Wed. Apr 23rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

22kখােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০১৭: এনডিএ সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ২০ দিনের উৎসবের ১৫দিন বাকি থাকতেই বড় ধাক্কা খেলো বিজেপি ও শরিক দলগুলি। এনডিএ’র সাফল্যের সবথেকে বড় ফানুসটা চুপসে গিয়েছে প্রকাশিত সরকারি তথ্যে। সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তির সাফল্যের তালিকায় প্রথমেই ছিলো অর্থনৈতিক বিকাশ বা বৃদ্ধির কথা। বুধবার সরকারি পরিসংখ্যানের এক ধাক্কায় বিশ্বের দ্রুততম আর্থিক বৃদ্ধির দেশের তকমা হারাল ভারত।জানুয়ারি থেকে মার্চের হিসেবে দেশের জাতীয় আয় বা জিডিপি বাড়ল ৬.১% হারে, যা গত দু’বছরের বেশি সময়ে সব চেয়ে কম। যে দেশটিকে হারিয়ে দুনিয়া জুড়ে আর্থিক বৃদ্ধিতে প্রথম স্থান দখল করেছিল ভারত, সেই চিনের অর্থনীতি এই একই সময়ে এগিয়েছে ৬.৯% হারে। ২০১৫ সালে প্রথম বৃদ্ধির হারে চিনকে পিছনে ফেলে এই শিরোপা পায় ভারত। বুধবার প্রকাশিত সরকারি হিসেবে নভেম্বরে নরেন্দ্র মোদী সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তেরই ছাপ পড়েছে বলে ইঙ্গিত বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, গত ৮ নভেম্বর ৮৭% নোট বাতিলের জেরে চাহিদায় কোপ পড়ার প্রভাবই ধরা পড়েছে ঠিক পরের ত্রৈমাসিকের বৃদ্ধির উপর।গোটা ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষ ধরলে বৃদ্ধি ৭.১%, তবে তা-ও ছুঁয়েছে গত তিন বছরের তলানি। গত বছরের হার ৮%। কিছুটা মুখরক্ষা করেছে কৃষি। গত বছরে ভাল বর্ষার হাত ধরে ফলন বছরে বেড়েছে ৪.৯% হারে, জানুয়ারি-মার্চে ৫.২%। বিভিন্ন খাতে সরকারি খরচ বাড়ায় আরও বেশি নামতে পারেনি বৃদ্ধি, ধারণা অর্থনীতিবিদদের। কেন্দ্র ভিত্তিবর্ষ ২০০৪-’০৫ থেকে সরিয়ে এনে ২০১১-’১২ ধরাতে তুলনায় বৃদ্ধি কিছুটা বেড়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এ দিনই প্রকাশিত আর একটি পরিসংখ্যানও অর্থনীতির পক্ষে ভাল লক্ষণ নয় বলে তাঁদের ধারণা। এপ্রিলে পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন বেড়েছে ২.৫%। ২০১৬-র এপ্রিলে যা ছিল ৮.৭%। কয়লা, অশোধিত তেল ও সিমেন্ট উৎপাদন কমায় ঢিমেতালে এগিয়েছে পরিকাঠামো শিল্প।মোদী সরকারের তিন বছর পূর্তির মাথায় এই অশনি সঙ্কেত তাদের পক্ষে অস্বস্তিকর বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ টিসিএ অনন্ত কার্যত স্বীকার করে নেন যে, নোট বাতিলের প্রভাব এমন ভাবে অর্থনীতির মোড় ঘোরাতে পারে, যাতে বৃদ্ধি নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন অবশ্য বলেন, ‘‘এটি ‘সাময়িক ধাক্কা’। নোটের জোগান বাড়লে তার প্রভাব কেটে যাবে।’’এ যাত্রায় অবশ্য মার্চ ত্রৈমাসিকে কল-কারখানায় উৎপাদন, পরিষেবা সব ক্ষেত্রেই কমেছে বৃদ্ধি। উৎপাদন শিল্পে বৃদ্ধি ৫.৩%, যেখানে অক্টোবর-ডিসেম্বরে তা ছিল ৮.২%। পরিষেবা ক্ষেত্রে তা দাঁড়িয়েছে ৬.৫%, গত তিন মাসে ছিল ৮.৩%। তবে নির্মাণ শিল্পকে নোট বাতিলের খেসারত দিতে হয়েছে সব চেয়ে বেশি, যে অভিযোগ তারা আগেই করেছে। এই শিল্প সরাসরি সঙ্কুচিত হয়েছে ৩.৭%। আলো দেখিয়েছে কৃষিতে ৫.২% ফলন বাড়া। গত বছর তা ছিল ১.৫%। সব বৃদ্ধির হিসেবই পণ্য ও পরিষেবার মোট যুক্তমূল্য (গ্রস ভ্যালু অ্যাডেড বা জিভিএ) অনুসারে, যেখানে উৎপাদনের মোট মূল্য থেকে বাদ যায় কাঁচামাল, যন্ত্রাংশ ইত্যাদির খরচ। গত অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি অবশ্য বাজেটের হিসেবের সঙ্গে তাল রেখে দাঁড়িয়েছে ডিডিপি-র ৩.৫%, জানিয়েছে কন্ট্রোলার জেনারেল অব অ্যাকাউন্টসের পরিসংখ্যান।এদিকে আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডিজ জানিয়েছে ,আগামী তিন-চার বছরে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে ৮শতাংশে পৌঁছাবে।