Tue. Jun 17th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। সোমবার, ১৭ জুলাই, ২০১৭: 5প্রবাসে বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সরকারি হিসেবে, প্রতিদিন দেশে আসছে অন্তত ১০ প্রবাসী শ্রমিকের মরদেহ। সংশ্লিষ্ট দেশের পক্ষ থেকে, মৃত্যুর কারণ হিসেবে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক কিংবা দুর্ঘটনা বলা হলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রকৃত কারণ জানা যায় না। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনিরাপদ কর্ম পরিবেশ, আর্থিক ঋণ, খাদ্যাভ্যাসসহ মানসিক চাপই মৃত্যুর কারণ। কর্মস্থলে নিরাপত্তা সুরক্ষার পাশাপাশি কাজের শর্ত সম্পর্কে কর্মীকে আগেই অবহিত করার তাগিদ দিয়েছেন তারা।

দেশের তিনটি বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০ জন অভিবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকের মৃতদেহ দেশে আসে। সরকারী পরিসংখ্যান মতে, ২০০৫ সালে ১ হাজার ২৪৮টি মরদেহ দেশে আসলেও, ২০০৯ সালে এ সংখ্যা দ্বিগুণ এবং বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় তিনগুণ। গত এক যুগে প্রবাসী কর্মীর মরদেহ আসার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৪৬৭ তে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবাসে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশী।

রামরুর রিসার্চ ফেলো জালাল উদ্দিন শিকদার বলেন, ‘জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী আমাদের প্রায় ৫ হাজারের মতো শ্রমিক বিভিন্ন দেশে মৃত্যু বরণ করছেন। দেখা যায়, এক তৃতীয়াংশ লাশ কিন্তু দেশে আসে না।’

এসব হতভাগ্য শ্রমিকের মরদেহের সাথে পাঠানো ‘ডেথ সার্টিফিকেটে’ মৃত্যুর কারণ হিসেবে হৃদরোগ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ কিংবা সড়ক দুর্ঘটনা উল্লেখ করা হলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ঋণের বোঝা, বিরূপ কর্মপরিবেশ আর মানসিক চাপেই মৃত্যু ঘটছে এই প্রবাসী বাংলাদেশীদের।

অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় একজন মৃত নারী অভিবাসী কর্মীর মায়ের মন্তব্যকে যদি উদ্ধৃত করি, আমার মেয়ে মারা যাওয়ার কয়েকদিন আগেও তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে এবং সে কখনো বলে নাই যে, সে অসুস্থ। সুতরাং একজন মা এইটা সন্দেহ করছেন যে, তার মেয়ে হয়তো এই রোগে মারা যায় নাই।’

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেন, ‘এক্ষেত্রে এগুলোকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে রাষ্ট্রের কিছু করণীয় নেই এটা আমি মনে করি না।’

বিদেশ যাওয়ার আগে, যথাযথ প্রশিক্ষণ নেয়া আর অভিবাসন নীতিমালা অনুসারে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও চাকুরীর শর্ত সম্পর্কে কর্মীদের অবহিত হয়ে নেয়ার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।

তবে, সংশ্লিষ্ট দেশের কর্মপরিবেশ জেনেই কর্মীদের চাকুরীর ব্যবস্থা করার কথা জানান, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাভেদ আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত চুক্তিপত্রে কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়গুলো উল্লেখিত। এগুলো দেখেই আমাদের কর্মীরা সাক্ষর করেই যায়, ওগুলো দেখি আমরা।’

অভিবাসন নীতিমালা সম্পর্কে প্রবাসী কর্মীদের আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন এই কর্মকর্তা।

সূত্র : সময়টিভি