খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ৩ জুন, ২০১৭: পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে এক বাঙ্গালি যুবলীগ কর্মীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে লঙ্গদু উপজেলার একাধিক গ্রামে পাহাড়িদের ঘরবাড়ি, দোকানপাটে ভাঙ্গচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
শুক্রবার নিহত নুরুল ইসলাম নয়নের জানাজার পর বাঙ্গালিদের একটি মিছিল থেকে এ হামলা চালানো হয়। লঙ্গদু এলাকায় হামলার আশঙ্কায় অনেক পাহাড়ি তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। ঐ এলাকায় এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শুক্রবার রাত থেকে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। চলছে গ্রেফতার অভিযান। এখন পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।
সেখানকার সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে লঙ্গদুর এক স্থানীয় সাংবাদিক আরমান খান বলেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখনো সবার মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিভিন্ন ভাবে গুজবও ছড়ানো হচ্ছে যে- আবারও আক্রমণ করবে, আরও অনেক জায়গায় পুড়িয়ে দিচ্ছে।
পাহাড়িদের পালিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে আরমান বলেন, এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে প্রায় সব পাহাড়িই পালিয়ে গেছে। কয়েকজন নেতৃস্থানীয় পর্যায়ের লোকজন তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রয়েছেন। তবে এখন তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। আর যারা পরিবারসহ পালিয়ে গেছেন তারা এখন ফিরবেন কোথায়? তাদের ঘরবাড়িতো কিছুই নাই। এক্ষেত্রে তাদের ফিরে আসাটা বেশ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে ফিরে আসার জন্য।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রেফতার অভিযান প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, গত রাত ১২টা পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাতে বৈরী আবহাওয়ার কারণে পুলিশ তাদের অভিযান সেইভাবে চালাতে পারে নি। তবে ঐ এলাকার শান্তি ফেরাতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আরমান খান আরও বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য গতকালই রাঙ্গামাটি থেকে এডিসি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সকলেই আসছিলেন। বিকেল ৩টায় একটা জরুরী সভাও ডাকেন উপজেলা মিলনায়তনে। সেখানে জনসংহতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক বরিসংকর চাকমা এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মঙ্গলকান্তি চাকমাসহ অন্যান্য ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দ ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বাঙ্গালি সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দরাও ছিলেন। ঐ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়- যাদের বাড়িঘর আগুনে পুড়েছে তাদের তালিকা তৈরি করা হবে। যা গতকাল মিটিংয়ের পরই শুরু হয়ে গেছে। এবং আশ্বাস দেওয়া হয়েছে এমন ঘটনা আর ঘটবেনা। এ বিষয়ে সবাই সচেতন থাকবে। এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও তৎপর থাকবে সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে।