Tue. Jun 17th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০১৭: ‘নদীতে ঘর ভেঙ্গে নেয়ার পর বাঁধের পাশে আশ্রয় নিয়েছি কিন্তু সেখানেও পানি উঠছে, জোয়ারের পানিতে চুলো ডুবো গেছে ২ দিন ধরে খাওয়াদাওয়াও ঠিকমত হচ্ছে না। ঘর-দুয়ার তলিয়ে যাওয়ায় সবাই গৃহবন্দী। এখন আশ্রয় নেয়ার মত কোন ঠিকানা নেই।

ছবি তুলতে গেলে এমন কথাই জানান রাজাপুরের বাসিন্দা বানভাসি বিপুল বেগম। তিনি বলেন, একদিকে ভাঙ্গনের ভয় অন্যদিকে জোয়ারের পানি, আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

শুধু বিপুল বেগম নয় এমন একই কথা বলেন রহিমা, মমতাজ, ফাতেমাসহ অন্যরা। জোয়ারের পানিতে বিস্তীর্ন এলাকা ডুবে থাকায় তাদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।

রাজাপুর ইউনিয়নের মত গত ২ দিন ধরে জোয়ারের পানিতে ভাসছে ভোলার ৩উপজেলার অন্তত ১৫টি গ্রাম । এতে পানি বন্ধি হয়েছে হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। পানিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, পুকুর, মাছের ঘের, ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ন জনপদ। জোয়ারের পানিতে যেন মানবি বির্পযয়ে বানভাসি মানুষ।

সোমবার সন্ধায় পূর্নিমায় সৃষ্ট অতিজোয়ারের প্রভাবে এসব এলাকা প্লাবিত হয়। এদিকে পাউবো বলছে, গত দুই দিন ধরে মেঘনার পানি বিপদ সীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার যার উচ্চতায় ছিলো ১৫০ সেন্টিমিটার।

প্লাবিত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ও মনপুরা, তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর এবং ভোলা সদরের রাজাপুর ও ইলিশা ইউনিয়নের ১৫ গ্রাম।

মনপুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার চৌধূরী বলেন, বাঁধ না থাকায় দুটি ইউনিয়নে প্রায় ২ শতাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

ভোলা সদরের রাজাপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, জোয়ারের পানিতে ডুরেব আছে বেশীরভাগ এলাকা। পানির হাত থেকে বাচতে অনেকই আশ্রয় নিয়েছেন উচু স্থানে। পানির কারনে রাতে আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বাধ এলাকার মানুষ। এসব পরিবারের অনেকই রান্না বান্না বন্ধ হয়ে গেছে। রমজান মাসে জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ফলে চরম মানবক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

রাজাপুর ইউপি সদস্য মাসুদ রানা বলেন, জোয়ারের পানিতে পুরো এলাকার ৫শতাধিক ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে এতে প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানি বন্দি। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। এসব এলাকায় এখন ত্রান সহায়তা জরুরি হয়ে পড়েছে।

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১ নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার বলেন, রাজাপুর ও ইলিশা ইউনিয়নের সাড়ে ৩’শ মিটার এলাকায় উম্মুক্ত থাকায় সেখানে দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। আমরা দ্রুত কাজ করছি।

পাউবো ডিভিশন-২ নির্বাহী প্রকৌশলী কাওছার হোসেন বলেন, পূনিমায় সৃষ্টি জোয়ার এবং লঘু চাপের প্রভাবে মেঘনার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তজুমদ্দিন ও মনপুরার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আমরা বাধেল কাচ করছি।

এদিকে ২ দিন ধরে পানি বন্ধি হয়ে দুভোগ পোহাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। পানির কারনে অনেকেই গৃহবন্িধ হয়ে পড়ছেন। কেউ কেউ আবার উচু স্থানে আশ্রয় নিলেও সেখানে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় ডায়রিয়াসহ পানি বাহিত ছড়িয়ে পড়ার আশংকার করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ভোলার জেলা প্রশাসক মো: সেলিম উদ্দিন বলেন, দুর্গত এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে তারা পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিবো। সেখানে যদি ত্রান সহায়তার প্রয়োজন হয় তাহলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রান সহায়তা দেয়া হবে। জেলায় পর্যন্ত ত্রান সামগ্রী মজুদ রয়েছে। এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত বাধ মেরামতের জন্য বলা হয়েছে।