খােলা বাজার২৪।। সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসা কমেছে। তবে সেটি একেবারে বন্ধ হয়নি।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) এক মুখপাত্র বিবিসিকে এমন তথ্য জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘তাদের (রোহিঙ্গা) আগমন যে একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে, সেটা এত দ্রুত বলা যাচ্ছে না।’
গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যের ৩০টি পুলিশ ও একটি সেনাক্যাম্পে হামলা হয়। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ বা আরসা) এই হামলার দায় স্বীকার করে। এর পর থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের গ্রামে অভিযান চালায় মিয়ানমারের সেনাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় স্থানীয় বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা।
ওই অভিযানের পর থেকে এখন পর্যন্ত চার শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে মিয়ানমার সরকার। তবে রোহিঙ্গাদের দাবি, নিহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে পালিয়ে আসার সময় নাফ নদে ডুবে শতাধিক রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু নিহত হয়েছে।
সংঘর্ষের তিন সপ্তাহ পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শক অং সান সু চি দাবি করেন, রাখাইনে ১৫ সেপ্টেম্বরের পর সেনা অভিযান বন্ধ হয়েছে।
তবে বিবিসিসহ বেশ কিছু গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা সেই দিন থেকেই সু চির দাবি নাকচ করে আসছে।
আইওএমের মুখপাত্র পেপি সিদ্দিক বিবিসিকে বলেন, ‘গত দুদিনে নতুন করে খুব কম সংখ্যক (রোহিঙ্গা) এসেছে।’
গত শনিবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে জানানো হয়, নতুন করে রোহিঙ্গাদের আগমন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
বিজিবির কমান্ডার এস এম আরিফুল ইসলাম বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘গত কয়েক দিনে কোনো রোহিঙ্গাকে প্রবেশ করতে দেখেনি আমাদের রক্ষীরা।’
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্যাতন শুরুর পর জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে চার লাখ ২০ হাজারে বেশি রোহিঙ্গা।
এদিকে, মিয়ানমারের এ ধরনের আচরণে নড়েচড়ে বসেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। তাদের পক্ষ থেকে এর নিন্দা জানানোসহ রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু এ সেনা অভিযান বন্ধে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মিয়ানমার সরকার।