খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার , ৬জুন, ২০১৭: বিশ্বে বায়ু দূষণের ক্ষেত্রে চীন ও ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। বিভিন্ন ধরনের দূষণ আর দখলে হারিয়ে গেছে বহু নদী, চলছে অপরিকল্পিত নগরায়ন, পাহাড় কাটা, বন উজাড় করে ভূমি দখল। এসবের মধ্যেও “মানুষকে প্রকৃতির সাথে সংযুক্ত করা”র স্লোগান নিয়ে বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট এবং ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশনের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুষিত বায়ুর শহরের খাতায় ভারতের দিল্লির পরেই ঢাকার স্থান। শুধু বায়ুদূষণের কারণেই দেশে বছরে এক লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
১৯৯০ থেকে ২০১৫, গত এই ২৫ বছরে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ। বাতাসে থাকা মানবদেহের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর উপাদান পিএম ২.৫। শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে সহজে শরীরে প্রবেশ করে। ফলে বাড়ছে ক্যান্সার, হাঁপানিসহ হৃদরোগের ঝুঁকি। কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে চালানো পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে ঢাকার বায়ুতে এ উপাদানের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত বলেন, অন্যদিকে ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গার তীরজুড়ে গড়ে ওঠেছে একশর বেশি ডাইং ও ওয়াশিং কারখানা। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও সংরক্ষণ নিরাপত্তা বিধিমালায়, প্রতিটি কারখানায় বর্জ্য শোধনাগারের কথা বলা হলেও, মানছে না কেউ। পরিবেশ অধিদপ্তর তথ্যে, দিনে ৬০ হাজার কিউমেক অপরিশোধিত তরল বিষাক্ত বর্জ্য পড়ছে বুড়িগঙ্গায় পড়ছে। এমনই পরিস্থিতিতেই ধরীত্রি রক্ষার অঙ্গীকারে পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস।
পরিবেশ মন্ত্রী বলছেন, শিল্পোন্নত দেশগুলো পরিবেশ রক্ষার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক বিধি না মেনে সমস্যার বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে উন্নয়নশীল দেশের ওপর। সবশেষ ২০১৫ সালে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় করা প্যারিস চুক্তি থেকে সরে গেছে যুক্তরাষ্ট্র।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয় আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে- জমিতে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহারে গত শতাব্দীতে বিলুপ্ত কৃষি বৈচিত্র্যের প্রায় তিন চতুর্থাংশ প্রাণসম্পদ। পাখির সংখ্যা কমেছে এক পঞ্চমাংশ। এ অবস্থায় প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আলাদা বিভাগ খোলার দাবি সংশ্লিষ্টদের।