খােলা বাজার২৪।।সোমবার, ১৬ই অক্টোবর, ২০১৭: পদত্যাগ করাতেই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, জোর করে সন্ত্রাসী কায়দায় জালিয়াতির মাধ্যমে প্রধান বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য করার পর এখন চুড়ান্ত পদক্ষেপ পদত্যাগ করাতে এসব অভিযোগ তোলা হয়েছে বলে জনগণ বিশ্বাস করে। রাষ্ট্রপতি যদি প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এত অভিযোগ পেয়েই থাকেন তাহলে তিনি সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদদ প্রয়োগ করলেন না কেন এই প্রশ্ন এখন আইনাঙ্গনে ঘুরপাক খাচ্ছে। সর্বোচ্চ আদালতের সর্বসম্মত রায়ের পর সুপ্রিম জুডিশিয়ার কাউন্সিল পুর্নবহাল হওয়ার কথা। নিয়ম হলো, প্রধান বিচারপতির কিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উঠলে অভিযোগগুলো রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের জুডিশিয়াল বিভাগে তদন্তের জন্য পাঠাবেন। তদন্ত শেষে যদি প্রমাণিত হয় তাহলে বিচারপতি অপসারন করবেন, আর যদি প্রমাণিত না হয় তিনি পদে বহাল থাকবেন।
“রাষ্ট্রপতি এ ধরণের ব্যবস্থা না নিয়ে তিনি কেন আপিল বিভাগের অন্য বিচারপতিদের নিয়ে বৈঠক করে অভিযোগ শোনালেন তা এখন মানুষের বুঝতে বাকী নেই।”
তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ তিনি দেশে থাকতে এসব অভিযোগ তোলা হলো না কেন? আর এমব অভিযোগ তো মনে হচ্ছে অনেক পুরোনো। প্রধান বিচারপতি বিদেশ যাওয়ার পূর্ব মুহুর্তে যে বিবৃতি জাতির সামনে তুলে ধরেছেন সেই অস্থিরতা থেকেই সরকার এখন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এত অভিযোগের নাটক সাজাচ্ছেন। তা জনগণ ঠিকই বুঝে।
আবার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার যে বিবৃতি দিয়েছেন সেটি ইতিহাসের নজির বিহীন ঘটনা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আবার গতকাল আইন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সুপ্রীম কোর্টের রেজিষ্ট্রার জেনারেলসহ সুপ্রীম কোর্ট প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পূর্বে বলেছিলেন-সুপ্রীম কোর্টের প্রশাসনের রদবদল শুধুমাত্র প্রধান বিচারপতির এখতিয়ার। তাহলে প্রধান বিচারপতির বক্তব্য অনুযায়ী আইন মন্ত্রণালয়ের এই প্রজ্ঞাপনও বেআইনী।
“সুতরাং এখন আদালত প্রাঙ্গনে যা ঘটছে তা হচ্ছে সরকার প্রধানের একক কর্তত্বে বিচার বিভাগকে অধীন করার জন্য যাবতীয় আয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর অদ্বিতীয় স্বৈরাচার হওয়ার পথে সকল কাঁটা সরাতেই এতো সব নির্লজ্জ দুর্বৃত্তপনা।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশে বেআইনি কর্মকান্ডের অতি ক্ষমতাধর’রা এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে, এরা এখন ভয়ঙ্কর বেপরোয়া। দলীয় সংকীর্ণতার বদ্ধকুপে তারা মন্ডুকনীতি গ্রহণ করে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটিকে মৌরসীপাট্টা করে নিজেদের জমিদারিতে পরিণত করেছেন। তবে এই জমিদারি উচ্ছেদের জন্য জনগণ এখন সংঘবদ্ধ। জনগণের ধুমায়িত বহ্নির উত্তাপ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনগণই হচ্ছে মহাজন, তারাই কড়াই গন্ডায় এই অবৈধ দখলদারদের সকল ঋণ আদায় করে ছাড়বে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবুল কালাম আজাদ, মুনির হোসেন, অানোয়ার হোসাইন প্রমুখ।