খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার ,৭ নভেম্বর, ২০১৭:অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগটি সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই জানি।বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও শীত মৌসুমে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। অসহনীয় এ রোগ দেখা দিলে রোগীর শ্বাসনালি সংকুচিত হয়, ফলে রোগী তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগে থাকেন।
যেহেতু শীতকাল চলে আসছে তাই হাঁপানি রোগীদের জন্য সতর্ক থাকার এখন সময়।
অ্যাজমার সাধারণ লক্ষণগুলো হলো
১. প্রচুর কাশি
২. নিঃশ্বাসে শব্দ হওয়া
৩. নিঃশ্বাস নিতে না পারা এবং বুকে টান লাগা।
হাঁপানি রোগের প্রতিরোধে যদিও অনেক ঔষধ রয়েছে তবে কিছু ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমেও হাঁপানির আক্রমনে উপশম করা সম্ভব।
শুকনো ডুমুর ফল: এক কাপ পানিতে ৩টি শুকনো ডুমুর ফল সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই ফুল এবং ফল ভেজানো পানিটা খালি পেটে খেতে হবে। কয়েকমাস একটানা খেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
কফি: সাধারণ ক্যাফেইন থাকা কফি পান করলে তা হাঁপানির সমস্যায় বেশ উপকারে আসে। গরম কফি শ্বাস নালীকে পরিষ্কার করে এবং নিঃশ্বাস নেয়া সহজ করে। আর যদি কফি পছন্দ না হয় তাহলে গরম রঙ চা খেতে পারেন।
ইউক্যালিপটাস তেল: বিশুদ্ধ ইউক্যালিপটাস তেল হাঁপানির চিকিৎসায় বেশ কার্যকরী। কারণ এতে রয়েছে জমাট বাধা দূর করার গুনাগুন।
রসুন: পৌনে এক কাপ পানিতে বড় ২-৩ কোয়া রসুন ফুটিয়ে নিয়ে কক্ষ তাপমাত্রায় এলে সেটা পান করুন।
আদা: হাঁপানির কষ্ট উপশমে সামান্য একটু আদা লবণ দিয়ে খেতে পারেন। সমপরিমাণ আদার রস, বেদানার রস এবং মধু মিশিয়ে সেই মিশ্রণ থেকে ১ টেবিল চামচ করে দিনে ২-৩ বার খেতে পারেন।
সরিষার তেল: যখন হাঁপানির আক্রমণ হয় তখন কিছুটা সরিষার তেল কুসুম গরম করে বুকে এবং পিঠে মালিশ করলে শ্বাস প্রশ্বাসের পথ পরিষ্কার হয় এবং স্বাভাবিক ভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারে।
মধু: এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ১চা চামচ মধু মিশিয়ে ধীরে ধীরে পান করুন দিনে ৩ বার। রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ১ চা চামচ মধুর সাথে আধা চা চামচ দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খেয়ে নিন। এটি গলার কফ দূর করতে এবং ভালো ঘুমাতে সাহায্য করবে।
পেঁয়াজ: ভালো শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য শুধু কাঁচা পেঁয়াজ খেতে পারেন। যদি কাঁচা খেতে না পারেন তাহলে রান্নায় একটু বেশি করে পেঁয়াজ দিয়ে সেই পেঁয়াজ খান।
লেবু: এক গ্লাস পানিতে অর্ধেকটা লেবু চিপে স্বাদ অনুযায়ী কিছুটা চিনি দিয়ে নিয়মিত খেতে পারেন হাঁপানির আক্রমণ কমাতে।
কিছু টিপস
যাদের হাঁপানি আছে তারা হাঁপানির আক্রান্ত হবার কারণগুলো খুঁজে বের করুন এবং চেষ্টা করুন সেগুলো থেকে দূরে থাকতে।
১. রান্নায় ভেষজ মশলাগুলো ব্যবহারের চেষ্টা করুন।
২. খাবারে অমেগা৩ ফ্যাটি এসিড রাখার চেষ্টা করুন। তেল, মাছ ইত্যাদি।
৩. খাবার তালিকাতে প্রচুর তাজা ফল ও সবজি রাখুন।
৪. প্রক্রিয়াজাত করা ও আলাদা খাবারের গন্ধ দেয়া ও প্রিজারভেটিভ দেয়া খাবার পরিহার করুন।
৫. যদি কারো ল্যাক্টোজে অসহিষ্ণুতার জন্য দুধে অ্যালার্জি থাকে তাহলে দুধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার বাদ দিন।
হাঁপানির সমস্যা কমাতে এগুলো কিছু ঘরোয়া উপায়। তবে রোগের সমস্যা যদি প্রকট হয় এবং এসব উপায়ে কোনো উপশম না হয় তাহলে সঠিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।