খােলা বাজার২৪।। সোমবার , ৫ জুন, ২০১৭: বালির বস্তার উপরে ভর করে টিকে আছে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার বিশাল মাতামুহুরী সেতু। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে যে কোনো সময় ভেসে যাবে বালির বস্তা। বালির বস্তা সরে গেলেই মুহূর্তে ভেঙে যাবে বিশাল এই সেতু। সেই সাথে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে কক্সবাজার। বন্ধ হয়ে যাবে সারাদেশের সাথে পর্যটন শহর কক্সবাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা। সেতুটি ধসে পড়লে মেরামতে সময় লাগবে কয়েক মাস। আর কয়েক মাস কক্সবাজারের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ বন্ধ থাকলে ধসের মুখে পড়বে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প। তাই দ্রুত মাতামুহুরী সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত অংশের মারামতে দাবি করেছে কক্সবাজারবাসী।
ঝুঁকিতে থাকা সত্বেও চকরিয়ায় মাতামুহুরী সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত একটি পিলার বালির বস্তা দিয়ে রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। এ কারণে ওই ব্রিজের তলদেশে দেওয়া হয়েছে শত শত বালির বস্তা। এই বালির বস্তা দিয়েই খুঁটির কাজ করা হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ) বলছে, পুনঃনির্মাণ কাজের বাজেট না পাওয়া পর্যন্ত বালির বস্তা দিয়েই যান চলাচল অব্যাহত রাখা হবে। ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাতামুহুরী ব্রিজের রিলিং ভেঙে নিহত হন ১৮ জন। এরপর থেকে ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। স¤প্রতি ওই ব্রিজটির মাঝখানে নতুন করে নিচু হয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। যেকোনও সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৬০ সালে চকরিয়ায় মাতামুহুরী ব্রিজটি নির্মিত হয়। এর মেয়াদকাল একশ’ বছর ধরা হলেও তার আগেই ব্রিজটির বিভিন্ন স্থান ভেঙে পড়ে ও নিচু হয়ে যায়। ফাটলও ধরেছে কয়েকটি স্থানে। ব্রিজের ঠিক মাঝখানে বড় ধরনের গর্ত হওয়ায় পাটাতনের মাধ্যমে জোড়াতালি দিয়ে যানবাহন চালু রেখেছে কতৃপক্ষ। এতে কোনও যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়ি ব্রিজে উঠলেই কেঁপে উঠায়, আতঙ্ক শুরু হয় যাত্রীদের মধ্যে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছে লাখো মানুষ। স¤প্রতি সেতুর পিলারও নিচু হয়ে যাওয়া বালির বস্তার দিয়ে কোনো রকমে রক্ষা করা হচ্ছে।
সওজ এর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রায় চার বছর আগে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার মাতামুহুরী সেতুর মাঝখানের ঢালাইয়ের একটি অংশে সামান্য নিচু হয়ে যায়। ওই সময় ভারী বৃষ্টিতে একটু একটু করে বড় অংশ নিচু হয়ে যায়। নিচু হওয়া ক্ষতস্থানে লোহার পাটাতন দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। কিন্তু সেই পাটাতন অপেক্ষাকৃত একটু উঁচুতে স্থাপন করতে হওয়ায় ভোররাতে পর্যটকবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারালে পাশের রেলিং ভেঙে নিচে নদীর চরে পড়ে যায়। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় ১৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। এরপর সড়ক ও জনপথ বিভাগ ভেঙে যাওয়া রেলিং মেরামত এবং নিচু হয়ে যাওয়া অংশ আবারও রিপিয়ারিং করে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করার চেষ্টা করে। এভাবেই ঝুঁকির মধ্যেই এতদিন ধরে যানবাহন চলাচল করে আসছে।