Wed. Apr 23rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। শুক্রবার , ৯ জুন, ২০১৭:  7নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ঘোষবাগে সৌদি আরবের আর্থিক অনুদানে অন্তত ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০০ সালে ২০ শয্যাবিশিষ্ট চরআলগী হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে চিকিৎসক সংকট ও ২০১৬ সালের জুলাই থেকে উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ আনুষঙ্গিক আর্থিক বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এতে গ্রামীণ জনপদের লক্ষাধিক দরিদ্র জনগণ সরকারি চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন।
হাসপাতালের পদায়ন করা ৩২টি পদের মধ্যে ১০টি পদ রাজস্বভুক্ত করা হয়েছে। ১১টি পদ শূন্য রয়েছে, বাকি ১১ পদের অনুকূলে বেতন-ভাতাসহ প্রাসঙ্গিক ব্যয়ের চাহিদাপত্র মোতাবেক ৫৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়ার জন্য নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মজিবুল হক ২০১৭ সালের ১৪ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠান। সংশ্লিষ্ট বিভাগ আজো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করায় হাসপাতালের কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
সিভিল সার্জন আরও জানান, বর্তমানে একজন এমবিবিএস চিকিৎসক একজন উপসহকারী মেডিকেল অফিসারের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। মেডিকেল অফিসার পদে আরও ৩ জনের রাজস্ব পদ খালি আছে। এসব পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে উন্নয়ন ও সেবা খাতের অর্থ ছাড় দিলে হাসপাতালটি স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার মতো পূর্ণাঙ্গ হয়ে যাবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফার্মাসিস্ট পদে লোক না থাকায় নিরাপত্তা কর্মী ধনঞ্জয় রোগীদের মধ্যে বিনামূল্যের ওষুধ বিতরণ করছেন। ধনঞ্জয় বলেন ‘প্রায় এক বছর বেতন নেই বিধায় অনেকে আসেন না। কিন্তু রোগীদের কথা বিবেচনা করে, একজন নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে এখনও কাজ করছি। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ বিতরণ আর পাহারার কাজ করে থাকি। প্রতিদিন বহির্বিভাগে অন্তত ৪০-৫০ জন রোগী এখনও আাসেন। তবে নিয়মিত সব ডাক্তার থাকলে দৈনিক দেড়-দুইশ’ রোগী হবে।’ এমএলএসএস নুরনবী ও আলী মিয়া জানান, এখানে প্রসূতি নারীদের চিকিৎসা দেওয়ার মতো সব রকম যন্ত্রপাতি আছে। তবে চিকিৎসক না থাকায় প্রসূতি সেবা বন্ধ রয়েছে।
উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার দীনেশ চন্দ্র মজুমদার, সিনিয়র নার্স নাসিমা আক্তার বলেন, এ হাসপাতালের অবকাঠামোগত এবং চিকিৎসাবিষয়ক প্রায় সব যন্ত্রপাতিই রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ একটি অপারেশন থিয়েটার রুমসহ ডেন্টাল মেশিন, অটো ক্লাব মেশিন, এক্সরে, ইসিজি, আলট্রাসানোগ্রাফি মেশিনগুলো ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জেনারেটর, অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের অভাবে অকেজো হয়ে পড়ছে।
স্থানীয়রা জানায়, ৩ একর জায়গায় চিকিৎসা সেবায় দ্বিতল ভবন, ডরমিটরি, আরএমওসহ চিকিৎসকদের বাসা, ২টি স্টাফ কোয়ার্টারসহ সব ধরনের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা থেকেই কর্মরত প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক আবদুর রহিম বলেন, জরুরি সেবাসহ সব ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থা এখানে রয়েছে। কিন্তু উন্নয়ন খাতের কর্মীদের ভাতাসহ প্রাসঙ্গিক খরচ এক বছর থেকে পরিশোধ করা হয় না বলে কাজের গতিতে ভাটা পড়েছে। এ হাসপাতালটি উপজেলা সদর থেকে ৮ কি.মি দক্ষিণের গ্রামীণ জনপদে। উপজেলার ধানসিঁড়ি, ধানসালিক, চরজানাজা, চরকালমি, চরবৈশাখীসহ চরআলগী ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী ২০ হাজার পরিবারের এ হাসপাতালে সেবা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সরকারের আন্তরিকতার অভাবে হাসপাতালের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে। সমকাল