খােলা বাজার২৪।। শনিবার , ১৭ জুন, ২০১৭: পাহাড় ধসের কারণে রাঙামাটির সঙ্গে আশপাশের জেলাগুলোর যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তিনদিন পার হলেও এখনো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু না হওয়ায় খাবার, পানি এবং জ্বালানি সংকটের বড় ধরণের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলেও তা এখনো স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পৌঁছায়নি। ফলে শহরে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। চাল, ডাল, সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির সংকট তীব্র হওয়ায় দাম বেড়েছে দ্বিগুণ হারে। তৈরি হয়েছে জ্বালানি সংকটও।
বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় দমকল বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর সদস্য ছাড়াও রাঙামাটির বাইরেও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে। তবে যেসব স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে সেসব স্থানে স্থানীয় উদ্ধার কর্মীদের সন্দেহ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধার কাজ অব্যাহত থাকবে।
রাঙামাটি থেকে বাইরে যাওয়ার সব যোগাযোগ বিছিন্ন হওয়ার ফলে বাসিন্দাদের ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। রাঙামাটি থেকে অন্য জেলাগুলোতে যেতে তাদের ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার হেঁটে যাওয়ার পরে যানবাহনের সুবিধা পেতে হচ্ছে। তবে রাঙামাটি থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত নৌপথই একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরিবচ্ছিন্ন আছে। কাপ্তাই থেকে যানবাহন যোগে অন্য জেলাগুলোতে যাওয়া যাচ্ছে। নৌপথে যোগাযোগের জন্য জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে দুটি স্পেশাল সার্ভিসও চালু করা হয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতির ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। জ্বালানি তেল না থাকায় রাঙামাটির প্রেট্রোল পাম্পগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশেষ করে অকটেনের ব্যাপক সংকট তৈরি হয়েছে। যারা উদ্ধার কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন তাদের জন্য খুবই সীমিত আকারে অকটেন তেলের মাধ্যমে সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
বিবিসি বাংলার সংবা“াতার পর্যবেক্ষণ পাহাড় ধসে ব্যাপক মৃত্যুর এবং ক্ষয়-ক্ষতির কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে,
প্রথমত, রাঙামাটির পাহাড়গুলোতে যদিও সবুজের আচ্ছাদন রয়েছে কিন্তু গাছপালার সংখ্যা যথেষ্ট হারে কমে গেছে। যার ফলে পাহাড়গুলোতে বৃষ্টির পানি ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। বৃষ্টির পানি ধারণ ক্ষমতা হ্রাসের ফলে ধসের প্রবণতা বেড়ে গেছে।
দ্বীতিয়ত, মূলত রঙামাটির শহরতলীর দিকে পাহাড়ের বড় ধরণের ধস হয়েছে। যেসব এলাকায় মূল সড়ক থেকে একশো ফুট বা পঞ্চাশ ফুট নিচে অসংখ্য বাড়িঘর তৈরি হয়েছে। বাড়িগুলো চারপাশে পাহাড়। সুতরাং প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়গুলো ভেঙ্গে বাড়িগুলো ভেঙ্গে পড়েছে।
যদিও এমন কিছু পাহাড়ও ধসে গেছে যেখানে মানুষের কোন বসতি নেই। এমন পাহাড় ধসের কারণ হিসেবে বনবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, জুম চাষের কারণে পাহাড়ের বৃষ্টি ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।