Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

1507373057

খােলা বাজার২৪।।শনিবার, ০৭ অক্টোবর, ২০১৭:  সংস্কৃতি ও বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষায় মেধা বিকাশের লক্ষ্যে দেশের ১০টি কেন্দ্রীয় কারাগারের ৯শ’ শিশুকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাক- শিক্ষা প্রদান করেছে। এই শিক্ষা গ্রহণকারী শিশুরা কারাগার থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর তাদের শিক্ষা জীবনে প্রভূত সহায়তা পাচ্ছে।
কারাগারগুলোতে শিশুদের যে সব বিষয়ে শিক্ষাদেয়া হচ্ছে, তা হলো নাচ, গান, ব্যায়াম, ছড়া, অভিনয়, গল্প, বাংলা পঠন ও লিখন, গণিত, চারু ও কারু, খেলা, পরিবেশ ও স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, নিরাপত্তা ও সৃজনশীলতা। প্রতিদিন কারাগারগুলোতে এ সব বিষয়ে আড়াই ঘন্টা করে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।
এনসিটিবি’র কারিকুলাম মোতাবেক ‘শিশুর বিকাশে প্রারম্ভিক শিক্ষা’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে একাডেমি কারাগারের শিশুদের এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। গাজীপুরের কাশিমপুর, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, যশোর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশালসহ দশটি কারাগারে এই প্রকল্পের কাজ চলছে। চার বছরের শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের শিশুদের এ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে একাডেমি।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর সংশ্লিস্ট বিভাগের কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম চৌধুরী বাসস’কে এ সব তথ্য জানান। তিনি জানান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে কারাগারগুলোতে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে শিশু একাডেমি। কার্যক্রম বাস্তবায়নের করা হচ্ছে দেশের দশটি কেন্দ্রীয় কারাগার অভ্যন্তরে ‘প্রাক-শিক্ষা কেন্দ্র’ স্থাপনের মাধ্যমে । কেন্দ্রগুলোতে শিক্ষা উপকরণ হিসেবে প্রকল্প থেকে বই, খাতা, স্লেট, পেনসিল, কলম, চক, খেলনা, ব্লাকবোর্ড, ফ্লোরমেট সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া জেলা শিক্ষা অফিস থেকে দেয়া হচ্ছে, শিক্ষক সহায়িকা, আমার বই, এসো লিখতে শিখি, গল্পের ও ছড়ার বই, বিভিন্ন চার্ট, ক্লাস কার্ড ইত্যাদি।
প্রকল্পের অধীনে কেন্দ্রগুলোতে নিয়োগ দেয়া শিক্ষকরা এ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রকল্পের অধীনে প্রতিমাসে শিশুদের অভিভাবকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হচ্ছে।
শিশু একাডেমি থেকে জানান হয়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ২০১০ সালের মার্চে এবং অন্যান্য ৯টি কারাগারে ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে কার্যক্রমের অধীনে শিক্ষা দেয়া চালু হয়। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত্র কার্যক্রমের আওতায় মোট ৮শ’ শিশুকে এবং চলতি মাসে বিশেষ কার্যক্রম হিসেবে ১শ’ শিশুকে চিত্রাঙ্গণ প্রতিযোগিতায় অংশ করানো হয়। প্রকেল্পর প্রথম পর্যায়ের কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ সব শিশুদের শিক্ষা দেয়া হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ অব্যাহত রয়েছে।
কার্যক্রমের আওতায় প্রথম বারের মতো সম্প্রতি আটটি কারাগারে শিশুদের মধ্যে চিত্রাঙ্গণ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন কারাগারে শতাধিক শিশু অংশ নেয়। তাদের মধ্য থেকে বিচারকরা বাছাই করে ৪২টি ছবি পাঠান ঢাকার শিশু একাডেমিতে। এ সব ছবি থেকে বিচারকরা তিনটি চিত্রকর্মকে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করে। এতে কুমিল্লা কারাগারের রুপা আক্তার প্রথম,কেন্দ্রীয় কারাগারের মুক্তা দ্বিতীয় ও কাশিমপুর কারাগারের শান্ত তৃতীয় পুরস্কার লাভ করে। তাদের ঢাকায় এনে বিশ্ব শিশু দিবসে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমির পরিচালক শিশু সাহিত্যিক আনজির লিটন বাসস’কে বলেন,কারাগারে অবস্থানকারী শিশুদের মধ্যেকার অনেক শিশু দীর্ঘদিন মায়ের সাথে কিংবা বিভিন্ন কারনে অবস্থান করছে। এ সব শিশুদের সংস্কৃতি ও অন্যান্য শিক্ষায় মেধাবী হিসেবে গড়ে তুলতে তাদের প্রাক শিক্ষা প্রদানের জন্য বর্তমান সরকার এই কার্যক্রম শুরু করেছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অর্থায়ন করা হচ্ছে এবং একাডেমি এই কার্যক্রম অত্যন্ত শৃংখলার সাথে বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন,এই কার্যক্রমের অধীনে শিক্ষা গ্রহণকারী শিশুরা কারাগার থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর তাদের শিক্ষা জীবনে প্রভূত সহায়তা পাচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে এই প্রকল্পের কাজ অব্যাহত থাকবে।