খােলা বাজার২৪। বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৭: আগামী ৭ই নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি’ দিবসে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আগামী সপ্তাহে কক্সবাজার যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো জানিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ৭ই নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি’ দিবস যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালনের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দলের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য শিগগিরই অনুমতি চেয়ে চিঠি দেবে বিএনপি।
এদিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শরণার্থী রোহিঙ্গা জনগণের অমানবিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য আগামী সপ্তাহে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কক্সবাজারের উখিয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর অবর্ণনীয় নির্যাতন, গণহত্যা, ধর্ষণ ও ঘরে অগ্নিসংযোগের কারণে নিজ ভূমি ছেড়ে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা জাতিভুক্ত মানুষের বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় গ্রহণের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় সভায়।বিতাড়িত রোহিঙ্গা অসহায় শিশু, নারী, পুরুষদের সাময়িকভাবে আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসা দেয়ার জন্য সরকার এবং জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে নিরাপদে নাগরিকত্ব প্রদান করে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোকে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারকে সম্ভাব্য সকল উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
একই সঙ্গে এই সংকট মোকাবিলার জন্য জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা জরুরি বলে এই সভা মনে করে। সভা এই সমস্যা সমাধানে সরকারের উদ্যোগ যথেষ্ট নয় বলে মনে করে। সভায় সমপ্রতি চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সরকারের ভ্রান্ত নীতিকে এই মূল্য বৃদ্ধির জন্য দায়ী করে অবিলম্বে মূল্যহ্রাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়। সভা থেকে, সমপ্রতি দেশের উত্তরাঞ্চলসহ কয়েকটি জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের প্রতি সমবেদনা এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়। অবিলম্বে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ সিনিয়র নেতা ও সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং কারাবন্দিদের মুক্তির দাবি জানানো হয়। সভায় সমপ্রতি ২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সাধারণ সম্পাদক এমএম আমিনুল ইসলাম ও বিএনপি নেতা সৈয়দ সাদাত আহমেদের গুম হওয়ার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। অবিলম্বে তাদের খুঁজে বের করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে সারাদেশে গুম, খুন, আটক অবস্থায় হত্যা বন্ধ করার দাবি জানানো হয়। এছাড়া দেশনেত্রী খালেদা জিয়া চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরে আসায় পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করা হয়।
উল্লেখ্য, বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ও সিদ্ধান্ত নিয়ে গতকাল দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংবাদ ব্রিফিং করার কথা ছিল। কিন্তু দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ারের মৃত্যুতে সে ব্রিফিং বাতিল করে পরে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদের স্বাক্ষরে গণমাধ্যমে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।