Tue. Jun 17th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
20155824_266930270380605_7420044632870374959_n (1)খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০১৭: ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা কারাগারে নিয়মিত কয়েদি ও হাজতি থেকে আসছে ৩শ থেকে ৪শ জন। এই বন্দিদের খাওয়া-নাওয়ার জন্য সরকারি বরাদ্ধ রয়েছে যথেষ্ট। সব কিছু তত্বাবধানে রয়েছে সরকারের বিশাল ১টি জনবল। এই জনবলের জন্য সরকারকে বহন করতে হয় মোটা অংকের বেতন-ভাতা-রেশন। এর পরেও কারাগারের বন্দিদের খাওয়া-নাওয়া-ঔষধের ৩০ ভাগ এই কারাগারের তত্তাবধানে থাকা কতিপয় জেল সিপাহি সহ কারা কর্তৃপক্ষ চুরি করে আসছে। যা এ জেলার সুশীল সমাজকে হতবাক করার মতো। জানা যায়, প্রতিদিন কাচামাল সরবরাহে দেখা গেছে বন্দিদের মাছ ১ কেজির ওজনের কম নহে’ নেওয়া হচ্ছে ১শ গ্রাম থেকে ১শ ৫০ গ্রামের। আবার মোট পরিমানের ১ কেজি থেকে ১ কেজি ৫শ গ্রাম কম। মাংসের নামে তৈল-চর্বি ও বুড়ো বকরি, যা কারা ফটকে জবাই না করে বাজার থেকে কেনা। ডাল সরবরাহে দেখা গেছে পরিমাণ থেকে ৩০ ভাগ কম এবং ফাটা মশুর ডাল। আটা ও চাল সরবরাহে ওজনের একই ঘটনা ঘটে। ফলে যারা এই বন্দিদের মধ্যে ধনী তারা কারা অভ্যন্তরে ক্যান্টিন থেকে নাস্তা নিয়মিত ক্রয় করে খাচ্ছেন। যারা কারা অভ্যন্তরে সরকারি খাবার খাচ্ছেনা, দেখা যায় তাদেরও সরকারি খরচের হিসেবে দেখানো হয়। কারা কতৃপক্ষ সরকারি হিসেব ঠিক রেখে তাদের খাদ্য গুলো চুরি করছে। অভ্যান্তরীন খাবার এত খারাপ যে, অনেকে বাধ্য হয়ে ক্রয় করে ক্যান্টিনে খাচ্ছে। ক্যান্টিনে নিয়মিত ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে প্রায় ১৪-১৫ হাজার টাকা। এ থেকে যা লাভ হয় তার সবকিছুই বন্দিদের জন্য ব্যয় করার নির্দেশ থাকলেও, সন্ধা হলেই কারাসহকারি ও জেল সিপাহি তাদের মধ্যে ভাগ বাটরা করে নেয়। বন্দিরা আরো অভিযোগ করেছেন, কারা ক্যান্টিনে শ্রমিক বিনা মূল্যে, ও সরকারি অবকাঠামোতে এই ক্যান্টিন পরিচালিত হলেও খাদ্যের দাম ধরা হয় বাহিরের দোকান থেকে দ্বি-গুন। জোর করে এ দর আদায় করছে জেল কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়গুলো দেখার জন্য জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল নিয়মিত তদন্ত করছেন, কিন্তু বন্দিরাা বলছেন ঘোড়ার ডিম। তারা অভিযোগ করে বলেন জেলা প্রশাসক স্যার তদন্তে এলে সঙ্গে থাকেন জেল কর্তৃপক্ষের লোকজন। বন্দিরা কেউ যদি ওদের সামনে সত্য ঘটনা প্রকাশ করে তাহলে পরদিন তাদের পরতে হবে ডান্ডাবেড়ী। জেলা প্রশাসক ওদেরকে না রেখে পৃথক পৃথক ভাবে কোন বন্দির অভিযোগ শুনেন না, ফলে এ দুনীতি দিনের পর দিন, বছরের পর বছর একই অবস্থায় চলছে। জন প্রতিনিধি হিসেবে দেখ-ভালের দায়িত্বে আছেন পৌর কাউন্সিলর দ্রোপদী আগর ওয়ালা। তিনি কারাগারে এলে জেল কর্তৃপক্ষ সহ তাদের চলে অফিসে বসে মহা কীর্তন। মালামাল সরবরাহে রয়েছেন ঠিকাদার গোপাল