খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০১৭: ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে বাড়ছে বেশ কিছু পণ্যের দাম। পাশাপাশি কমছেও বেশ কিছু ভোগ্য পণ্যের দাম। নারীদের নিত্য প্রয়োজনীয় প্রাসাধনী সামগ্রীর দাম যেমন বাড়ছে; তেমনই বাড়ছে সিগারেট এবং ইলেকট্রনিক সিগারেটের দাম। এছাড়াও, প্রস্তাব করা হয়েছে ১৬শ’ সিসি’র বেশি মোটরগাড়ি, স্টেশন ওয়াগনসহ বেশি কিছু পণ্যের দাম বৃদ্ধির।
নতুন অর্থবছরে ফাস্ট ফুডের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্কের পাশাপাশি ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে, আগের মতো আর রেস্টুরেন্টে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দেওয়া হবে না তাহমিনা তানিশার! ফাস্ট ফুডের পাশাপাশি ফ্রাইড চিকেনও দারুণ পছন্দ তানিশার। সেখানেও বিপত্তি! কেননা পোল্ট্রি মুরগীর মাংসের দামও বৃদ্ধি পাবে এবারের বাজেটে। তাই, প্রস্তাবিত বাজেটে মন খারাপ তার। কারণ, ১০০ টাকার বিপরীতে এখন থেকে বাড়ছি ২৫ টাকা গুনতে হবে তাকে।
পাশাপাশি বাড়তি কর বসানো ফাস্টফুড আইটেম মেয়োনিজেও। এতে করে ফাস্ট ফুড বার্গারসহ রোল আইটেমে দাম আরেক দফা বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
দাম বাড়বে ১৬শ’ সিসি’র বেশি মোটরগাড়ি, স্টেশন ওয়াগনসহ অন্যান্য গাড়ির দাম। এর ফলে, বিলাসবহুল গাড়ি দাম আরও বাড়বে।
এর বাইরে বাড়ছে সোলার প্যানেল এবং প্যাকেটজাত পোল্ট্রি ফিডের দাম। এতে করে গ্রাম অঞ্চলের জীবন যাত্রায় ব্যয় আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দীর্ঘদিনে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে সমাধান হিসেবে এসেছিলো সোলার প্যানেল। যেখানে বিদ্যুতের ছ্োঁয়া পৌঁছায়নি, সেখানেও অন্ধকার দূর করেছিলো সোলার প্যানেল। প্রস্তাবিত বাজেটে ফলে দাম বাড়লে এ প্রক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়বে মনে করেছেন অনেকেই।
তবে এর থেকে বড় প্রভাব ফেলবে প্যাকেটজাত পোল্ট্রি ফিডের দাম বৃদ্ধি। কেননা, মাছ, গরুর মাংস, খাসির ম্ংাসের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধির পর মধ্যবিত্তের খাবার প্লেটে জায়গা করে নিয়েছিলো পোল্ট্রি মুরগীর মাংস। যেসকল সাধারণ মানুষ পোল্ট্রির ওপর নির্ভর করতো তাদের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে বিকল্প উৎসের খোঁজ করতে হবে।
প্রতিবারের মতো আবারও একদফা বাড়ছে সিগারেট এবং ইলেক্ট্রোনিক সিগারেটের দাম। এর প্রভাব পড়বে যেমন বাজারে ঠিক তেমনই জনস্বাস্থ্যে। ইসরাফিল হাসানে পেশায় একজন রিক্সাচালক। আগে গোল্ডলিফ সিগারেট সেবন করলেও দাম বৃদ্ধির পর এখন থেকে ডার্বি সিগারেট সেবনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ হিসেবে বলছেন: একটা সময় ২ টা থেকে শুরু করা গোল্ডলিফ সিগারেটের দাম এখন ঠেকেছে ৯ টাকায়। সিগারেটে আসক্তি চলে আসায় আবার ছাড়তেও পারছেন না! সংসার চালিয়ে এই অর্থের যোগান দেওয়া তারপক্ষে অনেকটাই অসম্ভব। তাই বাধ্য হয়েই ব্রান্ড চেঞ্জের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ৩ টাকায় এখন সমাধান!
কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন এতে মারাত্বক স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়তে যাচ্ছে একটি শ্রেনীর ধূমপায়ীরা। কেননা, নিম্নমানের সিগারেটে অধিক পরিমান নিকোটিন থাকে।
যে সব পণ্যের দাম বাড়ছে: সোলার প্যানেল, মেয়োনিজ, সয়াবিন মিল, প্যাকেটজাত পোল্ট্রি ফিড, মোবাইল ফোন, আমদানি করা বই, পাথর, মোডেম, গরম মসলা, প্রসাধন সামগ্রী, সাবান, ফাস্টফুড, বিড়ি ও সিগারেট, ১৬শ’ সিসি’র বেশি মোটরগাড়ি, স্টেশন ওয়াগনসহ অন্যান্য গাড়ি।