খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার , ৬জুন, ২০১৭: পূর্বাচলের লেক থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদের সঙ্গে তিন ধরনের ৬৬০টি র্যাংক ব্যাজও উদ্ধার করা হয়েছে। এই র্যাংক ব্যাজগুলো কারা ব্যবহার করে, সে বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ কোনো ধারণা দিতে পারেনি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, এগুলো ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সদস্যরা ব্যবহার করতেন।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, অস্ত্রগুলোও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীটিরই, যারা একসময় বাংলাদেশে বসে তাদের নিজের দেশে কর্মকা- চালাত। ওই গোষ্ঠীটির নেতা-কর্মীরা গোপনে এ দেশে অবস্থান করতেন। তবে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব বিচ্ছিন্নতাবাদীর ঘাঁটি উচ্ছেদ করে।
এদিকে পূর্বাচলে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও অনেককে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। মামলার ছয় আসামি হলেন শরীফ খান, শাহীন হোসেন ওরফে সানা, রাসেল, শান্ত, মুরাদ ও হৃদয়। তাঁদের মধ্যে প্রথম পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে গতকাল আদালতে পাঠালে আদালত আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আর হৃদয় কাতারে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের ভাষ্যমতে, এই ছয়জন ঘটনাচক্রে লুকিয়ে রাখা অস্ত্রের একাংশের সন্ধান পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কিছু না জানিয়ে নিজেদের কাছে সেগুলো রেখে দেন। পাঁচ আসামির হেফাজত থেকে আটটি অস্ত্র পাওয়া যায়। এর মধ্যে শরীফের বাসা থেকে একটি, শাহীন, শান্ত ও রাসেলের দেওয়া তথ্যমতে, পূর্বাচলের ব্লু সিটি আবাসন প্রকল্পের মাটি খুঁড়ে দুটি এবং সর্বশেষ মুরাদের দেওয়া তথ্যমতে, শনিবার বিকেলে বাসুদা এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে পাঁচটি এসএমজি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, কাতারে অবস্থানরত হৃদয় বেশ কিছুদিন আগে পূর্বাচলের ৫ নম্বর সেক্টরের ওই কৃত্রিম লেকে মাছ ধরতে গিয়ে একটি ব্যাগ পান। ওই ব্যাগে বেশ কয়েকটি এসএমজি ছিল। বিষয়টি তিনি শরীফকে জানান। এরপর শরীফ, শাহীন, রাসেল, শান্ত ও মুরাদ এসব অস্ত্র নিজেরা ভাগাভাগি করে নিয়ে বিক্রির চেষ্টা করতে থাকেন।
জেলার পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, যে অস্ত্রগুলো আসামিদের হেফাজতে ছিল এবং তাঁরা বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রেখেছিলেন, এসবের জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। তাঁদের পুরো অস্ত্রের চালানের জন্য অভিযুক্ত করা হয়নি।
র্যাংক ব্যাজ
পুলিশ জানিয়েছে, লেকে উদ্ধার করা অস্ত্র ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামের পর আরেকটি ব্যাগ থেকে তিন ধরনের ৬৬০টি র্যাংক ব্যাজ পাওয়া গেছে। সশস্ত্র ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নির্ধারিত পোশাকের (ইউনিফর্ম) সঙ্গে পদ নির্দেশক হিসেবে এসব ব্যাজ ব্যবহার করা হয়। তবে ওই লেক থেকে পাওয়া তারকা আকৃতির সোনালি রঙের এসব ব্যাজ বাংলাদেশের কোনো বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করেন না।
এই ব্যাজগুলো কারা ব্যবহার করে, সে সম্পর্কে জানতে চাইলে মামলার বাদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবির ওসি মাহমুদুল ইসলাম বলেন, র্যাংক ব্যাজগুলো কাদের, তা এখনো জানা যায়নি।