খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৭: মাছ, মাংস, ডিম, ঘন ডাল—এসব ছাড়া একেবারে চলাই কঠিন। আবার অনেকে ডায়েটে না বুঝেই বাদ দিয়ে দিচ্ছেন প্রোটিন। তাতে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের সমস্যা। প্রোটিনকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। সহজ করে বললে একধরনের প্রোটিন, যা আমরা প্রাণী থেকে পাই তাকে ফার্স্ট ক্লাস প্রোটিন বলে আর যেসব প্রোটিন আমরা উদ্ভিদ থেকে পাই, তাকে সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন বলে।
প্রোটিন কোনটি নেব আর কতটা নেব এ ব্যাপারে ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, ‘মাছ, মাংস, ডিম বা ডাল প্রোটিন নেওয়ার মাধ্যম যাই হোক না কেন, মনে রাখতে হবে মানুষের প্রোটিন নেওয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় তার বয়স, ওজন, কাজের ধরন দেখে। সে ক্ষেত্রে চাইলেই ইচ্ছামতো প্রোটিন নেওয়া যাবে না। আবার প্রোটিন বাদও দিয়ে দেওয়া যাবে না। আমরা সাধারণত ফার্স্ট ক্লাস প্রোটিন নিতে বলি। সে ক্ষেত্রে ডিমের সাদা অংশটা খাওয়া ভালো। মাছ আর মাংসের মধ্যে মাছ খেলে প্রোটিনের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নানা ধরনের অসুখের ঝুঁকি কমে। মাংস খেতে হলে সাদা মাংস খাওয়া উচিত। লাল মাংস যতটা সম্ভব পরিহার করলে তাতে পরে ভালো ফল আনবে। মাংস খেতে হলে অবশ্যই চর্বি ফেলে তারপর খেতে হবে।
এ তো গেল যাঁরা মাছ-মাংস খান তাঁদের কথা। কিন্তু যাঁরা মাছ-মাংস খেতে পছন্দ করেন না বা নানা কারণে একেবারেই নিরামিষভোজী, তাঁদের কী হবে? এ প্রশ্নের উত্তরে শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, ডাল বা ডাল-জাতীয় খাবার যেমন ছোলা, কিডনি বিন, বাদাম এসবেও প্রোটিন আছে। তবে সেটা সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন। মনে রাখতে হবে, এক ধরনের ডালে শরীরের সব চাহিদা পূরণ হবে না। সে ক্ষেত্রে কয়েক ধরনের ডাল একসঙ্গে করে রান্না করতে হবে। তাতে একেক ধরনের ডাল থেকে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় একেক ধরনের উপাদান পাওয়া যাবে। বাদাম, ছোলা, দুধ, সয়াও খাওয়া জরুরি।
হৃদ্রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সয়া মিল্ক ভালো। অনেকেই মিল্ক চর্বি এড়াতে দুধ কম জ্বাল দিয়ে রান্না করে। সে ক্ষেত্রে দুধ কম জ্বাল সমাধান নয়, বরং দুধ জ্বাল দিতে হবে ঠিকমতোই। তবে বাড়ির দুধ বা বাজারের নন-ব্র্যান্ডেড দুধ খেতে চাইলে দুধের অর্ধেক পরিমাণ পানি দিয়ে তা জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করে সর ফেলে খেতে হবে। সয়া মিল্কও খেতে পারেন। তবে কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সয়া একটু কম খাওয়াই উচিত। উদ্ভিদ-জাতীয় প্রোটিন নিলে মনে রাখতে হবে সেটিও কিন্তু যত ইচ্ছা তত খাওয়া যাবে না। আবার কমও যেন না হয়। পাতলা ডাল এক বাটি কিন্তু কখনোই এক বাটি ঘন ডালের কাজ করবে না। তবে একটু বেশি প্রোটিন নিতে পারবেন উঠতি বয়সের ছেলেমেয়ে, গর্ভবতী মা বা ডাক্তারের পরামর্শে যাদের দেওয়া হয়। প্রথম আলো