Tue. Jun 17th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। বুধবার ,১৪  জুন, ২০১৭:  1আধুনিক বিশ্বে সেই চতুর বণিকের জায়গা দখল করেছে চীন। গত মাসে বেইজিংয়ে দারুণ ঘটা করে অনুষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ সম্মেলন। পাকিস্তান, বাংলদেশ-সহ বিশ্বের প্রায় ২৯টি দেশ ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে। তবে ‘চীন পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর’ (সিপিইসি) নিয়ে চরম বিরোধিতা করে সম্মেলন বয়কট করেছে ভারত। এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকাকে যুক্ত করে প্রভূত অর্থনৈতিক উন্নতির স্বপ্ন দেখিয়ে চীন যে নিজের অভিসন্ধি পূরণ করবে বলে মনে করে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সংবাদ সংস্থা এএনআইতে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে ‘ওবি আর’ প্রকল্পের জেরে দেওলিয়া হয়ে যেতে পারে পাকিস্তান, বাংলাদেশ-সহ একাধিক দেশ। জানা গিয়েছে, ওই প্রকল্পের অন্তর্গত পরিকাঠামো উন্নতির নামে চীন মুক্তহস্তে বিভিন্ন দেশগুলিকে ঋণ দিয়ে যাচ্ছে। তবে যে দেশগুলি ঋণ নিয়েছে, তাদের ১৬ শতাংশ করে সুদ দিতে হবে এবং তা চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি হবে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির পক্ষে ঋণের টোপে পা দিয়ে ফেলা অস্বাভাবিক নয়। এবং একবার ঋণের বোঝা চাপালে কার্যত চীনের কাছে বিকিয়ে যাবে তারা।
ইতিমধ্যে, চিনের সুরে সুর মিলিয়ে অর্থনৈতিক উন্নতির গান গাইছেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। বাস্তবে ‘ওবি আর’ প্রকল্পের মাধ্যমে চীন নিজের মুদ্রা ‘ইউয়ান’ কে ডলারের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে, তা যেন দেখেও দেখছেন না তিনি। এবং পাকিস্তানের মতো দুর্বল, আমদানি নির্ভর অর্থনীতি যে চিনের কাছে একটি লাভজনক বাজার ছাড়া আর কিছুই নয় তা আদতে মানতে চাইছে না ইসলামাবাদ। এছাড়াও, চিনের সঙ্গে দরাদরি করার ক্ষমতা নেই ইসলামাবাদ ও ঢাকার। তাই বেজিং যা শর্ত দেবে একপ্রকার তাই মেনে নিতে বাধ্য দুই দেশ। সম্প্রতি, রাষ্ট্রসংঘের ‘ইকোনমিক এন্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক স্টাডি’ চিনের ‘ওবি আর’ প্রকল্পের অন্ধকার দিক নিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলির উদ্দেশ্যে সতর্ক বার্তা জারি করেছে। চিনের কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের ঋণ নিয়ে সীমাহীন দেনা চক্রের ফাঁদে ফেঁসে যেতে পারে অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বল দেশগুলি বলে ওই বার্তায় বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল পর্যন্ত চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে যা ঢাকার জিডিপি-র ২০ শতাংশ। একই ভাবে ‘সিপিইসি’ প্রকল্পের অন্তর্গত পাকিস্তানে ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করবে চীন যা ইসলামাবাদের জিডিপি-র পাঁচ ভাগের এক ভাগ। এবার ওই বিশাল অঙ্কের ঋণের বোঝা বইতে গিয়ে ঢাকা ও ইসলামাবাদ যে একপ্রকার চিনের ক্রীতদাসে পরিণত হবে তা মেনে নিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। একই ভাবে চিনের দেওয়া ঋণের বোঝা চেপেছে শ্রীলঙ্কার ঘাড়েও। বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করতে চীন ‘ওবি আর’ প্রকল্পটিকে কাজে লাগিয়েছে তা একপ্রকার স্পষ্ট। তবে চীনকে টেক্কা দিতে ভারতও হাত মিলিয়েছে আমেরিকা ও জাপানের সঙ্গে। তবে ড্রাগনকে রুখতে তা কতটা কার্যকর তা সময়ই বলবে।