খােলা বাজার২৪।। রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৭: দেশে মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ কিডনি রোগীর কিডনি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বিদ্যমান আইনকেই দায়ী করছেন রোগীরা। ফলে এই আইনি জটিলতার কারণে প্রতি সপ্তাহে যান ৮ থেকে ১০ জন রোগী চলে যান ভারতে। এতে বছরে ব্যয় হয় প্রায় ৩শ কোটি টাকা।
সমস্যা সমাধানে প্রস্তাবিত সংশোধনীসহ মন্ত্রীপরিষদ সভায় উঠছে “মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন”। এতে কিডনিসহ রোগীদের কিডনি প্রতিস্থাপনে অনেকটা সমাধান হবে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি জোর দেয়া হচ্ছে, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেনাবেচা প্রতিরোধ করা।
‘ডাক্তার একটা লিস্ট ধরিয়ে দিলেন যে, এই সব লোকের কাছ থেকে আপনি কিডনি নিতে পারবেন। এর বাইরে থেকে আপনি নিতে পারবেন না। নিকটাত্মীয় কিডনি দিতে রাজি হলেও আইনি জটিলতার কারণে কয়েকবছর ধরে ডায়ালাইসিস সেবার ওপর নির্ভর করতে হয় রোগীদের। আবার অনেকে কিডনি প্রতিস্থাপনের কথা ভাবলেও পিছিয়ে আসেন নানা কারণে।১৯৮২ সালে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট শুরু হওয়ার পর, গত ৩৪ বছরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে মাত্র ৫১০ টি। ১৭ বছরে বারডেম হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন হয় ১২৫ জনের। কিডনি ফাউন্ডেশন প্রতিস্থাপন করে ৩৯১জনের, অ্যাপোলো হাসপাতালে ২১ জনের এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মাত্র ৫ জন , আর গত চার বছরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে মাত্র ২ জনের দেহে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিবছর কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয় কমপক্ষে ৯ হাজার কিডনি রোগীর। কিন্তু,দেশে বিদ্যমান “মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন ১৯৯৯” অনুযায়ী রক্তের সম্পর্কিত নিকটাত্মীয় ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তি কিডনি দান করতে পারবেন না।
জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. নুরুল হক লেলিন বলেন, ‘আজকে আমাদের বাচ্চারা বেডরুম শেয়ার করে না, ওয়াশরুম শেয়ার করে না। তারা কিডনি কিভাবে শেয়ার করবে? তাছাড়া সেই মানসিকতায় কিন্তু আমাদের বাচ্চারা বড় হচ্ছে না। কিডনির ডোনারের স্বল্পতার কারণে আমরা প্রতিস্থাপন সেভাবে আগাতে পারছি না।’
‘মানব দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন এবং সংযোজন নিয়ে সংশোধন আগামী সোমবার কেবিনেট সভায় উপস্থাপিত হবে। যাদের মৃত্যু অবধারিত বলে চিকিৎসকগণ মনে করবেন তাদের শরীর থেকে তাদের আত্মীয়-স্বজনের সম্মতি সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় অঙ্গ সংগ্রহ করা যাবে।’
এই আইনের মাধ্যমে একদিকে কিডনি প্রতিস্থাপনের সুযোগ বাড়বে, কমবে খরচ। -তথ্যসূত্র : সময় টিভি