Tue. Jun 17th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

20228355_799973580166651_1035158759443386682_nখােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০১৭: রিপোট নিশাত:- চলমান টানা বর্ষণ, ডাকাতিয়া নদীর পানি ক্রমাগত বেড়েই চলা ও উজানের পানির চাপে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার ৬ ইউনিয়নের অন্তত ৩৫টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এ গ্রামগুলোর প্রায় এক লক্ষ মানুষ। বন্যা আক্রান্ত লোকজন ছুঁটছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে।

এদিকে, বন্যার্দুগত এসব এলাকায় ত্রাণ সামগ্রীর প্রবল সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে ডাকাতিয়া নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চলছে। বন্যা কবলিত এলাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ও অফিসেও পানি ঢুকে পড়েছে। তবে এসব এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬ ইউনিয়নের অন্তত ৩৫টি গ্রাম এখন বন্যার পানিতে ভাসছে। এগুলো হলো; সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া, সাজনপুর, তপোবন, নাইয়ারা, বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের বড়কালি, কোকালি, আলিয়ারা, আজিয়ারা, মানিক গংঙ্গা, শুভপুর, সিংগেরপাড়া, ভোমরা, ঢালুয়া ইউনিয়নের মনতলি, পুটিজলা, গাংগেরপাড়, জামুরাইল, চিওয়া, খাজুরিয়া, বেরলা, হুগলি, চরবাপাথর, ননুয়াকান্দি, লইতুপা, মৌকরা ইউনিয়নের মোড়েশ্বর, চারিতুপা, ঘোরকমুড়া, পরকরা, রায়কোট ইউনিয়নের কুকুরিখিল, গাসিয়াল, পিপড্ডা, চাঁন্দের বাগ, 20264597_799973513499991_308642162580925341_nপূর্ব বামপাড়া, চান্দুর, বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের শ্যামপুরসহ প্রায় ৩৫টি গ্রাম।

প্লাবিত হওয়া এসব ইউনিয়নগুলো ডাকাতিয়া নদীর তীর ঘেষা এবং অপেক্ষাকৃত নিন্মাঞ্চল হওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ওই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে।

পানিবন্দী উপজেলার মনতলি গ্রামের বৃদ্ধ আবুল খায়ের ও পিপড্ডা গ্রামের ফজলুল হক জানান, টানা বৃষ্টি ও ভারতের পানি এসে ডাকাতিয়ার পানি বেড়ে যাওয়ায় বক্সগঞ্জ-সাতবাড়িয়া-গুণবতি সড়কের বিভিন্ন অংশ ডুবে গেছে। নদীর পানি আগের চেয়ে বেশি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।  20292305_259504771204358_1025758237_n

এছাড়া অধিকাংশ গ্রামের অসংখ্য ঘর-বাড়িতে পানি উঠছে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার একর মাঠের ধান ও শাক-সবজির ক্ষেত। ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুর ও মৎস্য প্রজেক্টের মাছ। অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক এখন পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। ভেঙ্গে পড়েছে গ্রামীন যোগাযোগ ব্যবস্থা।

উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কাজী ইয়াছিন জানান, তাঁর ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবার এখন পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। ইউপি ভবনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পানিতে ভাসছে। এ পর্যন্ত কয়েক কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্র্রস্ত হয়েছে। তবে এ এলাকায় এখনও কোন ত্রাণসামগ্রী পৌঁছায়নি বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ বলেন, পানিবন্দী পরিবারগুলোকে খাদ্যসামগ্রী ও চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।