্শেদকে কারাগারে পাঠিয়ে তাঁর স্ত্রীকে বাবা-মায়ের জিম্মায় দেন।

অপরদিকে, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২২ ধারায় মোর্শেদের নাবালিকা স্ত্রী আদালতে জবানবন্দি দেয়। সে জবানবন্দিতে বলে, মোর্শেদের সঙ্গে তার ভালোবাসায় সম্পর্ক ছিল। তারা গাজীপুর আদালতে বিয়ে করেছে। সে স্বেচ্ছায় মোর্শেদের সঙ্গে গিয়ে বিয়ে করেছে।

পরবর্তীতে ঢাকার মহানগর হাকিম এ কে এম মঈন উদ্দিন সিদ্দিকী মোর্শেদকে গ্রেপ্তারের ১২ দিন পর জামিন দেন। সে মামলায় মোর্শেদ জামিন পাওয়ার পর কিশোরী স্বামী মোর্শেদের বাড়িতে আবার চলে আসে।

এর মধ্যেই মোর্শেদের বিরুদ্ধে পুলিশ ঘটনার সত্যতা আছে বলে অভিযোগপত্র দেয়। কিন্তু সে অভিযোগপত্রে মোর্শেদের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণের নতুন অভিযোগ আনে পুলিশ।

অপরদিকে, এ মামলায় মোর্শেদের বাবা, ভাইসহ অন্য আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। সে অভিযোগপত্র আসার পর গত রোববার মোর্শেদ ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শফিউল আজমের আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক মোর্শেদকে আবার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং মোর্শেদের বাবা, ভাইসহ অপর আসামিদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেন।

এ বিষয়ে মোর্শেদের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ দম্পতি বাবা-মায়ের অমতে পালিয়ে গাজীপুর আদালতে বিয়ে করেছেন। কিন্তু মেয়েটি নাবালিকা বিধায় তাকে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে পুলিশ। যদিও মেয়েটি জবানবন্দিতে মোর্শেদ তাকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগে আনেনি। তিনি বলেন, ওই কিশোরী আদালতে ২২ ধারার জবানবন্দিতে বলেছে, তারা নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেছে। এতে কেউ কোনো জোর করেনি এবং তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ছিল।

আইনজীবী বলেন, আদালতে এসব কথা বলার পরেও আদালত কোনো কথা আমলে নেননি। মোর্শেদের জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে মোর্শেদের ভাই মোহাম্মদ মালেক জানান, তাঁর ভাই কারাগারে যাওয়ার পর মেয়েটি অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। বাবার অমতে বিয়ে করে তার স্বামী দুবার কারাগারে গেছে। এ ছাড়া তার কোনো কথাই আদালত আমলে নিচ্ছেন না। সে এ আইনের কাছে হেরে গেছে।

এ বিষয়ে ফৌজদারি আইনজীবী মোহাম্মদ মুনজুর আলম জানান, বর্তমান সমাজে পালিয়ে বিয়ে করাটা অহরহ ঘটছে। সে ক্ষেত্রে মেয়ে যদি নাবালিকা হয় বা বয়স ১৮ বছরের নিচে হয়, তার কোনো বক্তব্য আদালত গ্রহণ করেন না।

মুনজুর আলম জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নাবালিকা মেয়ে যদি নিজের ইচ্ছায় শারীরিক সম্পর্ক করে তাও ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ ধরনের মামলাগুলোতে স্বামী সব সময় জেল খাটেন। বাদীর সঙ্গে আপস করাই এ মামলা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ।