খােলা বাজার২৪।।শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭: গল্পটির সাথে আওয়ামী লীগের হাল আমলের পরিবেশ-পরিস্থিতির কোনো মিল নেই। কারণ দলটি মনে করছে, তাদের নেত্রী এখন সব দিক থেকে অপ্রতিরোধ্য। তার সুনাম সুখ্যাতি প্রভাব প্রতিপত্তি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিস্তার লাভ করেছে। সম্প্রতি রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতা এবং তার সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের জন্য তিনি আগামীতে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাবেন বলে সরকারদলীয় লোকজন দশমুখে প্রচার-প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশের রাজনীতিও এখন পুরোপুরি সরকারনিয়ন্ত্রিত। আওয়ামী লীগ মনে করে, আগামীর সংসদ নির্বাচনে তারা বিগত ৫ জানুয়ারির চেয়েও অধিক সফলতার সাথে বিজয় ছিনিয়ে আনবে এবং দেশের সব বিরোধী দল ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় হোক সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মর্জিমাফিক নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধ্য হবে।
সরকারি দলের উপরোল্লিখিত আত্মবিশ্বাসের সাথে সাম্প্রতিক সময়ে চাউর হওয়া আষাঢ়ে গল্পটি যেমন বেমানান, তেমনি দলটির কিছু শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বক্তব্য ও বিবৃতি আরো বেমানান। তারা প্রায়ই জোরগলায় বলে থাকেন, তাদের নেত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরা এই ধরনের বক্তব্যের প্রতিবাদ না করে কেন হাততালি দেন, তা আমার কাছে রীতিমতো বিস্ময়কর বোকামি বলে মনে হয়। কারণ, প্রধানমন্ত্রীকে যদি হত্যা করা হয় তবে হত্যাকারীরা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে চুম্বনে সিক্ত করে মোশতাকের মতো ক্ষমতার মসনদে বসিয়ে দেবেন না। কিংবা জামাই আদরে পালকিতে করে সীমান্তের ওপারে মধুচন্দ্রিমায় পাঠাবেন না। বরং সর্বশক্তি নিয়োগ করে তাদের পাকড়াও এবং নির্মূল করার চেষ্টা চালাবেন। এ অবস্থায় শীর্ষ নেতারা যদি বলতেন, আমাদের সবাইকে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে তবে বিষয়টি বেমানান হতো না। কিন্তু তারা সেটি না বলে শুধু শেখ হাসিনার নাম বলে কী ইঙ্গিত দিচ্ছেন তাই আজকের নিবন্ধে আলোচনার চেষ্টা করব।
কেবল শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা হচ্ছে এমন বক্তব্য দেয়ার ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় দিকই রয়েছে। যদি ইতিবাচক অর্থে ধরি তবে বলা যায় যে, সারা দেশে নেত্রীর ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। ফলে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কথা বললে জনগণের আবেগ ও অনুভূতিতে আঘাত লাগবে। এতে করে জনপ্রিয়তা বাড়বে। অন্য দিকে, নিজেদের জনপ্রিয়তা না থাকা এবং নানা ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে কারো কারো বিরুদ্ধে গণরোষ সৃষ্টি হওয়ায় নেতৃবৃন্দ নিজেদের হত্যাকাণ্ডের কথা নির্ভয়ে বলতে পারেন না। কারণ ও কথা শুনে মুখপোড়াপ্রকৃতির লোকজন কী সব কুকথা বলা শুরু করবে এবং খুশিতে বিরূপ অট্টহাসি দেয়া শুরু করবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ফলে নিজেদের দায়দায়িত্ব লুকিয়ে রেখে তারা দলীয় প্রধানকে ঢাল বানিয়ে গলাবাজির প্রতিযোগিতায় আপন কুরসি টিকিয়ে রাখার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিষয়টি যদি নেতিবাচক হিসেবে কল্পিত হয়, তবে একথা স্পষ্ট, বর্তমান সরকার ও দলের যাবতীয় দায়দায়িত্ব এককভাবে শেখ হাসিনার। তিনিই সব মন্দ কিছুর জন্য দায়ী। দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো তোলা হয় তা মূলত বায়বীয় এবং লোকজন না জেনেই এমনটি করে। কারণ, দলীয় নেতাকর্মীরা স্বভাবে এবং চরিত্রে সাধু-সন্ন্যাসীপর্যায়ের লোক। তারা ভাজা মাছটি উল্টিয়ে খেতে পারেন না। তারা কোনো মন্দ কাজ তো দূরের কথা ওই সবের গন্ধও সহ্য করতে পারেন না। কেউ কেউ তো এত বেশি শ্বেতশুভ্র ও ধবল যে মন্দ কাজের কথা শুনলেই তারা বমন করে দেন। এসব সাধু-সজ্জন লোকদের দিয়ে তাদের নেত্রী নিতান্ত জোরজবরদস্তি করে নানান মন্দ কাজ-কারবার করিয়ে নেন। ফলে জনরোষ কেবল তাদের নেত্রীকে ঘিরেই। কারণ জনগণ জানে যে, তারা কতটা সাত ধোয়া তেঁতুলের বিচি এবং ধোয়া তুলসী পাতার মতো পবিত্র। কাজেই শাস্তি যদি পেতে হয় তো নেত্রীই পাবেনÑ তারা নয়। এজন্য প্রকাশ্য জনসভাগুলোয় নিজেদের বাদ দিয়ে শুধু নেত্রীর হত্যার ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে কথাবার্তা বলে জনগণকে মরমি বার্তা পৌঁছে দেয়া হয়।
উপরোল্লিখিত দুটি কারণ ছাড়াও তৃতীয় একটি কারণ থাকতে পারে। আর তা হলো দলীয় প্রধানকে ভয় দেখিয়ে ম্রিয়মান করে দেয়া। তাকে ভয়ের বেড়াজালে আবদ্ধ করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে নেয়া। কারণ এ কথা সবাই জানে, মানুষ নির্বিশেষে মৃত্যুকে ভয় পায়। তারা বেঁচে থাকতে চায়। কারো সামনে অহরহ মৃত্যুর প্রসঙ্গ তোলা হলে তার সচরাচর কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়Ñ চিন্তা, উদ্দীপনা, খানাপিনা, আহার, নিদ্রা বা বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটে। ক্ষেত্রবিশেষে মৃত্যুভয় মানুষকে মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ করে তোলে। কাজেই প্রবল ক্ষমতাধর কাউকে যদি মৃত্যুভয়ে ভীত করে তোলা যায় তবে তার চার পাশের দালাল, লুটেরা, স্বার্থবাদী চরিত্রহীনদের উল্লাসের সীমা-পরিসীমা থাকে না। ইচ্ছেমতো ক্ষমতা এবং ক্ষমতাধরকে একই সাথে এবং একই বৃত্তে ব্যবহার করা যায়। এবার শিরোনাম প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু করা যাক। ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে এই মর্মে সংবাদ প্রকাশিত হয় যে, গত ২৪ আগস্ট, ২০১৭ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার একটি চেষ্টা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিযুক্ত কিছু সদস্য বাংলাদেশের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেএমবির সাথে মিলেমিশে হত্যাকাণ্ডটি যৌথভাবে সংগঠিত করার ষড়যন্ত্র করেছিল। গণমাধ্যমের প্রতিবেদক আরো অনেক কিছু লিখেছেন, যাতে করে পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা নষ্ট করে পানি ঘোলা করে দেয়া যায়। বাংলাদেশের কয়েকটি অনলাইন পত্রিকা উপরোল্লিখিত আষাঢ়ে গল্পের ফাঁদে পা দিয়ে নিজেদের অজ্ঞতা ও অপারগতাকে নিন্দাবাদ জানিয়ে সংবাদটি সগর্বে ছাপিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করতে থাকেন।
উল্লিখিত খবরকে সত্যি ঘটনা মনে করে একশ্রেণীর সরকার সমর্থকের বিবেক স্তব্ধ হয়ে আবেগের তাড়নায় প্রবলতর বন্যা দেখা দেয়। তারা ঘটনার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক বিবেচনায় না এনে সমানতালে একে অপরের সাথে পাল্লা দিয়ে সংবাদটি প্রচার করতে থাকেন। প্রথমত, স্বভাববশত তারা ভারতকে নিজেদের অকৃত্রিম বন্ধু এবং একটি বিশেষ ধর্মের লোকজনকে নিজেদের জানি দোস্ত মনে করেন। কাজেই খবরটি যেহেতু ভারতীয় মিডিয়ার এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকটি যেহেতু জানি দোস্ত গোত্রের, কাজেই সেখানে সন্দেহ করে সময় নষ্ট করার নির্বুদ্ধিতা তারা দেখাতে চাননি। কিন্তু তারা যদি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রকৃত কারণ, নেপথ্যের গডফাদার অথবা মুক্তিযুদ্ধকালীন এবং মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী জাসদ, সর্বহারা ইত্যাদি গঠনে এবং বঙ্গবন্ধু সরকারের পতনের নেপথ্যে অকৃত্রিম বন্ধু ও জানি দোস্তদের ইতিহাস অধ্যয়ন করতেন তাহলে দেশ-জাতির তুলনায় তাদের নিজেদের কল্যাণই বেশি হতো। উল্লিখিত খবরটি যারা যে উদ্দেশ্যে প্রচার করেছিলেন, তাদের মনোষ্কামনা শতভাগ পূর্ণ হয়েছে। কারণ খবরটি সরকারসমর্থক ও সরকারবিরোধীরা সমানভাবে লুফে নিয়েছেন। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বিব্রতবোধ করে এবং পত্রপত্রিকায় প্রেসনোট পাঠিয়ে একথা বলতে বাধ্য হয়, খবরটি সঠিক নয় কারণ ওই ধরনের ঘটনা আদৌ ঘটেনি। সরকারদলীয় লোকজন যদি একটু বিচারবুদ্ধি খাটাতেন তাহলে সহজেই বুঝতে পারতেন যে, খবরটি ভুয়া। তারা যদি ভুয়া খবরটির প্রতিবাদ জানাতেন তবে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্যোগী হয়ে প্রেসনোট দিতে হতো না। খবরটি প্রচারিত হওয়ার নেপথ্য কারণ যদি সরকারদলীয় লোকজন বিচার-বিশ্লেষণ করতে পারতেন তবে দেশের রাজনীতিতে খানিকটা হলেও স্থিতিশীলতা আসত।
আমার নিজস্ব মূল্যায়নে আমি দেখেছি, ইদানীং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নড়াচড়া দেখলেই আওয়ামী লীগ সরকার সম্পর্কে দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের মনোভাব বোঝা যায়। মমতা যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিংবা বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী অবস্থান নেন সে ক্ষেত্রে ধরে নেয়া হয় যে, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার বাংলাদেশকে সাহায্য করতে চাচ্ছেন। অন্য দিকে, মমতা যদি শেখ হাসিনার প্রশংসা শুরু করেন তবে ধরে নিতে হবে যে, গণেশ উল্টে গিয়েছে। অতি সম্প্রতি মমতা রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। অন্য দিকে দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্টতই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মিয়ানমারের নেত্রী সু চির সাথে হাত মিলিয়েছেন। শুধু কি তাই! সু চির হাতকে শক্তিশালী করার জন্য রোহিঙ্গা সমস্যা শুরু হওয়ার পর মোদি উপযাচক হয়ে মিয়ানমারে উড়ে গিয়ে সু চির সাথে সাক্ষাৎ করে নিজের সমর্থন পুর্নব্যক্ত করেন এবং তার সাথে তাল মিলিয়ে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠক বর্জন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ মুখে একাধিকবার ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ সম্পর্কে বিষোদগার করেছেন। জাতিসঙ্ঘে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ভারত ও চীনের অবস্থানে নিজের অসন্তুষটি ব্যক্ত করেছেন। এ অবস্থায় হঠাৎ করে ভারতীয় পত্রিকায় শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টার খবর কেন প্রকাশিত হলো তা বোঝার জন্য খুব বেশি পাণ্ডিত্যের দরকার আছে বলে আমার মনে হয় না। আওয়ামী লীগের লোকজন অতীত রাজনীতির ইতিহাস ঘাঁটাঘাঁটি করলে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্রের সন্ধান পেতেন। তারা যদি নিকট অতীতের ইন্দিরা গান্ধী হত্যাকাণ্ড, বঙ্গবন্ধু ও জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডসহ সুদূর অতীতের জুলিয়াস সিজার হত্যাকাণ্ডগুলো বিশ্লেষণ করেন তবে নি¤েœর ‘কমন মিস্টেক’ এবং জেনারেল ফ্যালাসিগুলো দেখতে পাবেনÑ
