Wed. Apr 23rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

Pak-SA

খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার , ৮ জুন, ২০১৭: চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে বিশাল ব্যবধানে হারের পরও নাকি আত্মবিশ্বাস হারায়নি পাকিস্তান। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ জানিয়ে গিয়েছিলেন কথাটা। একই সঙ্গে ঘুরে দাঁড়ানোর শপথও নিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। কথা রেখেছেন তিনি ও তার সতীর্থরা। নিজেদের পারফরম্যান্সের সঙ্গে আশীর্বাদ হয়ে আসা বৃষ্টিতে ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডে প্রোটিয়াদের ১৯ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান। এই জয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে ওঠার দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে থাকল সরফরাজরা।

লক্ষ্যটা খুব বেশি ছিল না পাকিস্তানের। বোলারদের দাপটে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে করতে দেয় তারা ২১৯ রান। ওই লক্ষ্য পর্যন্ত যেতে দেয়নি তাদের বৃষ্টি। ২৭ ওভার শেষে বৃষ্টি শুরু হলে ম্যাচ হয়ে যায় বন্ধ। আবহাওয়ার আর উন্নতি না হওয়ায় ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডে ১৯ রানের জয় পায় পাকিস্তান। বৃষ্টির সময় ২৭ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের রান ছিল ১১৯। ডি/এল মেথডে ২৭ ওভারে সরফরাজদের দরকার ছিল ১০১ রান।

মাত্র ২১৯ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ায় বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল দুর্দান্ত। সেটা করতে না পারলেও ১ রানের মধ্যে দুই ওপেনার আজহার আলী (৯) ও ফখর জামানকে (৩১) ফিরিয়ে সম্ভাবনা তৈরি করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ফখরকে ফেরানোর পর মোহাম্মদ হাফিজকেও (২৬) আউট করেছিলেন মরনে মরকেন। যদিও বৃষ্টিতে শেষ চেষ্টাটাও করতে পারেনি এবি ডি ভিলিয়ার্সরা।

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বল হাতে নতুন এক পাকিস্তানের দেখা মিলল বুধবার এজবাস্টনে। দুর্দান্ত বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে কোণঠাসা করে ব্যাটসম্যানদের কাজটা তারা করে দেয় সহজ। হাসান আলী, ইমাদ ওয়াসিম ও জুনাইদ খানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রোটিয়ারা ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ২১৯ রান।

দক্ষিণ আফ্রিকার অত দূর পর্যন্ত যেতে পারার পুরো কৃতিত্বটা পাবেন ডেভিড মিলার। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় এক হাতে লড়ে গেছেন ‘কিলার’ মিলার। তবে খুনে মেজাজে নয়, বরং নিজের স্বভাবসুলভ ব্যাটিং দূরে রেখে দিয়েছেন ধৈর্য্যের পরীক্ষা। যে পরীক্ষায় শেষ পর্যন্ত ১০৪ বলে হার না মানা ৭৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে দিয়েছেন লড়াই করার মতো স্কোর।

অথচ টস জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকাই। এবি ডি ভিলিয়ার্সের সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণ করে শুরু থেকেই প্রোটিয়াদের ওপর চাপ তৈরি করে পাকিস্তান। মোহাম্মদ আমির ও জুনাইদের পেস আগুনে দক্ষিণ আফ্রিকার রান আসে ধীর গতিতে। তাদের তৈরি করে দেওয়া চাপের সুযোগটা নেন ইমাদ ওয়াসিম। বোলিংয়ে এসেই তিনি ফেরান আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান হাশিম আমলাকে (১৬)। ভুগতে থাকা আরেক ওপেনার কুইন্টন ডি ককও (৩৩) খানিক পর ধরেন প্যাভিলিয়নের পথ।

তখনও আসলে ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি ধস নামতে যাচ্ছে প্রোটিয়াদের ব্যাটিং লাইনআপে। টের পাওয়া যায় ডি ভিলিয়ার্স ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবার নামের পাশে ‘গোল্ডেন ডাক’ যোগ করলে। ৬১ রানে ৩ উইকেট হারানো প্রোটিয়ারা আরও ব্যাকফুটে চলে যায় হাসান আলী দুর্দান্ত বোলিংয়ে ফাফ দু প্লেসিসকে (২৬) বোল্ড করে ফেরত পাঠালে। এই পেসারের আগুনে বোলিংয়ের শুরুটা ওখান থেকেই। এরপর জেপি দুমিনি (৮) ও ওয়েইন পারনেলকে (০) পরপর দুই বলে আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন হাসান। সব মিলিয়ে ৮ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট পাওয়া হাসান পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল বোলার।

কঠিন বিপর্যয়ের মধ্যে নিজের কাজটা করে গেছেন মিলার। যোগ্য সঙ্গ পেয়েছেন ক্রিস মরিস (২৮) ও কাগিসো রাবাদার (২৬) কাছ থেকে। লোয়ার অর্ডারে তাদের কার্যকরী ইনিংস দুটোর সঙ্গে মিলারের হাফসেঞ্চুরিতে শেষ পর্যন্ত ২১৯ রান করতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা।