সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের এখনও প্রায় বছরখানেক বাকি। কিন্তু এখনই প্রচারণাযুদ্ধে নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
প্রচারণার অংশ হিসেবে সিলেট নগরীজুড়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড ও তোরণ শোভা পাচ্ছে। আওয়ামী লীগ থেকে অন্তত চারজন নেতা মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার দৌড়ে আছেন। তবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনা ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
কিন্তু দলটির অন্যান্য সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা এখনই মাঠ ছেড়ে দিতে নারাজ। সিসিকের সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০১৩ সালের ১৫ জুন। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে মেয়র হন বিএনপিনেতা আরিফুল হক চৌধুরী। সিসিকের পরবর্তী নির্বাচন আগামী বছরের শুরুর দিকে করতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। আগামী নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হবে, এজন্য সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
আওয়ামী লীগদলীয় সূত্র জানিয়েছে, গত শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনিবাহী সংসদের সভায় সিসিকের আগামী নির্বাচনের জন্য মাঠে কাজ করতে সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে নির্দেশ দিয়েছেন দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনা। দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরান সিসিকের প্রথম দুই নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। তবে গত নির্বাচনে পরাজয় বরণ করেন তিনি। তবে আগামী নির্বাচনের জন্য শেখ হাসিনার গ্রিন সিগনাল পেয়ে নতুন উদ্যমে মাঠে নামছেন কামরান।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, ‘কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সভানেত্রী শেখ হাসিনা মাঠে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন কামরানকে। এটা কামরানের জন্য একধরনের গ্রিন সিগনাল।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, জনগণের জন্যই আমার রাজনীতি। দল ও নেত্রীর প্রতি আনুগত্য রেখে সর্বদাই জনমানুষের পাশে আছি। আমার নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মাঠে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। মানুষের প্রত্যাশাও আমাকে নিয়ে অনেক বেশি। তারা চাচ্ছেন, আমি যেন আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হই। আমি আছি, কাজ করছি। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে কামরান এগিয়ে থাকলেও অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখনই মাঠ ছাড়তে নারাজ।
তারা বলছেন, দলের মনোনয়ন বোর্ড যখন কাউকে মনোনয়ন দেবে, তখনই তার প্রার্থীতা নিশ্চিত হবে। এর আগে সবার জন্য সুযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র পদে নির্বাচন করতে আগ্রহী নগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, নগর আ’লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও টানা তিনবারের সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ এবং সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও বাফুফের কার্যনির্বাহী সদস্য মাহিউদ্দিন আহমদ সেলিম। রাজনীতিতে সক্রিয় না হলেও অর্থমন্ত্রীর ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত সেলিম।
সিলেট নগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমি গত প্রায় চার বছর ধরে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন সব জায়গা থেকেই সাড়া পাচ্ছি।
নগরবাসী মনে করেন, আমি একজন সৎ রাজনীতিবিদ এবং দুর্নীতি করবো না। দলীয় মনোনয়ন পেলে আমি বিজয়ী হবো ইনশাআল্লাহ।
নগর আ’লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘ছাত্রলীগ, যুবলীগ পেরিয়ে এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি। টানা তিনবার কাউন্সিলর হয়েছি। দলীয় সভানেত্রী যে নির্দেশনা দেবেন, সে অনুযায়ীই কাজ করবো। সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন আহমদ সেলিম বলেন, মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য সকল মহল থেকে অনুরোধ আসছে। যদি দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচন করতে প্রস্তুত আছি।