খােলা বাজার২৪। শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৭: মায়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের পৈশাচিক নির্যাতনে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্কট অত্যন্ত ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। -আরটিএনএন
উখিয়ার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জনপদ কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সায়মন হেনশ ও পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র হ্যাদার নুয়াট।
এই মুহূর্তে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নেয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়।
তিনি বলেন, এখানে আশ্রিত রোহিঙ্গারা যতদিন থাকবে ততদিন মার্কিন সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। যাতে রোহিঙ্গারা আর্থিক ও মানসিক ভাবে কষ্ট না পায়।
এর আগে ২২ সদস্যের মার্কিন প্রতিনিধিদল কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প ঘুরে দেখেন।
উদ্বিগ্ন মায়ানমার, শঙ্কিত সু চি
সংখ্যালঘুরোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর নিপীড়নের দায়ে সেনাবাহিনীর উপর অবরোধ আরোপে মার্কিন সিনেটরদের এক অবরোধ প্রস্তাবে মায়ানমার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দেশটি বলছে অবরোধে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে এবং মায়ানমারের অপরিণত বেসামরিক সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশটির নেতা অং সান সু চির একজন মুখপাত্র একথা বলেন।
বৃহস্পতিবার মায়ানমারের উপর ফের অবরোধ আরোপের প্রস্তাব করেন মার্কিন সিনেটররা। মার্কিন সিনেটে তোলা অবরোধের প্রস্তাবের সমর্থন করেছেন রিপাবলিকান দলের প্রভাবশালী সিনেটর জন ম্যাকেইন ও ডেমোক্রেট সিনেটর বেন কারডিন। প্রতিনিধি পরিষদেও একটি সম্পূরক প্রস্তাব আনা হয়েছে।
ওই প্রস্তাব পাস হলে রোহিঙ্গাদের উপর নৃশংসতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত মায়ানমারের সেনাকর্মকর্তাদের উপর সুনির্দিষ্ট অবরোধ ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে। একইসঙ্গে দেশটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ সামরিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে।
এমন প্রস্তাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে সূচির ওই মুখপাত্র বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির উন্নতির জন্য আমাদের আভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা দরকার। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ভ্রমণ ও ব্যবসা বিনিয়োগের সঙ্গে জড়িত মানুষদের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। এছাড়া আরো অনেক খারাপ পরিণতি আছে।’
গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর সন্ত্রাসী হামলার পর সেখানে সেনাবাহিনী পাল্টা দমন অভিযান চালাচ্ছে। ওই ঘটনার রাখাইন রাজ্যের গ্রামে গ্রামে নির্বিচারে হত্যা, জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্যে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ওই অভিযানকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। যদিও মায়ানমার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।