
খােলা বাজার২৪।। শুক্রবার, ২৮জুলাই, ২০১৭: মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়া উদ্দিন আহমেদ সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন ( ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)।মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ৯ নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়া উদ্দিন আহমেদ এর মৃত্যুতে “দৈনিক খোলাবাজার” পরিবারের পক্ষ থেকে এবং Kholabazar24.com অনলাইন পোর্টাল এর পক্ষ থেকে প্রকাশক ও সিইও মোঃ জহিরুল ইসলাম কলিম গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
দুবলা ফিসারমেন গ্রুপের চেয়ারম্যান পিরোজপুরের সন্তান সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়া উদ্দিন দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার আগে তিনি রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম এস আরেফিনের তত্ত্বাবধানে ছিলেন।
ডা. এম এস আরেফিন জানান, জিয়াউদ্দিন আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিসে ভুগছিলেন। ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি এত দিন সচল ছিলেন। তার লিভার প্রায় ৭০ শতাংশ অকেজো হয়ে পড়ে। গত দুই মাসে তিনি কয়েকবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি কিডনি, রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন। তার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট জরুরি হয়ে পড়েছিল। দেশে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের ব্যবস্থা নেই। এ অবস্থায় চিকিৎসকরাতাকে বিদেশ পাঠানোর পরামর্শ দেন। সেই মোতাবেক তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর ধরে জিয়াউদ্দিন লিভার সিরোসিসে ভুগছেন। প্রায়ই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তেন। সর্বশেষ ১ জুলাই অসুস্থ হওয়ার পর তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়।
এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মেজর জেনারেল (অব.) কে এম সফিউল্লাহ, বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব সাইফুজ্জামান শিখরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও মুক্তিযোদ্ধারা তাকে হাসপাতালে দেখতে যান এবং তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরের সুন্দরবন অঞ্চলের সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন জিয়াউদ্দিন। মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্সের অধীনে প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক হিসেবে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। বীরত্বের সঙ্গে সুন্দরবন অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত রাখার জন্য তাকে সুন্দরবনের মুকুটহীন সম্রাট বলা হয়। সুন্দরবন রক্ষার জন্য তিনি সুন্দরবন বাঁচাও নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। কখনও জেলেদের নিয়ে, কখনও প্রশাসনের সহায়তায় ওই অঞ্চলে ডাকাত নির্মূলে তিনি ভূমিকা পালন করেন। ডাকাতরা কয়েকবার তাকে হত্যার চেষ্টা করে।