ঘোষ ও নাসের মোহাম্মদ ফারুক। সব কিছুই চলছে এদের মিলেমিশে। এ দিকে কারা কয়েদিদের অবস্থা এখন জেল কর্তৃপক্ষের দুর্নীতিতে এ জেলা কারাগার এখন নরক পুরিতে পরিনত হয়েছে। এ কারাগারের প্রথম শ্রেণির ৭ জন ঠিকাদার থাকলেও যে কয়েক জন ঠিকাদার দূর্নীতির জন্য তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চায় না। এই কারাগারে মালামাল সরবরাহের জন্য অনেক দরপত্র গ্রহণ করা হয়। কিন্তু তাদের জানানো হয় না। ফলে একক ভাবে তাদের পছন্দের ঠিকাদার ইচ্ছানুযায়ী দর দাখিল করে জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে লুটপাটের ভাগাভাগিতে তাদের সঙ্গে বেশ জমজমাট চলে।। সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে বিবিধ মালামাল সরবরাহের পুন:দরপত্র গ্রহণ করা হয়। ঐ দরপত্রে অন্যান্য সকল ঠিকাদার গণ ঐ দরপত্রে অংশ গ্রহণের জন্য অফিসের সঙ্গে নিয়মিত খোঁজখবর রাখলেও জেল কর্তৃপক্ষ তার পছন্দের একজন ঠিকাদার ছাড়া অন্যকাউকে জানান নি। এ বিষয়ে এ কারাগারের প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার মাজেদ, নাসের, করিম,মোয়াজ্জেম, আমাদের প্রতিনিধিকে জানান সংবাদ পত্রে দরপত্র আহবানের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেও কারা কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদেরকে মৌখিক ভাবে অবগত করবেন। কিন্তু এ কারাগারে দরপত্র গ্রহণ হলেও ঐ ঠিকাদারদের অবগত করা হয়নি। এ বিষয়ে ঠিকাদারা কারাসহকারি মিজানের নিকট দরপত্র গ্রহণের তারিখ না জানানোর বিষয়টি জানতে গেলে তিনি ঠিকাদারদের উপর ক্ষীপ্ত হয়ে উঠেন। ঠিকাদাররা কারা সহকারিকে সরকারি কাজে ব্যস্ত না থেকে তারা দূর্নীতির কাজে বেশি ব্যস্ত থাকেন জানালে সিপাহি মোস্তাফিজ এক পর্যায়ে ক্ষীপ্ত হয়ে উঠেন। এ সময় কারা দপ্তরের গয়েন্দা বিভাগের সিপাহি এসে পৌছলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। এ বিষয়টি ঠিকাদাররা তত্তাবধায়ককে জানালে তিনি জানান দরপত্রের তারিখের বিষয়টি কারা সহকারিকে ঠিকাদারদের জানানোর জন্য তিনি জানান। কিন্তু কারা সহকারি ঠিকাদারদের জানান নি ,তিনি তা জানেন না। ওই অফিসে সিপাহি মোস্তাফিজ ও কারাসহকারি প্রতিদিন ওই কারাগারে কি পরিমান মালামাল চুরি করেন । ঠিকাদার সৈয়দ আব্দুল করিম জানান জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপার যদি একটি তদন্ত টিম গঠন করে এরা তা আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিবে। এ কারাগারের দূর্নীতির বিষয়টি দেখভালের জন্য ইতিপূর্বে ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ববধায়ক ছিল। সম্প্রতি ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ নিয়োগদেওয়া হয়। ফলে জেলা কারাগার টি এখন দূর্নীতির ভয়াবহ শ্রোতে ভাসছে। বিষয়টি স্থানীয় সাংসদ ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন এ কারাগারের দূর্নীতি মুক্ত ঠিকাদার ও বন্দীরা।