খােলা বাজার২৪।।সোমবার ,০৭ আগস্ট, ২০১৭: লেখালেখি শুধু সাহিত্যিক, সাংবাদিক বা কবিদের কাজ? মোটেই না। এটি এমন এক দক্ষতা, যা আমাদের পড়াশোনা তো বটেই, পেশাগত জীবনেও কাজে লাগে। সহজাত প্রতিভার একটি ব্যাপার থাকলেও নিয়মিত অনুশীলনে কিন্তু যে কেউ সৃজনশীল লেখা আয়ত্তে নিয়ে আসতে পারে। এ জন্য শুধু যে কল্পনাশক্তি কাজে লাগাতে হবে তা নয়, আছে কিছু টিপসও; যা কাজে লাগালে বাড়বে শব্দভাণ্ডার, শক্তিশালী হবে বাক্য গঠন।
লেখো, লেখো আর লেখো
অন্য ১০টা কাজের মতো লেখালেখিতে দক্ষ হয়ে ওঠার জন্য দরকার নিয়মিত লেখা। ভালো হোক, খারাপ হোক—প্রতিদিন লিখতে হবে কিছু না কিছু। সেই লেখাটি হতে পারে দিনের ঘটে যাওয়া মজার ঘটনা, দুঃখের ঘটনা, প্রিয় বইয়ের রিভিউ কিংবা পড়াশোনার কোনো একটি চ্যাপ্টারের ওপর নিজের চিন্তাভাবনা। এ লেখাগুলো ওয়ার্ডপ্রেস বা ব্ল্লগস্পটে নিজের সাইটে আপলোড করে ফেললে তুমিও হয়ে যাবে পেশাদার ব্লগার।
পড়ার বিকল্প নেই
লেখক হতে হলে পড়ার বিকল্প নেই। তোমার নিজেরই যদি পড়ার প্রতি আগ্রহ না থাকে, তাহলে তুমি কিভাবে এমন কিছু লিখবে, যা পড়ে অন্যরা আনন্দ পাবে? একজন ভালো লেখক একজন ভালো পাঠকও বটে। নিয়মিত পড়লে শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়, দখল আসে ভাষার ওপর, খুলে যায় কল্পনার হাজারটা দুয়ার।
তাই যত বেশি পড়বে, তোমার লেখার হাতও হবে ততটা ক্ষুরধার।
সঙ্গে থাক নোটবুক
সব সময় সঙ্গে একটা জার্নাল বা নোটবুক রাখা উচিত। চলতে-ফিরতে এমন অনেক ঘটনা দেখি, যা হতে পারে মজার একটি লেখার রসদ কিংবা নতুন কিছুর আইডিয়া। সঙ্গে সঙ্গে না লিখে রাখলে অন্য চিন্তার ভিড়ে তা হারিয়ে যাবেই। সে জন্য তোমার কাজ হলো আইডিয়া বা ঘটনা দেখা মাত্র তা টুকে ফেলা। কাগুজে নোটবুক বহনে সমস্যা হলে স্মার্টফোনে ইনস্টল করে নিতে পারো গুগল কিপ বা সমনোট অ্যাপ।
পছন্দের বিষয়
হতে পারে তোমার প্রিয় বিষয় হরর গল্প কিংবা তোমার আগ্রহ থাকতে পারে ননফিকশনের প্রতি অথবা কোনো কমিক বা টিভি সিরিয়াল। যে বিষয়ে তোমার বেশি আগ্রহ, তা নিয়ে দেখবে ঝরঝর করে লিখতে পারছ। আর যাতে আগ্রহ নেই, তা নিয়ে ভালো কিছু লেখা কি আদৌ সম্ভব? আবার দেখা গেল এত দিন একটি বিষয়ের ওপর হয়তো তোমার কোনো আগ্রহ ছিল না, একটা কিছু লিখতে গিয়ে দেখা গেল সেটা সম্পর্কেও তোমার জানতে হচ্ছে, আর তখনই দেখলে আগ্রহ না থাকা বিষয়টিও বেশ মজার। তাই নতুন বিষয়ে আগ্রহী হতেও লেখালেখিটা টনিকের কাজ করে।
ফিরে তাকাও
তোমার লেখাটির দিকে ফিরে তাকাও বারবার। বারবার পড়ে দেখো কোনো অসংগতি আছে কি না। খেয়াল রাখতে হবে বানান ও ব্যাকরণে। লেখাটি যারা পড়বে, তাদের বয়সের কথাও ভাবতে হবে। সে অনুযায়ী শব্দ চয়ন করতে হবে। লেখার সহজবোধ্যতার দিকেও নজর দিতে হবে। অহেতুক কঠিন শব্দ ব্যবহার করতে যেয়ো না। প্রতিটি বাক্যের মধ্যে সম্পর্ক ঠিক রাখাও জরুরি। সম্পর্কটা হতে পারে কালের। কোনো প্যারাগ্রাফের একটি বাক্য বর্তমান কালের হলে পরের বাক্যটিই আবার অতীত কালের যেন না হয়। এ ছাড়া একটি লাইনের পর আরেকটি লাইন যেন হুট করে শুরু না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখা চাই। লাইন ও প্যারাগ্রাফের মধ্যে আন্ত সম্পর্ক না থাকলে বিষয়বস্তু যতই ভালো হোক, তা পড়তে কিন্তু মজার হয় না।