নিহত ব্যক্তি তার আপন গরজে হত্যাকারীকে নিজ গৃহে আশ্রয় দিয়েছিলেন। প্রত্যেক হত্যাকাণ্ডের পেছনে একটি সুগভীর রাজনৈতিক চক্রান্ত ছিল। কোনো বিরোধী লোক বা শত্রুপক্ষ হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল না। নিহত ব্যক্তির একান্ত আপনজন এবং সর্বাপেক্ষা বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি বা গোষ্ঠী হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্র দীর্ঘ দিন ধরে সুকৌশলে তৈরি করেছিল। হত্যাকাণ্ড ঘটার সাথে সাথে যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হবে তার ফসল নিজেদের গোলায় তোলার জন্য চক্রান্তকারীরা অনেক আগেই মঞ্চ সাজিয়ে রাখেন। রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সাধারণত রাজনৈতিক কারণে হয়ে থাকে এবং সময় ও সুযোগমতো নিহত ব্যক্তির সহযোদ্ধারা কর্মটি ঘটিয়ে থাকেন। বাইরের লোক এসে প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে সুবিধা করতে পেরেছেÑ এমন একটি উদাহরণও আমার জানা নেই। উপরোল্লিখিত সূত্রগুলো বিশ্লেষণ করলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করা হতে পারে বা হত্যাচেষ্টা হয়েছে, এমন কোনো লক্ষণ দিব্যদৃষ্টিতে ধরা পড়ে না। কারণ, তার নিরাপত্তাব্যবস্থা তিনটি স্তরে সাজানো, যেখানে রাজনীতিসংশ্লিষ্ট কোনো লোকের চুল পরিমাণ প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা নেই। প্রধানমন্ত্রী তার নিজের চার পাশে এমন এক নিজস্ব রক্ষাব্যুহ তৈরি করে রেখেছেন, যা কেবল তার আপনজনেরা বুঝতে পারেন। বাইরের লোক যেমন তা বুঝতে অক্ষমÑ তেমনি আপনজনেরা জানেন যে, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছে হলে সবাই তার কাছে অবাধে যেতে পারেন এবং তিনি ইচ্ছে না করলে কেউ তার ত্রিসীমানায় যাওয়া তো দূরের কথাÑ উঁকি মারতেও সক্ষম নন।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তার আপন আলয়ে দলীয় নেতাকর্মী-সরকারি আমলা বা বন্ধু-আত্মীয় পরিজনের মধ্যে এমন একটি আবহ সৃষ্টি করেছেন যারা প্রধানমন্ত্রীর বাইরে কথা বলা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, চিন্তা করা, স্বপ্ন দেখা অথবা আহার বিহারের কথা কল্পনাও করেন না। তার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো বা তাকে বাদ দিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব কল্পনা তো দূরের কথা তার সাময়িক অনুপস্থিতির কথা ভাবলে তাদের অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে। এ অবস্থায় কে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার কথা ভাববে তা এই বান্দার মাথায় ঢুকছে না।
ভারতীয় পত্রিকা যে খবর প্রচার করেছে তা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক এবং গোয়েন্দাচক্রের একটি চিরায়ত-অপচেষ্টা বৈ অন্য কিছু নয়। বাংলাদেশে যারা খবরটি দেখে আনন্দে আত্মহারা অথবা শোক, বেদনা এবং আবেগের বশবর্তী হয়ে আহাজারি করেছেন তারা সবাই ঘটনার পূর্বাপর গভীরভাবে চিন্তা করেননি বলেই আমি বিশ্বাস করি।
কপিঃ নয়াদিগন্ত