Sat. Aug 16th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। রবিবার, ২২ অক্টোবর ২০১৭: ৩টি ক্ষেত্রে প্রতিটি নাগরিকের যুদ্ধ করা অপরিহার্য্য। তাহলো- দেশ, জাতি ও ধর্ম। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশে উক্ত ৩টি ক্ষেত্রই আক্রান্ত হয়েছে। প্রথমত, মায়ানমার তাদের রাখাইন রাজ্যের আদি অধিবাসী রোহিঙ্গাদেরকে পুশব্যাক করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত করেছে।

রোহিঙ্গারা নিরূপায় হয়ে বাংলাদেশ সীমানায় প্রবেশ করেছে। দ্বিতীয়ত, মায়ানমারের মগজান্তা আরাকানের ইতিহাস-ঐতিহ্য অগ্রাহ্য করে রোহিঙ্গাদেরকে বাঙ্গালি হিসেবে হত্যা করছে। তাদেরকে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী বলেছে। এতে বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বার অবমাননা হয়েছে। রোহিঙ্গারা প্রাচীনকাল থেকেই বাংলাভাষা চর্চা করছে।

১৯০৭ সালে ড. হরপ্রশাদ শাস্ত্রী আরাকান থেকেই বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদ আবিস্কার করেন। এর মধ্যযুগীয় কবি সৈয়দ আলাওল, দৌলত কাজী ও কোরেশি মাগন ঠাকুরসহ বহু লেখক আরাকানের সভাসদ ছিলেন। সুতরাং রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী নয়, সেদেশের স্থায়ী বাসিন্দা। তাাদের ভাষা একটু ভিন্ন হলেও তারা নিঃসন্দেহে বাঙ্গালি। বাংলাদেশেও বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষা ভিন্ন। তৃতীয়ত, রোহিঙ্গারা সবাই মুসলিম ও হিন্দু। বাংলাদেশেও এ দু’ধর্মের অনুসারী সংখ্যাগরিষ্ঠ।

মায়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা তাদের বিরূদ্ধে ধর্মীয় আগ্রাসন শুরু করেছে।মায়ানমারের মগজান্তার মানবতাবিরোধী আচরনে লাখ লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশের জন্য কঠিন বোঝা হয়ে দাড়িয়েছে। এটি আর মায়ানমারের নিজস্ব বিষয় নয়, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে স্পষ্ট আঘাত। তাদের এ অমানবিক আচরনে বিশ্ববিবেক জাগ্রত হয়েছে। বিশ্ববাসী ঘাতক মগজান্তাকে ধিক্কার জানাচ্ছে। কিন্তু কতিপয় অশুভ পরাশক্তি জুজুর ভয়ে সরাসরি সামরিক সাহায্যে এগিয়ে আসছেনা। এখনই এর প্রতিবাদ না করলে, পৃথিবীতে বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বার অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। তাই বাংলাদেশের ১৬কোটি নাগরিকের জন্য অনিবার্য্য হয়েছে, বিশ্ববিবেকের সমর্থন কাজে লাগিয়ে মগজান্তাকে উচিত শিক্ষা দেয়া। রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইন মুক্ত করা ও সেখানে বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বার বিকাশ সাধন করা।

১৯৭১ সালে বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালিন সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালির ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ও ৩০লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি লাখো শহীদকে বাদ দিয়ে মাত্র ২লাখ মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত করেননি। তাঁর আদর্শ মতে, আমরা বাংলাদেশের ১৬কোটি নাগরিক সবাই মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ প্রজন্ম। আমরা সার্বভৌমত্ব, বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বা ও ধর্ম রক্ষায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের উচিত, ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী মগজান্তা থেকে রাখাইন মুক্ত করা।

তা বাংলাদেশের অধিভুক্ত করে আয়তন বৃদ্ধিসহ সুসংহত সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করা। এতে বিশ্বে বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বার বিকাশ ঘটবে। আমরা ১৬কোটি নাগরিক নতুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা বিবেচিত হব।শিক্ষানবিস আইনজীবী, ঢাকা।

অন্যরকম